প্রায় মৃত্যুর মুখে সৈয়দপুরের মৃৎশিল্প

মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি-
কারুশিল্পে কার্যকরময় কুমারদের জীবন। এদের হাতের ছোয়ায় নিমিষেই তৈরি হয়ে যায় সুন্দর সুন্দর মাটির জিনিসপত্র। হাড়ি পাতিল, কলস, মাটির ব্যাংক, পশুপাশি ও দৃষ্টিনন্দন ফুলদানি কুমারদের শৈল্পিক ছোয়ারই প্রমাণ। বাপ দাদার এই ব্যবসা ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত খেয়ে না খেয়ে ধরে রাখলেও আজ তারা টিকে থাকতে পারছে না। সংসারের প্রদীপ যেন টিপটিপ করে জ্বলছে। জীবন সংসারে ভাঙ্গনের সুর যেন জোরেশোরেই বেজে উঠছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতি আর প্রযুক্তির উন্নয়নে কুমারদের বাপ দাদার পেশাগত ঐতিহ্য আজ নিঃশেষ প্রায়। কিন্তু কি আর করা। যৎসামান্য অর্থের এই ব্যবসায় তারা ধরাশায়ী। অর্থ কষ্টে কাটছে তাদের দিনকাল।

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে নিয়ামতপুর এলাকার কুমার বাসিরাও এর ব্যতিক্রম নয়। শহরের নিয়ামতপুর ও পুরাতন বাবুপাড়ার বুকের উপর দিয়ে চলে গেছে দিনাজপুর-ঢাকা পথের মহাসড়ক। এক সময় এ এলাকায় বসবাস করতো প্রায় অর্ধশত কুমার পরিবার। তাদের হাতের ছোয়ায় তৈরি হওয়া সুন্দর হাড়ি পাতিল, কলস, পশুপাখি ও ফুলদানি দেখে মুগ্ধ হয়ে ঢাকা পথের যাত্রীরা যে দামেই হউক না কেন কিনে নিতেন তারা। কিন্তু এখন আর নেই সেই আকর্ষণ। প্রযুক্তির উন্নয়নের কাছে ক্রেতা সাধারণের আকর্ষণ চলে গেছে অন্যপথে।
বুদারু নামের এক কুমার জানায়, এক সময় শহরের নিয়ামতপুর ও পুরাতন বাবুপাড়ার মধ্য এলাকারই নাম ছিল কুমার পাড়া। শুধুমাত্র মৃৎশিল্প সমৃদ্ধশালী হওয়ার কারণে একে একে এ পেশায় জড়িয়ে পড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। আর এ কারণেই এ এলাকার নাম হয়েছিল কুমার পাড়া। কিন্তু কালের পরিবর্তনে এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে বর্তমানে অনেকেই বাপ দাদার পেশা ছেড়েছেন। তাদের কেউ রিক্সা চালান কেউবা করছেন দিনমজুরি। বর্তমানে এ এলাকায় ৪/৫টির মত কুমার পরিবার রয়েছেন। তারাও টিকে আছে অতিকষ্টে। তবে কেউ কেউ অনাহারে বা অর্ধাহারে দিন যাপন করছেন বলে জানা যায়।
বুদারু জানায়, মাটির তৈরি জিনিসপত্র তৈরি করার জন্য তার কোন চাকি নেই। অন্যের চাকি নিয়ে এসে প্রতিদিন ৩০/৪০টি হাড়ি পাতিল তৈরি করাসহ স্বামী-স্ত্রী মিলে নিপুণ হাতের কারুকার্যেই তৈরি করেন তিনি মৃৎশিল্প। সৌখিন ব্যক্তিরাই বেশি ক্রয় করছেন তাদের জিনিসপত্র। হাতের নিখুঁত তৈরি মৃৎশিল্প না হলে প্রযুক্তির উন্নয়নে টিকে থাকাই দুষ্কর হতো বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ শিল্পের জন্য সরকার সাহায্য, সহযোগিতা করে চলেছেন। সরকার যুদি তাকে ৮/১০ লাখ টাকা দিয়ে সাহায্য করতেন তাহলে তার হাতের তৈরি জিনিসপত্র দেশের বাজার ছাড়িয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্বব হতো বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 4432781625586810705

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item