চিলাহাটী- হলদিবাড়ি রেলপথের ভারতীয় অংশে ইঞ্জিন যাত্রার সূচনা

চিলাহাটীতে কাজ দৃশ্যমান না হওয়ায় হতাশা

নিজস্ব প্রতিনিধি-

চিলাহাটী- হলদিবাড়ি রেল লিংকের ভারতীয় অংশে সদ্য পাতা রেললাইন দিয়ে  পরীক্ষামূলকভাবে রেলের ইঞ্জিন চালিয়েছে সে দেশের রেলদপ্তর।বুধবার(১৪ মার্চ) সকালে পুজো দিয়ে ইঞ্জিন যাত্রার সূচনা করে।ভারতীয় গনমাধ্যম
সূত্রে জানা যায়,রেলের ইঞ্জিনকে ফুলের মালা,কলাগাছ ও বেলুন দিয়ে সাজানো হয়।সকাল সারে এগারোটায় ফিতে কেটে ও লাইনে নারিকেল ফাটিয়ে ইঞ্জিন যাত্রার সূচনা করেন  ভারতের এনজেপির ডেপুটি চিপ ইঞ্জিনিয়ার (নির্মান)রামকুমার বাদল।এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার বিপ্লব গোস্বামী,স্টেশন ম্যানেজার সত্যজিৎ তিওয়ারী প্রমূখ। সেখান থেকে ট্রেন বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটী ডাঙাপাড়া সীমান্ত বিপি ৭৮২/২ এস নম্বর পিলারের নিকটবর্তী কাটাতারের বেড়া পর্যন্ত চলে।ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তের স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়,এদিন দুই বাংলার অধিবাসীরা ইতিহাসের সাক্ষী হতে কাটা তারের দুপাশে হাজির হন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই রেলপথ নির্মানে তাদের অংশে ৩১ কোটি রুপি বরাদ্দ দিয়েছে। সেই বরাদ্দে ঠিকাদার নিয়োগ করে হলদিবাড়ি অংশের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রেলপথের  কাজ গতবছর(২০১৭ সাল) ৫ নবেম্বর হতে শুরু করা হয়।ইতিমধ্যে রেললাইন পাতার কাজ শেষ হয়েছে।তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার পরীক্ষামূলকভাবে রেলের ইঞ্জিন চালানো হয়।এদিকে বাংলদেশের চিলাহাটি রেলষ্টেশন হতে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত,প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মানের  কাজ এখনও  দৃশ্যমান না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী।ব্যবসায়ী বাচ্চামিয়া বলেন,ওপারের ইঞ্জিনের হুইসেল শুনছি অথচ এপারে এখনও কাজই শুরু হয়নি।অথচ এই রুটে মালবাহী ট্রেন চালু হলে উপকৃত হবে ব্যাবসায়ীরা।এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে।সাংস্কৃতিক কর্মী মাহাবুবুল আলম মাহাবুব বলেন,এই রুটে ট্রেন চালু হলে দুই বাংলার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ঘটবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, বাংলদেশের চিলাহাটি রেলষ্টেশন হতে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত, অংশের প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মানের  প্রকল্পে ব্যয়ের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এই বরাদ্দকৃত অর্থে সাড়ে ৭ কিলোমিটার রেলপথ, ব্রীজ, চিলাহাটি রেলষ্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে রূপান্তর করা হবে। ভারতের অংশের কাজ শুরু হওয়ায় অতিদ্রুত বাংলাদেশের অংশের কাজ শুরু করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য যে,বাংলাদেশের বৃহত্তম নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি অসম বেঙ্গল রেলওয়ের উদ্যোগে ১৮৭০ সালে স্থাপন করা  হয়েছিল। ওই সময় ভারতের শিলিগুড়ি থেকে ছেড়ে হলদিবাড়ি হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারীর চিলাহাটি ও সৈয়দপুর এবং দর্শনা দিয়ে দাজিলিং মেইল ট্রেনটি কলকাতা চলাচল করতো। এ ছাড়া চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করতো একটি পাসপোর্ট ট্রেন। চালু ছিল স্থলবন্দর ও চেকপোস্ট। কিন্তু পাক-ভারত যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ ও স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। এরপর উভয় দেশ স্থাপিত রেলপথটি ১৯৬৫ সালে উঠিয়ে ফেলা হয়েছিল।শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে রেল রুটটি চালুর উদ্দোগ নেয়।সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ অংশে প্রায় ৭ কিলোমিটার ও ভারতের হলদীবাড়ি অংশে ৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার রেলপথ পুনরায় স্থাপনের লক্ষে  ২০১৬ সালের ৮ মে থেকে সপ্তাহ ব্যাপী বাংলাদেশের অংশের এবং চলতি বছরের গোড়ার দিকে ভারতের অংশের জরিপ কাজ শেষ করা হয়।রেলওয়ে সুত্র মতে বর্তমানে খুলনার মংলা, ঢাকা ও রাজশাহী থেকে সরাসরি ব্রডগেজের রেলপথ চালু রয়েছে নীলফামারী চিলাহাটি সীমান্তের স্টেশন  পর্যন্ত।কাজ সম্পন্ন হলে ভারতের হলদীবাড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি নিউ জলপাইগুড়ি ও  শিলিগুড়ি সাথে ফের সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এখন  ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করে কলকাতা-গেদে-দর্শনা-হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে ঢাকা।

 হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেল পথ চালু হলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে ফের অতীতের পথে শিলিগুড়ি-কলকাতা রেল চলাচল শুরু হবে। সেই সাথে ঢাকা নিউজপাইগুড়ি(শিলিগুড়ি) ট্রেন চলাচল করবে সরাসরি।

 সুত্র মতে রেলপথ স্থাপন শেষ হলে প্রথম ধাপে চলাচল করবে পন্যবাহী রেল। দ্বিতীয় ধাপে যাত্রীবাহী ট্রেন। যাত্রীবাহী ট্রেনের মধ্যে ঢাকা হতে নিউ জলপাইগুড়ি(শিলিগুড়ি) ও নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দর্শনা সীমান্ত হয়ে কলকাতা শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন চালানো হবে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 397030890048165030

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item