সৈয়দপুরে ব্যস্ততম সড়কে বিদ্যুতের ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা ॥ যে কোন সময় দূর্ঘটনার আশঙ্কা

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি :

 নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ব্যস্ততম সড়কের পাশে বিদ্যূতের ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা বসানো হয়েছে।  পৌর এলাকার গোলাহাট রেলওয়ে কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এটি স্থাপন করা হয়। ফলে যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের রেলওয়ে কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে বিদ্যূৎ বিভাগের বৈদ্যূতিক খুঁটির ওপর স্থাপিত ১১ হাজার ভোল্টের একটি ট্রান্সফরমা রয়েছে। গত ২ সেপ্টেম্বর ঈদ -উল -আযহার দিন সকালের দিকে আকস্মিক ওই ট্রান্সফরমা পুঁড়ে যায়। এতে করে ওই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সৈয়দপুর বিদ্যূৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সেখানে সড়কের পাশে লোহার খাঁচায় থাকা একটি ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা স্থাপন করে এলাকার গ্রাহকদের বিদ্যূৎ সরবরাহ সচল রাখে। বিদ্যূৎ বিভাগের একটি সূত্রে জানা যায়, মূলতঃ কোন এলাকায় যদি আকস্মিক বৈদ্যূতিক ট্রান্সফরমা বিকল হয়ে পড়ে, তবে বিদ্যূৎ বিভাগ থেকে সেখানে তাৎক্ষনিকভাবে একটি ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমার মাধ্যমে বিদ্যূৎ সরবরাহ সচল রাখা হয়। মূলতঃ বিকল হওয়া ট্রান্সফরমাটি পুনঃস্থাপন করার সময়টুকু পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চালু থাকার কথা। কিন্তু গোলাহাট রেলওয়ে কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বসানো ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি অদ্যাবধি অর্থাৎ গতকাল ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরিয়ে নেয়া হয়নি। যদিও  ইতোমধ্যে এটি বসানোর প্রায় ২৩/২৪দিন অতিবাহিত হয়েছে। আর ট্রান্সফরমাটি যে সড়কের পাশে বসানো হয়েছে সেটি একটি অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক। উত্তর দিক দিয়ে সৈয়দপুর শহরের ঢোকার এটিই একমাত্র সড়ক। ফলে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টাই এ সড়কটি দিয়ে অনবরত ছুঁটে চলছে প্রায় সকল যান্ত্রিক যানবাহনগুলো। এ সবের মধ্যে রয়েছে বাই-সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিক্সা, রিক্সাভ্যান, চার্জার রিক্সা ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস, জীপ, পিকআপ, ট্রাক উল্লেখযোগ্য।  ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি কারণে সবচেয়ে বেশি ভয় গোলাহাট রেলওয়ে কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাালয়ের ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে। কারণ শিশুরা ট্রান্সফরমাটি পাশ ঘেঁষে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করছে প্রতিনিয়ত।
গতকাল (সোমবার) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই চাকা বিশিষ্ট একটি লোহার খাঁচা। ওই খাঁচার ভেতরে একটি বৈদ্যূতিক ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি। মূলতঃ এটি একটি ট্রলি মতো দেখতে। খাঁচার গায়ে স্টলের প্লেটে ‘ডেঞ্জার’  এবং ‘১১০০০ হাজার ভোল্ট’ কথাগুলো অনেক ছোট্ট করে ইংরেজীতে লেখা রয়েছে। আর ব্যস্ততম সড়কের পাশে রাখা ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি ঘেঁষে অনবরত সকল রকম যানবাহনসহ সব বয়সী মানুষ চলাচল করছে। তবে বিকল পুঁড়ে যাওয়া ট্রান্সফরমাটি বৈদ্যূতিক খুঁটির মধ্যে রয়েছে এখন।
ট্রান্সফরমাটির ঠিক বিপরীতে রয়েছে বেশ কয়েকটি দোকানপাট।  সেখানে মো. জিয়া নামের জনৈক দোকানির সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ঈদের দিন সকালে ট্রান্সফরমাটি জ্বলে গেছে। পরদিন বিদ্যূৎ বিভাগ সড়কের পাশে ওই ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি বসানো হয়। সেই থেকে ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি সেখানে রয়েছে। বিদ্যূৎ সরবরাহ সচল রাখতে বিদ্যূৎ বিভাগ সেটি বসিয়েছেন। অপর
এলাকাবাসী ব্যাটারিচালিত রিক্সা চারক মো. পারভেজ বলেন, এটি নিয়ে আমরা চরম আতঙ্কে আছি। কখন যে দূর্ঘটনার শিকার হব বলা মুশকিল।
আরেক দোকান জাবেদ আলী বলেন, ভাই কি বলব ? আমি দোকানে এসেই সব সময় ট্রান্সফরমাটির দিকে তাকিয়ে থাকি। সামনে স্কুল। ছোট ছোট বাচ্চা-কাচ্ছা। কখন কে যে এটির মধ্যে হাত দেব চিন্তায় থাকি ?
রেলওয়ে কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  প্রধান মো. মমিনুল ইসলাম মুকুল বলেন,  বিদ্যালয়ের ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে ভয় হয়। তাই তাদের নিয়ে সব সময় চরম আতঙ্কে থাকি। কখন কোন শিশু যে বিপদে পড়বে ? বিষয়টি আমি পিডিবি’র সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। তিনি  যত দ্রুত সম্ভব ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি সরিয়ে নিতে আশ্বাস দিয়েছেন। জানি না কবে নাগাদ সরিয়ে নেয়া হবে ট্রান্সফরমাটি।
 সৈয়দপুর বিদ্যূৎ বিক্রয় ও বিতরণ  কেন্দ্রে উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. শওকত আলী বলেন, যে সময় ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি বসানো হয় সে সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। এসে দেখি সেখানকার খুঁটির ট্রান্সফরমাটি পুঁড়ে যাওয়ায় সেখানে একটি ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা বসানো হয়েছে। বিদ্যূৎ বিভাগের ট্রান্সফরমা মেরামত কারখানা বগুড়া থেকে  ট্রান্সফরমা এলেই ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।  

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4002248296004226287

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item