পিলখানা হত্যাকান্ডের সপ্তম বার্ষিকী আজ

ডেস্কঃ
হঠকারী, নির্মম ও নিষ্ঠুর জীবনসংহারী বিডিআর বিদ্রোহের সপ্তম বার্ষিকী বৃহস্পতিবার। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ বিডিআর সদস্য, রিকশাচালক, গৃহকর্মী, শিার্থী মিলে মোট ৭৪ জন নিহত হয়। নানা আয়োজনে দিনটিকে পালন করবে সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ সারা দেশ।

পিলখানায় এমন অকল্পনীয় ঘটনায় ভেঙ্গে যায় বিডিআরের সাংগঠনিক কাঠামো। ফলশ্রুতিতে শুরু হয় বিডিআর পুনর্গঠনের কাজ। বদলে যায় দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) নামে পরিচিত রাষ্ট্রের সীমান্ত রায় মূল দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটি। সাংগঠনিক কাঠামো থেকে শুরু করে নাম, পোশাক ও লোগো সমস্ত বিষয়ে বদল আসে প্রতিষ্ঠানটিতে। এর পরিবর্তিত নাম হয় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)। ১৯৭২ সালের বিডিআর বিদ্রোহ আইনে আসে প্রভূত পরিবর্তন। শুরু হয় বিডিআর পুনর্গঠনের কাজ। বিডিআরের নাম, পোশাক, লোগো ও সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করা হয়। বিডিআর-এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আগের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৭ বছরের কারাদন্ড। এটি বদলে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হয়েছে।

তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের ৭ বছরে বর্তমান বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, বিজিবি ২০০৯ সালের বিডআর এর তিক্ত অতীত পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। অপরাধের বিচার যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।

ভয়ংকর দুই দিন : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। সকাল ৯.২৫ মিনিটে তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরের দরবার হলে মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ এর বক্তৃতা চলাকালে দুজন বিদ্রোহি অতর্কিতে মঞ্চে প্রবেশ করে। যাদের একজনের হাতে ছিল অস্ত্র। এরপর শুরু হয় বিদ্রোহ। সকাল ১০.৩০ মিনিটের দিকে রাইফেলস সপ্তাহ উপলে দরবার হলে আয়োজিত দরবারে গুলি ছুড়তে ছুড়তে প্রবেশ করে একদল বিদ্রোহি। অফিসারদের বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় তারা মাথার ওপর হাত তুলে সারি বেঁধে। ১০.৩৫ এর দিকে দরবার হল থেকে বেরিয়ে সিড়িতে পা রাখার মুহুর্তে গুলিতে হত্যা করা হয় বিডিআর ডিজিসহ বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যকে। সব মিলে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয় ২৫ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া আরো ১৭ জন নিহত হয় এদিন। সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে জিম্মি করে বিদ্রোহিরা। পুরো পিলখানায় এক ভীতিকর বীভৎস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। চারটি প্রবেশ গেট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশেপাশের এলাকায় গুলি ছুঁড়তে থাকে। গাড়িতে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লাশ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টাও করে বিদ্রোহিরা।

২৬ তারিখ সকালে কামরাঙ্গির চর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন স্লুইস গেটে মেলে বেশ কিছু লাশ। দিনভর নানা ঘটনা চলতে থাকে। মাঝে মধ্যে গুলি। প্রধানমন্ত্রী এদিন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় অস্ত্র সমর্পণ শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সমর্পিত অস্ত্র হেফাজতে নিতে পুলিশ পিলখানায় প্রবেশ করে। রাত সাড়ে ৮টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা আসে, পরিস্থিতি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

দিবসের কর্মসূচি : বেদনাবিধুর দিনটি পালনে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ মোহসিন রেজা জানান, নিহতদের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশে পিলখানাসহ বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবির সব মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার বাদ আসর পিলখানার বীর-উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে (সাবেক দরবার হল) মরহুমদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 7454804683258547527

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item