ডিবি পুলিশের অভিযানে জলঢাকায় ভেজাল গুড়ের কারখানার সন্ধান - গ্রেফতার-৭

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২৯ জানুয়ারী॥
  নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের পশ্চিম খুটামারা শাহীপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভেজাল নালী গুড় তৈরীর সঙ্গে জড়িত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে নীলফামারী ডিবি পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার ভোরে রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তৈরী করা প্রায় দুই টন ভেজাল নালী গুড়, গুড়  তৈরীর ময়লা চিনি, আটা সহ বস্তা, কেমিক্যাল, তরল কাঠালি রং মালামাল ও সরঞ্জামাদী উদ্ধার কর হয়। উদ্ধারকৃত মালামাল ও  সরঞ্জামাদী আনুমানিক মুল্য এক লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে  জলঢাকা থানায় মামলা করেছে নীলফামারী ডিবি পুলিশের এসআই আব্দুল ছোবহান। রবিবার  বিকাল চারটায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে নেয়া হলে আমলি আদালত ২ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সেলিনা আক্তার তাদের জেলা কারাগারে প্রেরন করেন। 
ডিবি পুলিশ সুত্র মতে যারা এই ভেজাল নালী গুড় তৈরী করে বাজারজাত করে ভোক্তাদের প্রতারনা করে আসছিল তারা সকলেই জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আর যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সকলেই জামায়াত শিবিরের সক্রিয় কর্মী।
মামলা সুত্র মতে জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের পশ্চিম খুটামারা শাহীপাড়ার  দেলোয়ার হোসেন গুড়াতির বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবত ভেজাল নালী গুড় তৈরী করে বাজারে সরবরাহ করে আসছে। এমনকি এখান হতে এই গুড় নাটোরে সরবরাহ হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নীলফামারী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই কার্তিক মহন্ত, এসআই  আব্দুল ছোবহান ,এসআই মামুনুর রশিদ,এসআই সফিকুল ইসলাম,এ,এস আই সামছুল আলম, পুলিশ সদস্য কামরুজ্জামান, মফিজুর রহমান, মহসিন আলী,  হাসিবুল ইসলাম, শ্রী গনেশ চন্দ্র  রায় সহ  রবিবার(২৯ জানুয়ারী) রাত ১টা ৫মিনিটে   দেলোয়ার হোসেন গুড়াতির ছেলে জামায়াতের সক্রিয় কর্মী গোলাম রাব্বানী বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে  ভেজাল নালী গুড় তৈরী করার সময় দেলোয়ার হোসেন গুড়াতির ছেলে জামায়াতের সক্রিয় কর্মী গোলাম রাব্বানী (২৭), তার সহযোগী জামায়াত কর্মী ইসমাইল হোসেন (৩৮) শফিকুল ইসলাম (৪২), হাবিবুর রহমান (২৮) রেজাউল করিম (৪২) শিবির কর্মী বাবু মিয়া (২১) ও লেলিনকে (২১) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত দেলোয়ার হোসেন গুড়াতির ছেলে গোলাম রব্বানী বাদে বাকী ৬ জন নিজেদের গুড় তৈরীর শ্রমিক বলে দাবি করে। অভিযানের সময় পালিয়ে দেলোয়ার হোসেন গুড়াতির অপর দুই ছেলে। এরা হলো সাইদুল ইসলাম (৩৫) ও রুবেল(৩৩)।
নীলফামারী ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  শাহজাহান পাশা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে রবিবার  রাতে অভিযান চালিয়ে ভেজাল নালী গুড় তৈরীর সময় দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও গুড় তৈরীর কাজে নিয়োজিত আরও ছয় জন সহ ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময়  তৈরী করা এক হাজার ৭৬৪ কেজি ভেজাল নালী গুড়, গুড়  তৈরীতে ব্যবহৃত চিটাগুড় ৫০ কেজি, একশত কেজি ময়লা চিনি, ৫০ কেজি আটা, খাওয়ার অনুপোযোগী ২০কেজি তরল কাঠালী রং ও ভেজাল গুরু তৈরীর সরঞ্জামাদী , ভেজাল গুড় বাজারজাত করনের হিসাবের টালী খাতা, কৗাশ মেমো উদ্ধার করা হয়েছে।
জলঢাকা থানার ওসি (তদন্ত) মো. মফিজ উদ্দিন শেখ বলেন, এ ঘটনায় রবিবার সকালে ডিবি পুলিশের এসআই আব্দুস ছোবহান  বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামী করা হয় ৯জনকে। মামলায় আসামীদের পিতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। রবিবার বিকালে গ্রেফতারকৃত ৭ আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরন কর হয়।
এদিকে পুলিশ জানায় গত ৫ বছর আগে দেলোয়ার হোসেন গুড়াতির ভেজাল গুড় তৈরীর বাড়ির কারখানায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়েছিল। সে সময় তার ২৫ হাজার টাকা জড়িমানা করা হয়েছিল। ওই সময় এই ভেজাল গুড় তৈরী করবে না বলে তারা মুচলেকা দিয়েছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর তারা গোপনে রাতের আধারে পুনরায় ভেজাল নালী গুড় তৈরী করে বাজারজাত করে আসছিল। তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাই ভাই গুড়ের আড়ৎ নাম দেয়। মজার ব্যাপার গুড় তৈরীতে আখের রসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তারা আখের রসের  বদলে ভেজাল সব উপাদান দিয়ে নালী গুড় তৈরী করে আসছিল।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item