সৈয়দপুরে লিচুর পাইকারি বাজার

মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি-
নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল লিচুর বাজার। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই দিনাজপুর জেলার খানসামা, রানীরবন্দর, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, রংপুরের তারাগঞ্জের দিলালপুর, মাদারগঞ্জ, বদরগঞ্জের লালদীঘি, রামনাথপুর জয়পুরহাট, ঈশ্বরদী, রংপুর সহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে শহরের আড়তগুলোতে আসছে বিভিন্ন জাতের লিচু। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।
বাগান মালিকরা সরাসরি নিয়ে আসছেন আড়তে, সেখান থেকে কিনছেন পাইকাররা, আর পাইকারের হাত বদল হয়ে চলে যাচ্ছে খুচরা দোকানীদের কাছে।  
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলছে লিচুর কেনাবেচা। বানিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত এলাকা নীলফামারীর সৈয়দপুর। এছাড়া নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও পার্বতীপুর সহ রংপুর বিভাগের অন্যতম ব্যবসার কেন্দ্রস্থল হচ্ছে সৈয়দপুর। আর এ কারণেই ওইসব এলাকার লিচু চাষী বা ব্যবসায়ীরা সঠিক দাম পেতে এবং অল্প সময়ে বিক্রির জন্য ট্রাক, পিকআপ, নছিমন ও রিক্সা-ভ্যান ও ট্রেনে লিচু নিয়ে আসছেন সৈয়দপুরে। আশে-পাশের চাষীরা লিচু আনছেন ভ্যান, পিকআপে আর বাইরের চাষীরা বাহন হিসেবে ব্যবহার করছেন ট্রেন আর পিকআপ।
প্রতিদিন এ শহরে প্রচুর কেনা বেচা হয় সৈয়দপুরের মৌসুমী ফলের আড়ত সহ বাজারগুলোতে। শহরের ১ নং রেলঘুমটির পাশেই প্রায় অর্ধকিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা এই বাজারে গত বছরের তুলনায় এ বছর তুলনামূলক বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বসছে ছোট- খাটো খুচরা লিচুর বাজার। লিচুর প্রকার ভেদে নির্ধারণ করা হচ্ছে দাম। ভালো জাতের লিচু বাগান মালিকরা বিক্রি করছেন কাটন ৫শ; থেকে সর্বোচ্চ ৯শ’ টাকা হাজারে। আর পাইকাররা সেই লিচু বিক্রি করছেন সামান্য বাড়িয়ে। খুচরা পাইকাররা সেই লিচু কিনে দোকানে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা শ’তে বিক্রি করছেন। ফলে লিচুর উৎপাদনকারী চাষী দাম পাচ্ছেন সামান্য। মুল লাভটা ঘরে তুলছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। এই পাইকারি বাজারে লিচু মালিকের সরাসরি বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। মালিকের কাছে লিচু নিয়ে আড়তদাররা লিচু বিক্রি করে দেন পাইকারের কাছে। বিনিময়ে আড়তদারি খরচ গুনতে হয় ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা পর্যন্ত।
সৈয়দপুর আড়তের মালিক ভুলু, গিয়াস, মাসুদ, লেবু, ফারুক ও বুদু  জানান, গতবারের তুলনায় চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং রোগ-বালাই কম থাকায় ৩ গুণ লিচু তাদের আড়তে এসেছে। লিচুর আমদানি যেমন বেড়েছে তেমনি ক্রেতাদেরও কমতি নেই। দিলালপুরে লিচু বাগান মালিক হুমায়ুন জানান, তার বাগানের লিচু পাইকাররা আগাম টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন।  লিচুর সবচেয়ে বড় শক্র ইদুর ও পাখি। এসব থেকে বাঁচাতে বাগান পাহারা দেয়ার জন্য মজুরী দিয়ে শ্রমিক রাখতে হয়। একই কথা বলেন, ওই এলাকার হবিবর রহমান। তিনি জানান, দিনাজপুরের লিচুর চাহিদার পরেই দিলালপুরের লিচুর চাহিদা বাজারে থাকে। অনেক পাইকার এসব লিচু কিনে দিনাজপুরের বলে চালিয়ে দেন। তবে লিচু বাগান মালিকরা বেশি দাম না পেলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি ১শ’ লিচুতে লাভ করছেন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item