শতবর্ষী গাছ রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন করেছে নীলফামারীবাসী
https://www.obolokon24.com/2019/01/nilphamari_21.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ২০ জানুয়ারি॥ জেলা শহরের সার্কিটহাউস সড়কের ডিসি ও এসপি অফিসের সামনে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী তাজা কাঠ বাদাম জীবিত গাছ নিধনের চক্রান্তকারীদের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নীলফামারীবাসীর উদ্যোগে স্থানীয়দের সরব উপস্থিতিতে আজ রবিবার(২০জানুয়ারী) সকাল ১০টা হতে দুই ঘন্টা ব্যাপী জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড় স্বাধীনতা স্মৃতি অম্লান চত্তর প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসুচি শেষে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
নীলফামারী বাসীর ব্যানারে পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদের নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্কাউট এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
বক্তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নীলফামারীর শহরে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী তাজা কাঠবাদাম জীবিত গাছ নিধনের চক্রান্ত করা হচ্ছে। আপনারা এটা আমলে নিন। বিচার করুন। জেলা পরিষদ গাছ কেটে প্রমাণ করেছে যে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে।
নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা সুলতানা লাভলী বলেন, সৈয়দপুর রেল স্টেশনে দাড়ালে জেলা শহরের গাছগুলো চোখে পড়ে। সেখান থেকে সহজেই অনুমান করা যায় ওখানে নীলফামারীর প্রাণকেন্দ্র। গাছগুলো কিন্তু কাটার উপযোগী হয় নি যে কাটতে হবে। কোন কারণ ছাড়াই কাটার উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ। আমরা শতবর্ষী এসব কাঠবাদাম গাছ রক্ষা করবোই যে কোন মুল্যে।
নীলফামারী পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে জেলা শহরের নিদর্শন হিসেবে পরিচিত শতবর্ষী সুস্থ্য সবল একটি কাঠবাদাম গাছ কাটার উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ। স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে গাছটি রক্ষা পায়। এমনকি বিনোদনের জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীম মিনারের পাশে শিশু পার্ক নির্মান হচ্ছিল, কিন্তু জমির অংশ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করে নির্মান কাজটি বন্ধ করে দেয় জেলা পরিষদ। তাই বিনোদনের জন্য দ্রত শিশু পার্ক স্থাপনের দাবী জানান অংশগ্রহণকারীরা।
তিনি আরো বলেন, জানা গেছে চারটি গাছ কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কোন ভাবে আর একটিও গাছ কাটতে দেয়া হবে না। নীলফামারী তথা ঐতিহাসিক নিদর্শন ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে শতবর্ষী গাছ কাটার প্রক্রিয়া নেয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মানববন্ধন সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে.এম আমিনুল ইসলাম, মশিউর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সারওয়ার মানিক, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রশিদ মঞ্জু, জেলা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি তপন কুমার রায়, জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি রায়, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের হোসেন প্রামানিক জীম প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়। স্মারক লিপি গ্রহণ করে ডিসি বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে গাছ কাটার একেবারে বিপক্ষে। তার উপর শতবর্ষী গাছতো নয়ই। জেলা প্রশাসন এসব গাছ অপসারণের ব্যাপারে কোন অনুমোদন দেয় নি। আমরা এগুলো রক্ষা করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে যে, গত ১৭ জানুয়ারি(বৃহস্পতিবার) সকালে উক্ত এলাকার কাঠবাদাম দুইটি গাছ কাঠুরি লাগিয়ে কর্তন করতে থাকে। এ সময় এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে গাছকাটার প্রতিবাদ জানিয়ে গাছ নিধন বন্ধ করে দেয়। এমন কি গাছ নিধনের চেষ্টার ঘটনা তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে জেলা প্রশাসক কে স্মারকলিপি ও সদর থানায় একটি জিডি করেন পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ।#