গম ব্যবসায়ীদের নামে স্লিপ বরাদ্দ। ডিমলায় গমের স্লিপ বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা চেয়ারম্যানের পকেটে

জাহাঙ্গীর আলম রেজা,ডিমলা (নীলফামারী)প্রতিনিধি ঃ নীলফামারীর ডিমলায় সদর ইউনিয়নে কৃষকদের নিকট গমের স্লিপ বিতরনে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারীভাবে কৃষকদের নিকট থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে গম ক্রয়ের নির্দেশ থাকার পরও ইউপি চেয়ারম্যান ব্যাবসায়ীদের নিকট গমের স্লিপ বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। সরকারী খাদ্য গুদামে এক ছটাক গমও কৃষক দিতে পারেনি। কৃষকরা বিষয়টি তদন্তের দাবী তুলেছে।
ডিমলা সদর ইউনিয়নের ৫০ মেট্রিক টন গমের স্লিপের নামে ৫৯ জনের তালিকা প্রদান করে ইউপি চেয়ারম্যান রফিজুল ইসলাম। অভিযোগ উঠেছে প্রতি টনের বিপরীতে ইউপি চেয়ারম্যান ৪হাজার টাকা করে গম ব্যবসায়ীদের নিকট স্লিপ বিক্রি করে দেয়। সরকারী খাদ্য গুদামে সরকার কতৃক নির্ধারিত মূল্যে গম সরবরাহকারী কৃষকদের একটি ভুয়া তালিকা তৈরী করে তা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরে প্রেরন করেন।
তালিকা প্রকৃত কৃষকের নাম পাওয়া যায়নি। সরকারী নিয়ম উপেক্ষা করে যে তালিকা প্রনয়ন করা হয়েছে তাহাতে একই পরিবারের ৪ থেকে ৫ জনের নামে স্লিপ বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে জানা যায় ডিমলা দক্ষিন তিতপাড়া গ্রামের আছিমুদ্দিনের পুত্র গম ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম (ক্রমিক নং-১৮), ছোট ভাই আনোয়ারুল ইসলাম (ক্রমিক নং-১৯), চাচাত ভাই তফিজুল ইসলাম (ক্রমিক নং-২০), গম ব্যবসায়ীর পিতা আফিমুদ্দিন (ক্রমিক নং-২১), একই গ্রামের আফছার আলীর পুত্র গম ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী (ক্রমিক নং-৪৩), তার পুত্র হেলালুজ্জামান (ক্রমিক নং-৪১), ছোট ভাই দুলাল ইসলাম (ক্রমিক নং-৪২), বাবুরহাট গ্রামের মজিবর রহমানের পুত্র গম ব্যবসায়ী নুর আলম (ক্রমিক নং-২৭), গম ব্যবসায়ীর পিতা মজিবর রহমান (ক্রমিক নং-২৮), ছোট ভাই মিজানুর রহমান ( ক্রমিক নং-২৯) সহ একই পরিবারের মাঝে একাধিক স্লিপ বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। বাবুরহাট গ্রামের মৃত্য নাজিমউদ্দিনের পুত্র নুরুজ্জামান তারা (ক্রমিক নং-১১) এক শতাংশ জমিতে গমের চাষ না করলেও পেয়েছে গমের স্লিপ। ডিমলা সদর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস ছাত্তার (৫০), আবুল কাশেম (৪০), শমশের আলী (৪৫), গোলাম রব্বানী (৭৫) সহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, আমরা গমের স্লিপের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট বারবার গেলেও চেয়ারম্যান আমাদের গমের স্লিপ দেননি। ডিমলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান রফিজুল ইসলাম বলেন, আমি কৃষকদের মাঝে গমের স্লিপ বিতরন করেছি। যারা গমের ব্যবসা করে তারা তো তার ইউনিয়নের কৃষক। সে ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম করা হয়নি। গম ব্যবসায়ী নুর আলম জানায়, ডিমলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান প্রতি টন স্লিপের জন্য ৪ হাজার টাকা দিয়ে হয়েছে। ডিমলায় গমের আবাদ না হওয়ায় কারনে বাধ্য হয়ে তিনি দিনাজপুর থেকে গম কিনে এনে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমাউন কবির বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের তালিকা ভিত্তি করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানের যৌথ স্বাক্ষরে গমের স্লিপ বিতরন করা হয়েছে। কৃষক গমের স্লিপ পেয়েছে কিনা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে তিনি রাজি হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, সরকারের দেয়া গমের স্লিপ বিতরনে ডিমলা সদর ইউনিয়নে অনিয়মের বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন জানায়, সরকারী বিধি মেতাবেক কৃষকদের মাঝে গমের স্লিপ বিতরনের জন্য উপজেলা কৃষি কমিটিকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। স্লিপ বিতরনে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item