রাজারহাটে কমিউনিটি ক্লিনিক ভেঙ্গে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:


কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কালুয়ার চরে অবস্থিত একমাত্র কমিউিনিটি ক্লিনিকটি বন্যার পানির সস্রোতে ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ৬হাজার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণভাবেই পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। অপরদিকে ক্লিনিকের পরিবর্তে একটি ক্লাবে সেবাদান করা হচ্ছে বলে দাবী করেছে স্বাস্থ্যসেবাদানকারীরা।
এলাকাবাসীরা জানান, উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের ধরলা নদীর অদুরে কালুয়ার চর এলাকায় চরাঞ্চলের ৬হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়। এরপর তৎকালীন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা বিঘিœত হয়ে পড়ে। কালুয়া চর থেকে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকক্সের দূরত্ব ২০কিলোমিটার এবং কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের দূরত্ব আরো বেশী হওয়ায় ওই এলাকার মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে কোথাও চিকিৎসা নেয়ার পথ খুঁজে পায় না। ফলে অনেক রোগীকেই অকালেই না ফেরার দেশে চলে যেতে হয়েছে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পূনরায় ওই সব ক্লিনিক চালু হলে কালুয়ার চরের মানুষ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ্য থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি শ^রণকালের ভয়াবহ বন্যায় পানির প্রবল স্রোতে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ শতশত ঘরবাড়ী বিলীন হয়ে যায়। দূযোর্গপূর্ণ ওই এলাকায় চরম ঝুঁকিতে পড়ে বানভাসি মানুষ। বন্যা পরবর্তীতে ওই সব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দেয়ায় বাধ্য হয়েই পানি পান করে এবং পঁচাসরার দূর্গন্ধে মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। ডায়রিয়া আমাশয় সহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এসময় সরকারী ভাবে পর্যাপ্ত ওষধ সরবরাহ করা হলেও স্টক করার মতো কোন নিদিষ্ট জায়গা ছিল না। ছিল না কালুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকটি। এ কারণে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চত করতে ওই এলাকার দিশারী নামের একটি ক্লাবে ওষধপত্র রেখে এলাকার মানুষদের চিকিৎসা দেয় হয়। কিন্তু দামী দামী ওষধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ওই ক্লাবে ঝুঁকিতে রাখা হয়। বিপােেক পড়ে যায় স্বাস্থ্য সেবাদানকারীরা। তারপরেও অতিকষ্টে স্বাস্থ্য সেবাদান কারীরা চরম দূভোর্গের মাঝেও সেবা দিয়ে আসেন। কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভেঙ্গে পড়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই সেবাদানকারীদের প্রতিটি বাড়ী বাড়ী গিয়ে ওষধপত্র সরবরাহ করা হয়। এব্যাপারে সেবাদানকারীরা জানান, বন্যায় রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় বানভাসি মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ বাড়ে। তাই বাড়ী বাড়ী গিয়েই চিকিৎসা এবং ওষধ বিতরণ করা হয়েছে। এতে ওষধ বহন করতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এরপর অনেকে ওষধ পেয়ে উপকৃত হয়েছেন। এছাড়া বন্যার দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি অন্যত্র স্থানান্তর করার উদ্যোগ গ্রহন করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই এলাকার ৬হাজার মানুষ সরকারী ক্লিনিকে সেবা নিতে পারছে না। তাদেরকে সেবা নিতে গেলে ১০/১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছিনাই হাট কমিউনিটি ক্লিনিকে যেতে হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ওই ক্লিনিকের প্রফাইডার না থাকায় স্বাস্থ্য সহকারী নুর আলম দায়িত্বে রয়েছেন। ওই এলাকায় স্বাস্থ্য পরিদর্শক জান্নাতুন নাহার ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক নুরনবী সরকার স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছেন। স্বাস্থ্য সহকারী নুর আলম জানান, আগের তুলনায় মানুষ ক্লাবে কম সেবা নিতে আসে। ক্লাবে দামী ওষধপত্র রাখায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শহিদুল্লাহ্ জানান, কালুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভেঙ্গে যাওয়ায় পাশের একটি ক্লাবে চিকৎসা দেয়া হচ্ছে। আর এটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য সকল ব্যবস্থা নিতে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা 8640073837932217632

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item