সৈয়দপুর বিমানবন্দর হচ্ছে আঞ্চলিক বিমানবন্দর, ফিল্ড বুক তৈরীর কাজ শুরু

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি :
 নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমাববন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের আঞ্চলিক বিমানবন্দরে (রিজিওনাল হাব) রূপ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন করতে প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রণের ফিল্ড বুক তৈরি করা হচ্ছে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণের সীমানা চিহ্নিতকরণ ও স্থাপনার ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে। সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকারের নেতৃত্বে স্থানীয় ভূমি অফিস এ কাজ চলছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, সৈয়দপুরকে দেশের চতুর্থ আন্তজাতিকমানের বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন টার্মিনাল ভবন ও উড়োজাহাজ (এয়ারক্রাফট) ল্যান্ড করে রাখার জন্য দু’টি অতিরিক্ত অ্যাপ্রোন নির্মাণের কাজ  চলছে। গত ১০ অক্টোবর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল সৈয়দপুর বিমানবন্দর উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন দ্রুত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে।  বাকি ছিল রানওয়ে বাড়ানোর জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ। তারও পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন মিলেছে। এ কাজও গত ৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এ জন্য নতুন করে আরও ৮৫২ দশিমক ৯০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণের সীমানা চিহ্নিতকরণের জন্য জরিপ কাজ করছে স্থানীয় ভূমি দপ্তর। অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌরসভার অধীন ৫৭৯ দশমিক ৫০ একর এবং পার্বতীপুর উপজেলার অধীন ২৭৩ দশমিক ৪০ একর জমি। বর্তমানে এসব জমির সীমানা চিহ্নিতকরণ এবং জমির ওপর গড়ে ওঠা স্থাপনার ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে। জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাথমিকভাবে ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণ করা শেষ হলে ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। এরপর বর্তমান বিমানবন্দরের ৬ হাজার ৮০০ ফুট রানওয়েকে সম্প্রসারণ করে ১২ হাজার ফুটে উন্নীত করা হবে। এতে এই বিমানবন্দরে সুপরিসর সব ধরণের উড়োজাহাজ অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারবে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার জানান, জমি ও স্থাপনা জরিপের মাধ্যমে প্রস্তাবিত জমির ফিল্ড বুক তৈরি করা হচ্ছে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণের সীমানা চিহ্নিত ও স্থাপনার ভিডিও ধারণের কাজ চলছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি ও স্থাপনা মালিকদের নামে নোটিশ জারি করা হবে। এরপর আপত্তি বিষয়ে শুনানি শেষে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদান করা হবে। জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ বর্তমান বাজার মূল্যের ৩ গুণ এবং স্থাপনার (বাসাবাড়ি) জন্য দেড় গুণ অর্থ দেওয়া হবে। বর্তমানে বিমানবন্দরের রয়েছে ১৩৬ দশমিক ৫৯ একর জমি। সম্প্রসারণ কাজ শেষ হলে মোট জমির পরিমাণ দাঁড়াবে ৯৮৯ দশমিক ৪৯ একর। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রানওয়ে সম্প্রসারণের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা সম্পন্ন হলে এটি হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। যা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সমতুল্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক শাহীন আহমেদ জানান, বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ করছে সৈয়দপুর ভূমি দপ্তর। প্রকল্পের চলমান ধারাবাহিক কাজ যথাসময়ে শেষ হলে ২০২০ সালে দৃশ্যমান হবে আন্তর্জাতিকমানের সৈয়দপুর আঞ্চলিক বিমানবন্দর।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী ভারতের কয়েকটি রাজ্যসহ পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে আন্তঃআঞ্চলিক যোগাযোগ, বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর উন্নীতকরণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত তৃতীয় ঋণ চুক্তির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চুক্তির আওতায় এর অর্থ যোগান দেবে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার। এ কাজের মধ্যে রয়েছে জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, রানওয়ে সম্প্রসারণ, স্থাপনা নির্মাণ ও বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়ন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ম জাতীয় সংসদে প্রশ্ন উত্তর পর্বে সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নিত করার ঘোষণা দেন। তাঁর এ ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এর সম্ভাবতা যাচাইসহ একাধিক কারিগরি সমীক্ষা চালায় বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট এলাকায়। এসব কারিগরি জরিপ শেষ হওয়ার পর সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের আঞ্চলিক বিমানবন্দর করার সরকারি সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। 

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5886642917145508803

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item