সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল -রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিল ৪ মাস যাবৎ বন্ধ

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার গত চার মাস যাবৎ বিল পাচ্ছেন না। সরকারিভাবে বরাদ্দ না আসায় সৈয়দপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে ওই বিল ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বিল পেতে ওই পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পর্যন্ত দৌঁড়ঝাঁপ করেছেন। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। এতে করে পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার চরম বিপাকে পড়েছেন। তারপরও হাসপাতালের ভর্তি থাকা রোগীদের কথা চিন্তা করে  ঠিকাদার নিয়মিত পথ্য সরবরাহ করছেন। এ অবস্থায় তিনি আশু বিল উত্তোলনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নীলফামারী সিভিল সার্জন বরাবরে আবেদন করেছেন।
নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি বিগত ১৯৬২ সালের প্রতিষ্ঠা হয়। শহরের কুন্দল এলাকায় অবস্থিত এ হাসপাতালটিতে শুধুমাত্র সৈয়দপুর উপজেলার মানুষই চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন না। সৈয়দপুর আশপাশের দিনাজপুরের খানসামা, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, রংপুরের তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ এবং নীলফামারী সদর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার লোকজনও চিকিৎসা সেবার নেওয়ার জন্য এ হাসপাতালটিতে আসেন প্রতিনিয়ত। গেল ২০১১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সৈয়দপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন হাসপাতাল ভবন, আটটি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়।
 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে শয্যা সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়ে আসছে। যদিও এখন পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ১০০ শয্যার জনবল দেওয়া হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়ার বাসিন্দা মো. মহসিনুল নামের জনৈক ঠিকাদার বেশ কয়েক বছর যাবৎ হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহ করে আসছেন। গেল জুন পর্যন্ত ঠিকাদার মহসিনুল হক হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহ বিল নিয়মিতভাবেই উত্তোলন করেন। কিন্তু  বিপত্তি ঘটে গত জুলাই মাস থেকে। হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার মহসিনুল হক চলতি ২০১৮ সালের গত জুলাই মাসের বিল তৈরিপূর্বক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সৈয়দপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে জমা করেন। কিন্তু হাসপাতালের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই মর্মে সৈয়দপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে ঠিকাদারের ওই বিল পাশ না করে ফেরত দেওয়া হয়।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, বরাদ্দ না আসায় হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি তেল,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বিলও বকেয়া পড়েছে। এ সব বিলের জন্য সংশ্লিষ্টরাও প্রতিদিন হাসপাতালে ধর্ণা দিচ্ছে। জ্বালানি সরবরাহকারী সৈয়দপুর শহরের টার্মিনাল এলাকায় অবস্থিত মেসার্স সুমনা  ফিলিং স্টেশন মালিকও অনতিবিলম্বে জ্বালানি তেল বিল না পেয়ে আর তেল সরবরাহ সম্ভব নয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ থেকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জন্য চলতি ২০১৮- ২০১৯ইং অর্থবছরে সরকারিভাবে কোন অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ফলে গত জুলাই থেকে গেল অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিল পাচ্ছেন না। এতে ঠিকাদারের প্রায় ১৭ লাখ টাকার বিল বকেয়া পড়েছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার তার বিলের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পর্যন্ত দৌঁড়ঝাঁপ করেন। কিন্তু অদ্যাবধি তার  পথ্য সরবরাহ বিলের কোন সুরাহা হয়নি। এ অবস্থায় রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার নিরুপায় হয়ে গত ১৮ নভেম্বর নীলফামারী সিভিল সার্জন বরাবরে আবেদন করেছেন। আবেদনে তিনি আশু বকেয়া বিল উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার মো. মহসিনুল হক মহসিন বলেন, সৈয়দপুরের আশপাশের হাসপাতালগুলোর পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদাররা বিল উত্তোলন করছেন নিয়মিত। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আমার বিল আটকে রয়েছে। বিলের জন্য আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ডিজি, ডাইরেক্টর(অর্থ) পর্যন্ত অনেক ধর্ণা দিয়েছি। কিন্তু কেউই বিলের ব্যাপারে কোন কিছুই সঠিকভাবে জানাতে পারছেন না।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার(আরএমও) ডা. মো. আরিফুল হক সোহেল, হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিল বকেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে অবিলম্বে বিষয়টির সুরাহা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

পুরোনো সংবাদ

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা 26680550316597001

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item