ঠাকুরগাঁওয়ে একই পরিবারের তিন জনের জ্বর-শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানা
https://www.obolokon24.com/2020/03/Thakurgaon.html
আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে আড়াই বছরের শিশুসহ একই পরিবারের তিনজন ‘জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায়’ আক্রান্ত হয়েছে।
শনিবার দুপুর সোয়া ৩টার দিকে সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, আড়াই বছরের শিশুসহ স্বামী (৩০) ও স্ত্রী (২৪) আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এরআগে দুপুর আড়াইটার সময় ওই অসুস্থ্ ব্যক্তি মোবাইল ফোনে বলেন, শরীরে জ্বর নিয়ে গত শুক্রবার রাতে আমি ঢাকা থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠি। শনিবার সকালে ঠাকুরগাঁও-এ নেমে বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর শরীরে জ্বরের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। একই সমস্যা আমার স্ত্রী ও ছোট্ট শিশু সন্তানেরও দেখা দিয়েছে।
কিভাবে আক্রান্ত হলেন সেই বিবরণ দিতে গিয়ে ঢাকার এই রেস্টেুরেন্ট ব্যবসায়ী জানান, গত ১৩ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের আয়োজনে মাদারীপুরে পিকনিকে গিয়েছিলেন। “সেখানে অনেক মানুষজন উপস্থিত ছিল। এরমধ্যে একজন জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তি ছিলেন, তার সংস্পর্শে এসেছিলাম; এরপর থেকে জ্বরে আক্রান্ত হই।
অসুস্থ্ ওই ব্যক্তি আরও বলেন, আমি, আমার স্ত্রী ও সন্তানের সবারই প্রচণ্ড বুকের ব্যথা হচ্ছে; ঠিকমত শ্বাস নিতে পারছি না। অন্যদিকে, এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় গ্রামবাসী তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলেও জানান তিনি। কোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় খুব অসহায় হয়ে পড়েছি।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, আক্রান্ত তিনজনকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলাম; কিন্তু মাইক্রোবাসের চালক যখন শোনেন-তারা জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আক্রান্ত, তখন তিনি আর রোগীদের গাড়িতে তোলেননি।
এছাড়াও আক্রান্তদের অন্য যানবাহনে করে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু কেউ যেতে চাচ্ছে না” উল্লেখ করে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, “আমি এখন কী করব বলেন?
তবে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কর্মী ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তারা অসু্স্থ্ ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে প্রাথমিক নির্দেশনা দিয়ে এসেছে। রোগীদের জ্বরের সাথে শ্বাসকষ্ট আছে প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন কিছুই জানেন না। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ঘটনাস্থলে ইউএনও ও উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার যাচ্ছেন। অসুস্থ্ ব্যক্তিদের শরীর থেকে রক্তের নমুনা নেওয়া হবে। পরীক্ষার জন্য সেই নমুনা ঢাকায় পাঠানো হবে। অসুস্থ্ তিনজনের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
বর্তমানে অসুস্থদের পরিবারের পাঁচজনকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন।