ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী ভাঁপা পিঠার উৎসব
https://www.obolokon24.com/2017/12/thakurgaon_2.html
আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ে পৌষের আগমনের সাথে সাথে গ্রামাঞ্চলগুলোতে পড়তো পিঠাপুলির উৎসবের ধুম। তার মধ্যে জনপ্রিয় আর ঐতিহ্যবাহী পিঠা হল ভাঁপা পিঠা। খুব কম খরচে কম সময়ে এই পিঠাটি বানানো যেত বলে এই পিঠার কদর ছিল আহামরি। এই উৎসবের মধ্যদিয়ে গাঢ় হতো এ জেলার মানুষদের ভ্রাতৃত্ববোধ। গ্রামের কোন বাড়িতে এ পিঠা বানানোর আয়োজন করা হলে প্রতিবেশীদের দাওয়াত দেওয়া হতো। খুব ভোরে সবাই একসাথে বসে এ পিঠা আনন্দ করে খেত। ছোট শিশুদের আনন্দের কোন সীমা থাকতোনা। শীতের জন্য অপেক্ষা করতো, কবে আসবে শীত আর কবে যাবো মামার বাড়ি ভাপা পিঠা খেতে। কিন্তু বর্তমানে তেমন এ আয়োজন দেখায় যায়না এ জেলায়। ধীরে ধীরে হারিয় যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী ভাপা পিঠার উৎসব। অনেকের ধারনা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম মাত্রাধিক হওয়ার ফলে এ আয়োজন আর তেমন ভাবে কেউ করছেনা। তবে ভাঁপা পিঠার প্রতি ভালোবাসা যে কমে গেছে তা একদমই ভুল ধারনা। বাড়িতে আয়োজন না করলেও গ্রামগঞ্জের দোকানগুলোতে পড়ছে ভাঁপা পিঠা খাওয়ার উপচে পড়া ভীর। দাম একটু বেশি হলেও শীতের সকালে বা সন্ধায় যে ভাঁপা খেতে হবে তা কিন্তু মোটেও ভুলেনি এ জেলার মানুষ। তবে এটা ঠিক যে ওই আনন্দ আর তৃপ্তি খুজে পাওয়া যায়না।এই পিঠাপুলির উৎসব এক শীতে দফায় দফায় হতো। কিন্তু এখন একাবার আয়োজন করতেই যেন নানা প্রতিকূলতা দেখা দেয়।
স্কুল শিক্ষিকা মাকতুবা এ ব্যপারে বলেন আমাদের
মা শীত এলেই কয়েকবার এ পিঠাপুলির আয়োজন করতো। আমরা ভাই বোন, আত্মীয় স্বজন
ও প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে এ উৎসব উপভোগ করতাম। সেই পুরোনো দিনের
স্মৃতিচারন করলেই জিহ্বায় পানি চলে আসে চোখের সামনে ভেসে উঠে পুরোনো দিনের
কথা। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্য এখন হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমি
নিজেও এখন গৃহিনী। কিন্তু এই প্রতিযোগিতার যুগে ব্যস্ততার কারনে এ আয়োজন
আমারও করা হয়ে উঠেনা। তবে এটুকু বলতে পারি- আমরা এই অনন্দ গুলো থেকে
স্বার্থপরের মতো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা আমাদের ছোট সন্তানদের বঞ্চিত করছি।
তবে
এখনও এই রিতি ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচলিত থাকলেও তেমন লক্ষ্য করা যায়না। ধীরে
ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী ভাঁপা পিঠার উৎসব।