ফলোআপঃডোমারে বনবিভাগের গাছ চুরির ঘটনায় দুই কর্মকর্তা মুখোমুখি পুলিশ কাঠ উদ্ধার করলেও মামলা হয়নি থানায়

আবু ফাত্তাহ্ কামাল (পাখি),স্টাফ রিপোর্টার ঃ

নীলফামারীর ডোমার বনবিভাগের সহিদুর রহমান রেঞ্জ কর্মকর্তা আর কামাল পাশা ওই রেঞ্জের ডোমার বিট কর্মকর্তা। তারা বসেন একই অফিসে পাশাপাশি টেবিলে। কিন্তু সম্প্রতি ওই রেঞ্জের গোসাইগঞ্জ বিটের একটি গাছ চুরির ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন দুজনেই। পুলিশ কাঠ উদ্ধার করলেও আজও (সোমবার)মামলা হয়নি থানায় ।গত ২জুন রাত ৮টার দিকে ডোমার উপজেলা মোড়ের নিতাই চন্দ্র রায়ের ফার্নিচার তৈরীর দোকানে বনবিভাগের অবৈধ কাঠ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া ওই কাঠ রেঞ্জ কর্মকর্তা সহিদুর রহমান অবৈধভাবে ফার্নিচার তৈরীর জন্য ওই দোকানে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিট কর্মকর্তা কামাল পাশা।বিট কর্মকর্তা কামাল পাশা বলেন,‘উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের মুক্তিহাট রেল ফরেস্টে (রেলওয়ের জমিতে সামাজিক বনায়ন) থেকে গত ৭মে ঝড়ে একটি শিশু গাছ ভেঙ্গে পড়ে। খবরটি রেঞ্জ কর্মকর্তা সহিদুর রহমানকে জানায় সেখানকার উপকারভোগি সমিতির সদস্য মান্নাফ । এরপর লোকজন দিয়ে ওই গাছ নিয়ে আসেন তিনি  (রেঞ্জ কর্মকর্তা)। নিয়ম না মেনে রেঞ্জ কর্মকর্তা সহিদুর রহমান গাছটি ডোমারের একটি করাত কলে ছেড়াই (ফার্নিচার তৈরীর জন্য সাইজ) করে উপজেলা মোড়ের নিতাইয়ের ফার্নিচারের দোকানে সোফাসেট তৈরীর জন্য দেয়। থানা পুলিশ গত ২ জুন রাত ৮টার দিকে নিতাইয়ের দোকান থেকে অবৈধ ওই কাঠ উদ্ধার করে।’ তিনি বলেন,‘কাঠ উদ্ধারের পর আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু মামলা রেকড হয়নি। এখন কাঠ চুরির ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রেঞ্জ কর্মকর্তা এখন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন।’
রেঞ্জ কর্মকর্তা সহিদুর রহমান বলেন,‘পুলিশের উদ্ধার করা কাঠ আমার শ্যালক আব্দুল আজিজ পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা শহরের একটি কাঠের দোকান থেকে কিনেছে। সেই কাঠ ফার্নিচার তৈরীর জন্য আমাকে দিয়েছে। ঝড়ে ভেঙ্গেপড়া মুক্তিরহাট রেল ফরেস্টের গাছ বনবিভাগের গোসাইগঞ্জ বিটে জমা আছে। বিট কর্মকর্তা কামাল পাশার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ ওই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার সময় গত ১ জুন দেবীগঞ্জ পুরাতন বাসস্টান্ডের বন্ধু ফার্নিচার মার্ট থেকে কাঠ ক্রয়ের একটি রশিদ ও সেটি পরিবহনের জন্য বন বিভাগের অনুমতির (ট্রানজিট পাশ) একটি কাগজ দেখানওই রেঞ্জ কর্মকর্তা।
এব্যাপারে বন বিভাগের রংপুর অঞ্চলের সহকারী বন কর্মকর্তা প্রাণতোষ চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন,‘অভিযোগ পেয়ে আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। রেল ফরেস্টের ওই গাছ ভেঙ্গেপড়া এবং সেখান থেকে ডোমার নিয়ে আসার প্রমান পাওয়া গেছে। পুলিশ কাঠ উদ্ধার করেছে সেটিও ঠিক আছে। কিন্তু রেঞ্জ কর্মকর্তা সহিদুর রহমান ওই কাঠ কিনেছেন বলে দাবি করছেন। বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। কেউ দোষী প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ বনবিভাগের গোসাইগঞ্জ বিটে কোন গাছ জমা নেই বলে জানান তিনি।
এদিকে গত ২জুন রাতে ওই কাঠ উদ্ধার অভিযানের ছবি তোলার অভিযোগে পুলিশের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন ডোমার পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডোমার বাজার দোকান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের যুগ্ন সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল। এঘটনায় ডোমার থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামের অফসারণ দাবি করে আন্দোলনে নেমেছেন দোকান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। তারা গত সোমবার(৬ জুন) বেলা ১১টার দিকে ডোমার রেলঘুন্টি মোড়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালনের পর সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল করে।
উপজেলা দোকান কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বজলুর রহমান বকুল বলেন,‘ওই কর্মকর্তার উদ্ধার অভিযানটিতে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল। ছবি তোলায় উদ্ধার হওয়া কাঠ আত্মসাতের ্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে। ফলে এমন আচরণ করেছেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। আমরা ওই কর্মকর্তার দ্রুত অপসারণ দাবি করছি। পাশাপাশি বনবিভাগের কাঠ চুরিরসাথে জড়িত কর্মকর্তারও শাস্তি দাবি করছি।
এব্যাপারে ডোমার থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন,‘ডোমার বনবিভাগের বিট কর্মকর্তা কামাল পাশার অভিযোগে ওই দোকানে বনবিভাগের চুরি হওয়া কাঠ উদ্ধারে যাই। সেখানে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।’ মামলা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘এখনও কোন মামলা হয়নি।’
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন,‘আমি ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3279197056407625616

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item