পীরগাছায় আলুর আবাদ শুরু, কৃষকের বীজ ৮ টাকা কেজি কোম্পানির বীজ ৪০ টাকা

ফজলুর রহমান,পীরগাছা(রংপুর)ঃ

রংপুরের পীরগাছায় কৃষকের আলু বীজের দাম ৮ টাকা কেজি হলেও কোম্পানির বীজের দাম ৪০ টাকা কেজি। এ দামেই কোম্পানির আলু বীজ কিনে জমিতে লাগাতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক। অন্য দিকে কোল্ডষ্টোরেজ সিন্ডিকেট ও আলু বস্তা প্রতি ভাড়া বেশি হওয়ায় লোকসানের মূখে পড়েছে কৃষক। কোল্ডষ্টোরেজে রাখা আলু বীজের দাম না পাওয়ায় পুঁজি হারিয়ে ইতিমধ্যে সর্বস্বান্ত হয়েছে পীরগাছা উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। এরপরও ধার দেনা করে আবারোও আলু লাগানো শুরু করেছে কৃষক। রোপা আমন ধান কর্তন শেষে জমি প্রস্তুত করে আলু লাগানো শুরু করেছে তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহেদুল হক চৌধুরী বলেন, উপজেলা জুড়ে কমবেশি আলুর অবাদ হয়। পারুল, তাম্বুলপুর ও ছাওলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে আলুর আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়। গত বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৫শ হেক্টর । এবারে উপজেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯ হাজার ৫ শ হেক্টর হতে পারে বলে তিনি জানান। উপজেলার বিশাল মাঠ জুড়ে পাওয়ার টিলার নিয়ে চলছে আলুর জমি প্রস্তুতের কাজ। কেউ কেউ আলুর বীজ বপন শুরু করেছে। সবমিলিয়ে স্থানীয় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার একাধিক কৃষক বলেন, একদিকে বাজারের আলুর দাম কম, কৃষকের রাখা আলুর বীজের দাম আরোও কম, মাত্র ৮ টাকা কেজি। অন্যদিকে কোম্পানির আলুর বীজের দাম অস্বাভাবিক বেশি, প্রতি কেজি ৪০ টাকা। এছাড়া রোপা আমন ধানের দাম আশানুরূপ হলেও ফলন কম হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির মূখে পড়েছে। এই অঞ্চলের কৃষকরা বরাবরই লোকসান মাথায় নিয়ে আলুর আবাদ শুরু করেন। ছাওলা ইউনিয়নের আলু চাষী দুলাল হোসেন বলেন, ৬ একর জমিতে আলু লাগানো প্রস্তুতি নিয়েছি। গত বছর ৭ একর জমিতে আলুর আবাদ করে লোকসান হয়। এবার একাধিক কোম্পানির আলূ বীজ কিনে ৬ একর জমিতে আলু লাগানোর প্রস্তুতি চুড়ান্ত হয়েছে। আশা করছি এবার আলুর দাম পাওয়া যাবে। তিনি বলেন প্রতি একর জমিতে আলুর আবাদে গড়ে খরচ ৫৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা। কোল্ডষ্টোরেজে ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ১০ বছর ধরে আলু চাষ করছি, কোন বছর সামান্য লাভ হয়, আবার কোন বছর লোকসান হয়। এটা মেনেই এবারো আলু আবাদ করছে অনেক কৃষক।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি গত বছর ৬ একর জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। আলু চাষ করে ানেক টাকা লোকসান হয়েছে তাই এবারে মাত্র দেড় একর জমিতে আলু লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোল্ডষ্টোরেজ কর্তৃপক্ষের তৈরী এক শ্রেণির দালাল সিন্ডিকেট কৃষকদেরকে বেশি ফলনের লোভ দেখিয়ে কৃষকের তৈরী বীজের পরিবর্তে উচ্চমূল্যের কোম্পানির বীজ কিনে রোপন করতে বিভিন্ন ভাবে উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে কৃষকরা বেশি দামে আলু বীজ কিনে বপন করার পাশাপাশি ফাঁকা চেক ও ষ্ট্যাম্পে কৃষকদের স্বাক্ষর নিয়ে চড়া সুদ দিয়ে তাদের জিম্বি করছে। ফলে তুলনামূলক ভাড়া বেশি নিলেও কৃষকরা কোল্ড ষ্টোরেজে কর্তৃপক্ষের বিরদ্ধে মুখ খুলতে পারে না। তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমতচর গ্রামের আইয়ুব আলী বলেন, উপজেলায় কোল্ডষ্টোরেজ  এর সংখ্যা বাড়লেও কমছে না ভাড়া। তুলনামূলকভাবে ষ্টোর ভাড়া বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়ছেন কৃষকরা।
উপজেলার আলু চাষী আকবার আলী জানান, কোল্ডষ্টোরেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জিম্বি হওয়া ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা প্রতিবাদ করতে পারে না। ফলে লাভবান হচ্ছে কোল্ডষ্টোরেজ মালিক আর সর্বশ্বান্ত হচ্ছে কৃষক। তবে কোল্ডষ্টোরেজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই বলে বলে দাবি করে আসছেন কৃষি কর্মকর্তা।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 4692709900648846697

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item