ফুলবাড়ীর ধান চাষীদের আকুতি-ধান ব্যাচে যে টাকা হইছে, তাতে আবাদ করার দামও হছেনা, হারা খামো কি?
https://www.obolokon24.com/2019/05/dinajpur_57.html
মেহেদী হাসান উজ্জল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
আর ধান আবাদ কোরমোনা বাহে,ধান আবাদ করি এখন মাতাত হাত পইছে, ধান ব্যাচে যে টাকা হইছে, তাতে আবাদ করার দামও হছেনা, হারা খামো কি? আবাদ করমো কি দিয়া।
কথা গুলো বলছিলেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষক আফছার আলী। বাজারে ধানের দাম না থাকায়, ধান ভাল ফলন হলেও একর প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে কৃষককে। একই কথা বলছেন উপজেলার বাসুদেবপুরের ধান চাষি পল্লী চিকিৎসক ওয়াজেদুর রহমান বাবলু। তিনি বলেন এক একর ধান চাস করতে খরছ হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা, এর সাথে প্রান্তিক চাষিদের জমির ভাড়া রয়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা, অথচ এক একর জমির ধান বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ২৭ থেকে২৮ হাজার টাকা। ধান চাষ করে একর প্রতি কৃষককে লোকশান গুনতে হচ্ছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আর বর্গা চাষিদের গুনতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তিনি বলেন প্রতিবছর যদি কৃষক ধান চাষ করে সুধু লোকশানে গুনতে হয়, তাহলে এই কৃষক পরিবার গুলো বাঁচবে কিভাবে?
ফুলবাড়ী পৌরসভার ধান হাটে ধান বিক্রি করতে আসা চকচকা গ্রামের বিশু মন্ডল ধান চাষ করার বিবারন দিয়ে বলেন এক একর জমিতে ধান চাষ করতে খরছ হয়েছে, সেচ ৪ হাজার টাকা, রোপনের মজুরী ৪ হাজার টাকা, সার ৪৬০০ টাকা, ঔষধ ২ হাজার, টাকা নিড়ানী খরছ ৩৫০০ টাকা ও ধান কাটা-মাড়া ১২ হাজার টাকা, এছাড়া রয়েছে বীজতলা তৈরী ও বীজের দাম। তিনি বলেন বোরোধান একর প্রতি উৎপাদন হয়েছে (৪০ কেজিতে মণ হিসেবে) ৬০ থেকে ৬২ মন, যার বাজার মূল্য ২৭ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা, অথচ একর প্রতি ধান চাষ করতে খরছ হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা, এর সাথে রয়েছে (বর্গাচাষিদের জন্য) জমির ভাড়া।
কৃষকরা জানায় প্রান্তিক চাষিরা এনজিও কিংবা মহাজনদের নিকট টাকা ঋন নিয়ে ধান চাষ করে, এখন সেই ঋনের টাকা পরিশোধ করতে পারছেনা, আমন চাষ করবে কিভাবে ।
উপজেলার কয়েকটি ধানের হাট ঘুরে দেখা যায়, মিনিগেট (চিকন/সরু) ধান প্রতিবস্থা (৮০কেজি) ১০৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ২৮ জাতের ধান ৯০০ টাকা ও হাইব্রীট ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ উৎপাদন খরছ হয়েছে এর থেকে অনেক বেশি।
ধান বিক্রি করতে আসা উপজেলার বারকোনা গ্রামের ধানচাষি সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সরকার কৃষকের নিকট ধান কিনছে, ধান কিনছে বলে ঢাঁক-ঢোঁল পিটিয়ে প্রচার চালাচ্ছে, আসলে কয়জন কৃষকের নিকট ধান কিনছে সরকার, আর কতটুকু ধান কিনবে। তিনি বলেন কৃষক ধান চাষ করে এখন বিপাকে পড়েছে, কৃষক ধান বিক্রিও করতে পাছেনা ও রাখতেও পারছেনা। এই ধান চাষি সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ভাবে ঋনের বোঝা বইতে বইতে কৃষকের জমি গেছে, এখন কৃষক পরিবার গুলো পথে বসতে শুরু করেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী জানান এই উপজেলায় ৫২০ কেজি করে ৪৩৩ জন কৃষকের নিকট থেকে সরসরি ধান ক্রয় করা হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ২০১৪ সালের শেষ জরিপ অনুযায়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৩২ হাজার ৫৫৫জন কৃষক রয়েছে, সেখানে মাত্র ৪৩৩ জন কৃষক সরসরি সরকারকে ধান দিতে পারবে, তাও আবার মাত্র ৫২০ কেজি করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হামিম আশরাফ জানান, এই বছর বোরো চাষের লক্ষমাত্র ছিল ১৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর, সেখানে চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৭০০ হেক্টর। তিনি বলেন এই বছর এই উপজেলায় ৯৯ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন যেখানে এই উপজেলায় কৃষক রয়েছে ৩২ হাজার ৫৫৬ জন, সেখানে সরকারকে ধান দিতে পারবে মাত্র ৪৩৩জন, আর সরকারী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে ৩২ হাজার ১২২ জন কৃষক। এছাড়া ধান উৎপাদন হয়েছে ৯৯ হাজার মেট্রিকটন, সেখানে সরকার কিনবে মাত্র ২২৫ মেট্রিকটন, এই সিদ্ধান্ত কৃষকের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।
আর ধান আবাদ কোরমোনা বাহে,ধান আবাদ করি এখন মাতাত হাত পইছে, ধান ব্যাচে যে টাকা হইছে, তাতে আবাদ করার দামও হছেনা, হারা খামো কি? আবাদ করমো কি দিয়া।
কথা গুলো বলছিলেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষক আফছার আলী। বাজারে ধানের দাম না থাকায়, ধান ভাল ফলন হলেও একর প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে কৃষককে। একই কথা বলছেন উপজেলার বাসুদেবপুরের ধান চাষি পল্লী চিকিৎসক ওয়াজেদুর রহমান বাবলু। তিনি বলেন এক একর ধান চাস করতে খরছ হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা, এর সাথে প্রান্তিক চাষিদের জমির ভাড়া রয়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা, অথচ এক একর জমির ধান বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ২৭ থেকে২৮ হাজার টাকা। ধান চাষ করে একর প্রতি কৃষককে লোকশান গুনতে হচ্ছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আর বর্গা চাষিদের গুনতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তিনি বলেন প্রতিবছর যদি কৃষক ধান চাষ করে সুধু লোকশানে গুনতে হয়, তাহলে এই কৃষক পরিবার গুলো বাঁচবে কিভাবে?
