নতুন ব্রিজের অপেক্ষায় ঠাকুরগাঁও এলাকার ১০ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ
https://www.obolokon24.com/2018/05/thakurgwaon.html
আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি।
২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর। রাত সাড়ে ৮টায় মালবাহী ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়ে যায় ঠাকুরগাঁও শহরের বরুনাগাঁও নামক স্থানে স্বপ্নের সেই সেনুয়া বেইলি ব্রিজটি। এতে প্রায় ১০টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েছে ওইসব এলাকার সাধারণ মানুষেরা। সেই সাথে বিপদে পড়েছে স্কুল কলেজে পড়া ছাত্র ছাত্রীরাও।
২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর। রাত সাড়ে ৮টায় মালবাহী ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়ে যায় ঠাকুরগাঁও শহরের বরুনাগাঁও নামক স্থানে স্বপ্নের সেই সেনুয়া বেইলি ব্রিজটি। এতে প্রায় ১০টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েছে ওইসব এলাকার সাধারণ মানুষেরা। সেই সাথে বিপদে পড়েছে স্কুল কলেজে পড়া ছাত্র ছাত্রীরাও।
ব্রিজটি
ভেঙ্গে যাবার পর অসহায় হয়ে পরে সেখানকার সকলে। কি হবে এখন.!! কি হবে তাদের
ব্যবসা বাণিজ্যের.!! এরই লক্ষ্যে রাস্তা পারাপারের জন্য ১২ নং সালন্দরের
চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মুকুল, বানানো হয় একটি কাটের সাকো। কিন্তু ব্রিজের
কাজ কি সাকো দিয়ে হয়। না হয়না। কিন্তু বর্ষা শুরু হলে কি হবে.? এমন চিন্তায়
নিয়ে রয়েছে মানুষেরা। তাই বর্ষা শুরুর আগে নতুন ব্রিজ চায় এলাকাবাসী।
সরেজমিনে
গিয়ে শুনা যায় ১২নং সালন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন খুব তারাতারি এই
ব্রিজের কাজ শুরু হবে এবং বিল পাস হয়েছে, তার পরেও অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে
সালন্দরের চেয়ারম্যান মুকুল।
প্রতিদিনই
কমবেশি প্রতিটা মানুষ স্বপ্ন দেখছে তাদের জীবনে আসছে অনেক নতুন নতুন
জিনিসেই। ঠিক এমনি স্বপ্নের মাঝে আরেকটি নতুন স্বপ বুনতে শুরু করেছে ঐ
ইউনিয়গুলোর প্রায় লক্ষাধিক মানুষেরা। ভেঙ্গে পড়ে যাওয়া ব্রিজটি এবারে
সংস্কার নয়। হবে নতুন একটি ভালো ব্রিজ। বর্তমানে এটাই স্বপন ঐ ইউনিয়নগুলোর
প্রতিটি ঘরে প্রতিটি মানুষের মনে মনে। ঠিক এমনি ভাবে কথাগুলো বলেন ঐ এলাকার
বাসিন্দা আজিজুল হাকিম,বুলু আক্তার সহ আরো অনেকে। তাদের স্বপ্নে মাঝেও
নাকি একটাই প্রশ্ন.! হবে কি নতুন ব্রিজ.? হবে কি আমাদের স্বপ্ন পূরন.? নাকি
স্বপ্ন শুধু স্বপনই রয়ে যাবে।
ঠাকুরগাঁও
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় লোকজনের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৭ সালে
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঠাকুরগাঁও-ফাড়াবাড়ী সড়কের সেনুয়া নদীর ওপর সড়ক ও
জনপথ বিভাগ লোহার বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিলো। সেতু দিয়ে ইটভাটার ভারী
যানবাহনসহ মাল বোঝাই যানচলাচলের কারণে কিছুদিনের মধ্যে সেতুর পাটাতনের
লোহার পাতগুলো বেঁকে ও খুঁটিগুলো নড়বড়ে হয়ে যায়। ২০১১ সালে সেতুটি স্থানীয়
সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে একই বছরের
জুলাই মাসে এলজিইডি সেতুর ভাঙা অংশে লোহার নতুন পাটাতন বসিয়ে দেয়। সেতুর
দুই পাশে লিখে দেওয়া হয় সাবধানবাণী। ভারী যাবাহন চলাচল নিষেধ’। কিন্তু ওই
সাবধানবাণী কোন কাজে আসেনি। অবশেষে ভেঙ্গে গেলো ব্রিজটি।
ঐ
এলাকার বাসিন্দা আজিজুল হাকিম/জয়নাল/ফারুক জানান, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাবার পর
থেকেই যেন নেমেছে আকাল। রাস্তা পারাপারের জন্য একটি কাঠে সেতু তৈরী করা
হলেও সেটা কোন কাজের না। হঠাৎ বাসায় কেউ অসুস্থ হলে একটা এ্যাম্বুলেন্সও
আসতে পাড়বেনা। নতুন ব্রিজ হলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়। আমরা চাই একটা
নতুন ভালো মানের ব্রিজ।
স্কুল
ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার শিমলা নামের একজন জানায়, প্রতিদিন আমাদেরকে এই
কাঠের ব্রিজের উপর দিয়ে স্কুলে যাওয়া আশা করতে লাগে। প্রচন্ড গাড়ি চলে এই
কাঠের ব্রিজটার উপর দিয়ে। শুধু মাত্র মানুষ চলাচলের জন্য এটি তৈরী করা
হয়েছিলো। কিন্তু এখন গাড়িও চলে। তাই এই কাঠের ব্রিজটা আমাদের জন্য
ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করবো যেন আমাদের ভেঙ্গে যাওয়া
স্বপ্নে ব্রিজটি সংস্কার না করে একটি নতুন ব্রিজ দেওয়ার জন্য।
ঠাকুরগাঁও
এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী কান্তেসর বর্মণ বলেন, নতুন একটি ব্রিজের জন্য
ডিজাইন তৈরী হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। আশা করছি খুব শিঘ্রহী একটা নতুন ব্রিজ
পাওয়া যাবে।
ঠাকুরগাঁও
জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাবার পর থেকেই সেই এলাকার
মানুষেরা দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। আমরা আশা করছি আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে ঐ
এলাকার মানুষেরা একটি নতুন ব্রিজ পাবে।