পীরগঞ্জে মাল্টা চাষ বাম্পার ফলনে স্বপ্ন বুনছেন মিজানুর!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল, রংপুর ব্যুরো ঃ

মাল্টা বাগানের ৪’শ গাছ নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী মিজানুর রহমান। রোপনের ২৬ মাস পর মাল্টার ফলনে আশায় বুক বেঁধেছেন তিনি। মাল্টার টানেই তিনি শিগগির দেশে ফিরে আসছেন। পীরগঞ্জের বাজে শীবপুর গ্রামে প্রায় ২ একর জমিতে ‘প্রচেষ্টা মাল্টা বাগান’ করা হয়েছে।
তরুণ উদ্যোক্তা মালয়েশিয়া প্রবাসী মিজানুর রহমান জানান, কয়েক বছর আগে বেসরকারী টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’ এ পিরোজপুরের রেবুতি শিকদারের মাল্টা বাগানের উপর শাইখ সিরাজ একটি সচিত্র প্রতিবেদন দেখি। এরপরই বিদেশ থেকেই গ্রামের বাড়ী পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউনিয়নের বাজে শীবপুর গ্রামে বাবার জমিতে মাল্টা চাষের জন্য জমি তৈরী করি। ২০১৬ সালের আগষ্ট মাসে ছোট ভাই মাসুদ রানা এবং মামা শাহাবুল ইসলাম শাকিলকে দিয়ে পিরোজপুরের ওই বাগান থেকে প্রতিটি চারা ৫’শ টাকা করে ৪’শ কলম চারা নিয়ে আসি। প্রায় ২ একর জমিতে দৈর্ঘ্য-েপ্রস্তে ১০ ফুট দুরুত্বে গর্ত করে প্রয়োজনমত রাসায়নিক ও জৈব সার দিয়ে কয়েকদিন মজিয়ে রাখার পর মাল্টার কলম চারা গাছ রোপন করা হয়। রোপনের ২৬ মাস পর এবারে অধিকাংশ গাছে মাল্টা ঝুপড়ে ধরেছে।
উপজেলা থেকে প্রায় ৮ কিমি উত্তর-পশ্চিমে কুমেদপুর ইউনিয়নের বাজে শীবপুরে গিয়ে দেখা গেছে, মিজানুরের মাল্টা বাগানটিতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক বাগানের পরিচর্যা করছেন। কেউবা ফল তুলছেন। কেউ নিড়ানীতে। বাগানেই কথা হয় মিজানুরের ছোট ভাই রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠান ‘গ্রীন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল’ এ অধ্যায়নরত মাসুদ রানার সাথে। সে জানায়, পড়ালেখার পাশাপাশি মাল্টা বাগানের পরিচর্যা করছি। চারা রোপনের ২৬ মাস পর প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবারে ব্যাপক ফল এসেছে। প্রতি কেজি মাল্টা ৮৫ টাকা থেকে ১’শ টাকায় বিক্রি করে প্রায় ১ লাখ টাকা বিক্রি করেছি। আগামী বছর যদি ৪’শ গাছের প্রতিটিতে ২০ কেজি করে ফল ধরে, তাহলে ৮ হাজার কেজি হবে। প্রতি কেজি ১’শ টাকা কেজি দরে প্রায় ৮ লাখ টাকা আসবে। খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবো। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা থেকে ২’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে আরও জানায়, গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে জৈব সার, পানি সেচ এবং কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। বাগানে মাল্টা গাছের ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে সাথী ফসল হিসেবে লাগানো পেঁপেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগানে ছোট ও বড় আকারের মাল্টা হয়েছে। বড়টি পাকিস্থানী, ছোটটি ভারতীয় জাতের বলে জানা গেছে। মাল্টাগুলো কেটে খেয়ে দেখা যায়, বেশ রসালো, মিষ্টি এবং টক নেই। তবে রং সবুজ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমীর চন্দ্র ঘোষ জানান, ফলের জন্য বাংলাদেশের বিদেশী নির্ভরতা রয়েছে। পীরগঞ্জে প্রথম বানিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ হওয়ায় এ অঞ্চলের অনেকেই মাল্টা চাষের জন্য পরামর্শ নিয়ে অফিসে আসছেন। ফল চাষ হলে আবাদী জমিগুলো আর্থিকভাবে লাভজনক হবে। তিনি আরও বলেন, মাল্টায় তেমন কোন ক্ষতিকর রোগবালাই নেই। তবে পাতা কুচকে যাওয়াসহ অন্যান্য রোগের নিয়মিত পরিচর্যা ও ওষুধ দিলে গাছ সবল হয়। প্রবাসী মিজানুর ভিডিও কলে বলেন, মাল্টা চাষে সফলতা আসায় দেশে আসবো। দেশের মাটিতেই বিদেশী ফল- মালয়েশিয়ার ডুরিয়াম (কাঠালের মতো), রামবুতান (লিচুর মতো), ড্রাগন, থাই আম (১২ মাসী) সহ অর্থকরী ফলগুলোর চাষের পরিকল্পনা করেছি। ব্যাগিং করলে মাল্টার রং হলদেটে হবে। দেশে থেকেই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবো।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 6796264883762233819

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item