কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে গেলো প্রতিবন্ধী সুপনের


খুরশিদ জামান কাকনঃ 'প্রতিবন্ধী বলে অবহেলা নয়, প্রতিবন্ধীরাও অনেক মেধাবী হয়।' গুণীজনদের মুখে এ কথাটা প্রায়শই শোনা যায়। এমনই এক মেধাবী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সুপন। জন্মের পরপরই আগুনে যার ডান হাত পুড়ে যায়। বাম হাতের অক্ষত দুই আঙ্গুল দিয়ে সে কোনরকমে লেখতে পারে। এভাবেই প্রতিবন্ধকতা জয় করে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে সৈয়দপুরের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী সুপন রায়।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের চৌমুহনী বাড়াইশাল নয়া পাড়ার বাসিন্দা শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের সন্তান সুপন রায়। বাবা পেশায় একজন দিনমজুর। কোনরকমে টেনেটুনে সংসার চালান। অভাবের সংসারে বেড়ে উঠা সুপন এবার সৈয়দপুর লক্ষনপুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে। কিন্তু ভালো ফল করলেও তার মনে প্রশান্তি ছিলোনা। কলেজে ভর্তি নিয়ে তার মধ্যে অনিশ্চিয়তা ছিলো।

কেনোনা দিনমজুর বাবার বয়স হয়েছে। গায়ে আর আগের মতো কর্মশক্তি নেই। সেরকম রুটি রোজগারও নেই। তাই কোনভাবেই তার বৃদ্ধ বাবার পক্ষে তাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে পড়াশোনা করানো সম্ভব নয়।
অনলাইন ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিক্ষানগরী সৈয়দপুরের 'ট্যালেন্ট শো' অনুষ্ঠানে এসে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছিলো সুপন। বিষয়টি বেসরকারি সংস্থা ওব্যাট হেল্পার্সের দৃষ্টিতে আনেন শিক্ষানগরী সৈয়দপুরের প্রতিনিধিগণ। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে যাছাইবাছাই শেষে ১৫ ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ওব্যাট হেল্পার্স সৈয়দপুর শাখার বৃত্তির তহবিল থেকে প্রতিবন্ধকতা জয় করা শিক্ষার্থী সুপন রায়কে কলেজে ভর্তির জন্য এককালীন ৭৪০০ টাকা প্রদান করা হয়। এই টাকা দিয়ে সুপন সৈয়দপুরের লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওব্যাট হেল্পার্স সৈয়দপুর শাখার প্রজেক্ট অফিসার মাহাফুজ আলম। 

ওব্যাট হেল্পার্সের সৈয়দপুরের প্রজেক্ট অফিসার মাহাফুজ আলম জানান, 'আমরা সবসময় ওব্যাট হেল্পার্সের মাধ্যমে শিক্ষা, সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে যুক্ত থাকি। এরই ফলশ্রুতিতে সুপনের যাবতীয় বিষয়াবলি পর্যালোচনা করে তাকে কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। আগামীতেও সুপনের মতো অদম্য শিক্ষার্থীদের পথচলায় পাশে থাকবে ওব্যাট হেল্পার্স।'

নতুন কলেজে ভর্তি হয়ে সুপন জানান, 'এতোদিন কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আজ সেই দুশ্চিন্তাটা কেটে গেলো। এজন্য ওব্যাট হেল্পার্সকে ধন্যবাদ। আমাকে কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।' প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠা অদম্য এই শিক্ষার্থী আরো জানান, 'আমি বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাবার সংসারে হাল ধরতে চাই। এজন্য পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে চাই। আমার এই পথচলায় সৈয়দপুরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই। সবাই আমার জন্য প্রার্থনা করবেন।'

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 664050952478199064

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item