‘রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরার পরিস্থিতি এখনো হয়নি’
https://www.obolokon24.com/2017/11/rohinga_25.html
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরার মতো পরিস্থিতি রাখাইনের উত্তরাংশে এখনো হয়নি।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার পথ তৈরি করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হওয়ার পরদিন ইউএনএইচসিআরের এ প্রতিক্রিয়া এলো।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আদ্রিয়ান এডওয়ার্ড শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই মুহূর্তে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি তাদের ফেরার এবং বসবাসের জন্য নিরাপদ নয়। এখনো অনেক মানুষ পালাচ্ছে। বহু মানুষ সহিংসতা আর ধর্ষণের শিকার হয়ে মারাত্মক মানসিক আঘাতের মধ্যে পড়েছে। অনেকে নিজের চোখের সামনে বন্ধু স্বজনদের খুন হতে দেখেছে। বেশিরভাগই তাদের সহায় সম্বল হারিয়েছে, তাদের বাড়িঘর, গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আদ্রিয়ান এডওয়ার্ড শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ওই সম্মতিপত্রে কী আছে- তা এখনো তারা দেখেননি।
এইচআরডব্লিউর শরণার্থী অধিকার বিভাগের পরিচালক বিল ফ্রেলিক বলেন, অস্ত্র হাতে মিয়ানমার এখন রোহিঙ্গাদের তাদের গ্রামে স্বাগত জানাবে- এটি ‘হাস্যকর’ একটি ভাবনা।
‘রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরার পরিস্থিতি এখনো হয়নি’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রত্যাবাসন হতে দেওয়া যাবে না। রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিয়ে ক্যাম্পে রাখার পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। তারা যাতে তাদের গ্রাম আর জমি ফিরে পায়, সেখানে যাতে নতুন ঘরবাড়ি গড়ে ওঠে- তাও নিশ্চিত করতে হবে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ (এইচআরডব্লিউ) বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও বলেছে, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়ায়ে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংশ্লিষ্টতা ও নজরদারি থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকের পর রোহিঙ্গাদের ফেরাতে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ চুক্তি স্বাক্ষরকে বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য বলে দাবি করেন।
চলতি বছরের আগস্ট মাসের শেষের দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শুরু হয় সেনা অভিযান। এ সময় হত্যা, গণধর্ষণ ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিগত নিধনে দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় উগ্রবাদী বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীও। আক্রান্ত রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাঁচাতে ও আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ সরকার সীমান্ত খুলে দেয় এবং তাদের পাশে দাঁড়ায়।