ফুলবাড়ী পৌরসভার ধান হাটে ধান বিক্রি করতে আসা চকচকা গ্রামের বিশু মন্ডল ধান চাষ করার বিবারন দিয়ে বলেন এক একর জমিতে ধান চাষ করতে খরছ হয়েছে, সেচ ৪ হাজার টাকা, রোপনের মজুরী ৪ হাজার টাকা, সার ৪৬০০ টাকা, ঔষধ ২ হাজার, টাকা নিড়ানী খরছ ৩৫০০ টাকা ও ধান কাটা-মাড়া ১২ হাজার টাকা, এছাড়া রয়েছে বীজতলা তৈরী ও বীজের দাম। তিনি বলেন বোরোধান একর প্রতি উৎপাদন হয়েছে (৪০ কেজিতে মণ হিসেবে) ৬০ থেকে ৬২ মন, যার বাজার মূল্য ২৭ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা, অথচ একর প্রতি ধান চাষ করতে খরছ হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা, এর সাথে রয়েছে (বর্গাচাষিদের জন্য) জমির ভাড়া।
কৃষকরা জানায় প্রান্তিক চাষিরা এনজিও কিংবা মহাজনদের নিকট টাকা ঋন নিয়ে ধান চাষ করে, এখন সেই ঋনের টাকা পরিশোধ করতে পারছেনা, আমন চাষ করবে কিভাবে ।
উপজেলার কয়েকটি ধানের হাট ঘুরে দেখা যায়, মিনিগেট (চিকন/সরু) ধান প্রতিবস্থা (৮০কেজি) ১০৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ২৮ জাতের ধান ৯০০ টাকা ও হাইব্রীট ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ উৎপাদন খরছ হয়েছে এর থেকে অনেক বেশি।
ধান বিক্রি করতে আসা উপজেলার বারকোনা গ্রামের ধানচাষি সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সরকার কৃষকের নিকট ধান কিনছে, ধান কিনছে বলে ঢাঁক-ঢোঁল পিটিয়ে প্রচার চালাচ্ছে, আসলে কয়জন কৃষকের নিকট ধান কিনছে সরকার, আর কতটুকু ধান কিনবে। তিনি বলেন কৃষক ধান চাষ করে এখন বিপাকে পড়েছে, কৃষক ধান বিক্রিও করতে পাছেনা ও রাখতেও পারছেনা। এই ধান চাষি সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ভাবে ঋনের বোঝা বইতে বইতে কৃষকের জমি গেছে, এখন কৃষক পরিবার গুলো পথে বসতে শুরু করেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী জানান এই উপজেলায় ৫২০ কেজি করে ৪৩৩ জন কৃষকের নিকট থেকে সরসরি ধান ক্রয় করা হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ২০১৪ সালের শেষ জরিপ অনুযায়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৩২ হাজার ৫৫৫জন কৃষক রয়েছে, সেখানে মাত্র ৪৩৩ জন কৃষক সরসরি সরকারকে ধান দিতে পারবে, তাও আবার মাত্র ৫২০ কেজি করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হামিম আশরাফ জানান, এই বছর বোরো চাষের লক্ষমাত্র ছিল ১৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর, সেখানে চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৭০০ হেক্টর। তিনি বলেন এই বছর এই উপজেলায় ৯৯ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন যেখানে এই উপজেলায় কৃষক রয়েছে ৩২ হাজার ৫৫৬ জন, সেখানে সরকারকে ধান দিতে পারবে মাত্র ৪৩৩জন, আর সরকারী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে ৩২ হাজার ১২২ জন কৃষক। এছাড়া ধান উৎপাদন হয়েছে ৯৯ হাজার মেট্রিকটন, সেখানে সরকার কিনবে মাত্র ২২৫ মেট্রিকটন, এই সিদ্ধান্ত কৃষকের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।