ঠাকুরগাঁও নেকমরদে ওরশ মেলার নামে অতিরিক্ত ইজারা আদায়ের অভিযোগ

আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল নেকমরদ হাটে গরু ছাগল সাইকেলসহ বিভিন্ন ভোগ্য পণ্যের অতিরিক্ত ইজারা নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ক্রেতা বিক্রেতাদের। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সত্বেও কোন পদক্ষেপ নেননি উপজেলা প্রশাসন।ঐতিহ্যবাহী এ নেকমরদ হাট সপ্তাহের প্রতি রোববার নেকমরদ-রালিয়াডাঙ্গী মহাসড়ক ঘেষে হাটের নিজস্ব জমিতে বসে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটের প্রবেশের পথেই চোখে পড়বে বাঁশের খুটিতে সাঠানো সরকারি নির্ধারিত ইজারা আদায়ের মূল্য তালিকা। কিন্ত মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি ইজারা আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। বিপুল সংখ্যাক ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ইজারা। কিন্তু তারপরেও চুপ থাকতে হচ্ছে তাদের, এর কারন হিসেবে ভুক্তভোগীরা জানায় ঐতিহ্যবাহী ওরশ মেলা। মেলার আগে ইজারা বাড়িয়ে দেয়। কিন্ত সেটা আর কমে না। সারাবছরই নেয়া হয় অতিরিক্ত ইজারা।গরু-ছাগলের ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, মূল্য তালিকায় গরু প্রতি টোল ২৩০ টাকা হলেও ইজারাদার নিচ্ছে ৩৩০ টাকা। ছাগল ৯০ টাকা হলেও ১৪০ টাকা দরে আদায় করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় সাইকেলের ইজারা ১১০ টাকা হলেও আদায় করা হচ্ছে ২৫০ টাকা।

সাইকেলের একজন পাইকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, আমরা যারা পাইকার তারা সাইকেল প্রতি ইজারা দেয় ৬০ টাকা বাধ্যতামূলক। আর যারা ক্রেতা তারা দেয় ২৫০ টাকা।
এতে সাইকেলের ইজারা হিসাব দাড়ালো ক্রেতা-বিক্রেতা মিলে ৩১০ টাকা। অথচ একজন সাইকেল ক্রেতা শুধুমাত্র ১১০ টাকা ইজারা দেওয়ার কথা। এখানে অনেকটা অনিয়মভাবে জোর র্পূবক অতিরিক্ত ইজারা আদায় করছে। এছাড়াও ধানসহ বিভিন্ন খোলাবাজারের দোকানিদের কাছে অনৈতিকভাবে বেশি ইজারা আদায় করা হচ্ছে। এর প্রতিকারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন।

জগদ্দল গ্রামের গরু ক্রেতা মুনসুর অভিযোগ করে বলেন, গত মাসে একটি গরু কিনে ইজারাদারকে ইজারা দিয়েছিলাম ২৫০টাকা। আর এখন একটি গরু কিনে দিতে হলো ৩৩০ টাকা। গতবারের তুলনায় পুরো ১০০ টাকা বেশি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন সব জায়গায় ডাকাতি চলছে। প্রশাসন চোখ বন্ধ করে আছেন। সাধারণ মানুষ আমরা বড় অসহায়।

এদিকে গরু ছাগল ক্রেতা আনিসুল, জব্বার, রিপনসহ অনেকে বলেন, ইজারাদারদের প্রকাশ্যে ডাকাতি কেউ রুখতে পারবে না। এখন আবার মেলার নামে সাধারণ মানুষের উপর জবরদস্তি রোলার চালানো হচ্ছে। মেলার নামে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হাটের ইজারা। যা আমাদের জন্য অসহনীয়।

জেলা প্রশাসনের ইজারা আদায়ের তালিকায় দেখা যায়, সরকারি ভাবে ইজারা দেওয়া হাটে নিয়োগকৃত ইজারাদার গরু প্রতি ২৩০ টাকা ছাগল প্রতি ৯০ টাকা সাইকেল প্রতি ১১০টাকা আদায় করবে। অথচ প্রশাসনের দেওয়া দর উপেক্ষা করে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত হাসিল।

এক বছরের জন্য হাট ইজারা নেয় নেকমরদ এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তোজাম। তিনি মুঠোফোনে বলেন, কাগজে কলমে আমার নামে হাট চললেও। নেকমরদে মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ওরশ মেলার কারণে আমাকে ৫টি হাট অথ্যাৎ পুরো এক মাস হাটের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে হয়। মেলার কারণে আমি অসহায়। এ হাট মেলা কমিটি আবার ইজারা দেয় এক মাসের জন্য। সেই ইজারাদার হাট পরিচালনা করে থাকে। আপনারা বাকিটা মেলা কমিটির কাছে জেনে নেন।

নেকমরদ ওরশ মেলা কমিটি কর্তৃক ইজারাদার মো. মমিন বলেন, হাটের ইজারা আমাদের মেলা কমিটি নির্ধারণ করেছে। আমি ইজারা বেশি নিচ্ছি না। মেলা কমিটি যা নির্ধারণ করে দিয়েছে তাই নিচ্ছি। মমিন ১ মাসের জন্য হাট ইজারা নিয়েছেন প্রায় ৩৪ লাখ টাকা বলে তিনি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন।

এ প্রসঙ্গে নেকমরদ ওরশ মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সফিউল ইসলাম বিপ্লব মুঠোফোনে বলেন, হাটের ইজারা দর নির্ধারণের জন্য মেলা কমিটি কর্তৃক একটি রেজুলেশন হয়েছে। যেখানে হাটের ইজারা বৃদ্বির কথা উল্লেখ্য রয়েছে। সেখানে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ জাহিদুর রহমান, ইউএনও মৌসুমী আফরিদাসহ অন্যানা উপদেষ্টাদের স্বাক্ষর রয়েছে। তাই প্রশাসনিক কোন বাধা নেই।

বক্তব্য নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদার দপ্তরে ও মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

পুরোনো সংবাদ

নির্বাচিত 160800457101098841

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item