স্বপ্ন পূরনের পথে চিলাহাটির মেয়ে রাফা


এ.আই.পলাশ.চিলাহাটি প্রতিনিধিঃ
দেশের খুব মানুষেই আছে যে নিজের স্বপ্নটাকে বুকে আগলে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু, যদি সে স্বপ্ন একটি মেয়ে দেখে তাহলে সেটা নাকি সমাজের কাছে একটা বড় অপরাধ। কারন, আমাদের দেশে এখনো অনেক মানুষ আছে যারা মেয়েদের স্বপ্নকে দাবিয়ে রাখে। মেয়ে হয়ে বড় ধরনের স্বপ্ন দেখা ভুল। অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া এমনকি মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে শিক্ষিত করাও নাকি অপরাধ। মেয়েরা শুধু ঘর-সংসার করার জন্যই জন্মগ্রহন করেছে। এই রকম ভুল ধারনার জন্য নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে অল্প বয়সে বিয়ে করতে হয় হাজারো মেয়েকে। কারো স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় অর্থের অভাবে, কারো বা পারিবারিক সমস্যার কারনে। বিশেষ করে এইসব ঘটনা গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের সাথে ঘটে থাকে। কিন্তু, সব বাঁধা অতিক্রম করে নিজের স্বপ্নকে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে এগিয়ে যায় রাফা’র মতো মেয়েরা।

নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ভোগডাবুরী ইউনিয়নের চিলাহাটি বাজার এলাকার বাসিন্দা চিলাহাটি মার্চেন্টস্ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ এরশাদুল হক জিল্লু ও শাহানাজ পারভিন রুনার প্রথম কন্যা সুমাইয়া রাফা (২০) সৈয়দপুর সরকারী বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে সুযোগ্য ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে শুধুমাত্র নিজের স্বপ্ন পূরনের জন্য। আমাদের দেশে এখনো মেয়েদের দূর্বল ভাবা হয়। আমাদের সমাজের এমন অনেক মানুষ আছে যারা ভাবে মেয়েদের দিয়ে কোন কিছু করা সম্ভব না। সমাজের এই রকম মানুষদের মুখ বন্ধ করার জন্য নিজের স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে রাফা’র মতো মেয়েরা। রাফা’র পিতা চিলাহাটি মার্চেন্টস্ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ এরশাদুল হক জিল্লুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,“আমি যে দুই মেয়ে পিতা এটাতেই আমি এবং আমার স্ত্রী অনেক গর্ববোধ করি। আমি আমার মেয়েদের স্বপ্নের মাঝে কখনোই বাঁধা হয়ে দাঁড়াইনি। বরং তাদের সবসময় উৎসাহ করেছি যাতে সে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। আমার বড় মেয়ে বরাবরেই স্বপ্ন দেখে এসেছে, সে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। এলাকার গরীব-দুঃখী মানুষদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবে। আমাদের ডোমার উপজেলার গবীর-দুঃখী মানুষদের খুব একটা বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয় না। আর সেই কারনেই আমার মেয়ে একজন সুযোগ্য ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। ডাক্তার হয়ে সে অসহায় গবীর মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেবে। আর আমি যতদিন আছি যথাসম্ভব চেষ্টা করেই যাব, যাতে আমার মেয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে”। সুমাইয়া রাফা’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন,“আমি প্রত্তন্ত একটি গ্রামে ছোট থেকে বড় হয়েছি। ছোটবেলা থেকে দেখেই আসছি, অসহায় নিম্নআয়ের পরিবারগুলো যারা খুব কষ্টে দিনজাপন করে, তারা উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। কঠিন অসুখ হওয়ার পরেও শুধুমাত্র টাকার অভাবে তারা উন্নত চিকিৎসা নিতে পারে না। আর ঠিক সেই কারনেই আমি ঠিক করেছি যে বড় হয়ে আমি একজন ডাক্তার হবো। আর অসহায় দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেব। ছোট থেকেই দেখে আসছি আমার বাবা সবসময় চেষ্টা করে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। আর আমি আমার বাবার আদর্শে আদর্শিত। তাই আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য সুযোগ্য ডাক্তার হয়ে নিজ গ্রামের অসহায় গরীব মানুষদের পাশে দাঁড়াবো। তাদের সেবা করব”।


পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 6631481075599004177

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item