মিরপুরে দুই কন্যাসহ মায়ের লাশ তেঁতুলিয়ায় দাফন সম্পন্ন
https://www.obolokon24.com/2018/05/panchagar.html
রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানাধীন এলাকার সংঘটিত দুই মেয়েসহ মায়ের রক্তাক্ত লাশ তেঁতুলিয়ায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল ২ মে/১৮ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউপির কাটাপাড়া গ্রামে নিহতের জনক হাসিবুল ইসলামের নিজ বাড়ির কবর স্থানে জানাযার মধ্য দিয়ে দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযায় অংশ নেয় অত্র এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা হতে আগত শতশত মুসল্লী। নিহতের কবর গুলোর মধ্যে মায়ের কবরটি মাঝখানে দেয়া হয়েছে।
নিহতের পরিবারের স্বজনরা জানান, ভোর ৪টার সময় ঢাকা থেকে বাড়িতে মা ও দুই মেয়ের লাশ বাসায় পৌছে। সকাল সাড়ে ৯ টায় পারিবারিক কবরস্থান মাঠে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। ফুলের মত দুই মেয়েকে হত্যা আর মায়ের আত্মহত্যা ঘটনায় পরিবারে বইছে শোকের বন্যা। এর আগে মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে লাশ ময়নাতদন্তের শেষে ঢাকায় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সে জানাযায় সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল/১৮ সোমবার সন্ধ্যারাতে মিরপুরের বাংলা কলেজের পাশে পাইকপাড়া সরকারি সিটাইপ স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাড়ির চারতলা হতে জেসমিন আক্তার (৩৫) এবং তার দুই মেয়ে হাসিবা তাসনিম হিমি (৯) ও আদিলা তাহসিন হানি (৪) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা নারী হত্যা না আত্মহত্যা কিছুই জানা যায়নি। তবে ধারণা এটি আত্মহত্যা। কারণ নিহত জেসমিন দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেনে ভুগছিলেন বলে জানা যায়। নিহত স্ত্রী জেসমিনের স্বামী হাসিবুল ইসলাম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের লেজিসলেটিভ শাখার ড্রাফটম্যান হিসেবে কর্মরত। আর জেসমিন খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের ক্যাশিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ব্যপারে হাসিবুল ইসলাম জানান, আমার আগেই বাসায় ফিরে জেসমিন। আসরের নামাযের সময় আমার স্ত্রীর দরজা বন্ধ দেখে না ডেকে নামাযে চলে যাই। অত:পর মাগরিবের নামায শেষে আমার শ্যালক মো: শাহিনুর ইসলাম (৩১) সহ বাসায় ফিরেও দেখি দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও যখন সাড়া পাচ্ছিলাম না, তখন পাশের বাসার লোকজন ডেকে দরজা ভেঙ্গে দেখি আমার স্ত্রী ও দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ। রুমে তখন ফ্যান ও টেলিভিশন চলছিল।
হত্যাটি কেউ করতে পারে কীনা প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমার স্ত্রী মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছিল। মাসখানেক আগেও ঘুমের ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েছিল। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। এর একমাস আগে আমার শ্বাশুড়ী মারা যান। নানান দিক দিয়ে মানসিকভাবে চিন্তিত ছিল সে। তাকে চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। স্ত্রী-সন্তানকে হারিয়ে হাসিবুল ইসলাম অঝোরে কাঁদছিলেন। এ বিষয়ে পরিবার থেকে কোন অভিযোগ কিংবা মামলা করা হয়নি।