পঞ্চগড়ে ১০ টাকা কেজি চাল বিতরণে অনিয়ম, ওজন কারচুপির ১০মন ৩৮কেজি চাল উদ্ধার

মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীণ ৬নং সাতমেড়া ইউপির দশমাইল বাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা মূল্যের চাল ৩০ কেজির স্থলে ২৭ কেজি থেকে ২৮.৭০০ কেজি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ১২ নভেম্বর/১৮ সোমবার দুপুরে উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালের ডিলার আকবর আলীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। ফলে এলাকার হতদরিদ্র মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, সোমবার সকালে সদর উপজেলার দশমাইল বাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রয় করা হয়। এ কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল দেয়ার কথা থাকলেও ওজনে কারচুপি করে ২৭ কেজি থেকে  ২৮.৭০০ কেজি করে চাল দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিলারের বিরুদ্ধে।
এসময় চাল বিতরণের স্থানে দায়িত্বে থাকা ট্যাগ কর্মকর্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। পরে অনিয়মের খবর পেয়ে ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, ৬নং সাতমেড়া ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, এবং ইউপি সচিব ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে অত্র এলাকার ওয়ার্ড সদস্য আশরাফুল ইসলাম ও মিন্টু কামাল ঘটনাস্থলেই ছিল।  কর্মকর্তাগণ গিয়ে চাল কমের সত্যতা যাচাইয়ে নাসির পিতা-মৃত হাফিজ উদ্দিন গ্রাম: লইপাড়া কার্ডধারীর চাল পরিমাপ করে ১ কেজি ৫০০গ্রাম চাল কম পান। অপরদিকে সদর উপজেলার বিড়াজোত গ্রামের সোলেমান আলী পিতা-আব্দুস সামাদ চাল পেয়েছেন ৩০ কেজির জায়গায় ২৮ কেজি ৭০০গ্রাম, লইপাড়া গ্রামের সফিকুল ইসলাম পিতা- মফিজউদ্দিন চাল পেয়েছেন ৩০ কেজির জায়গায় ২৮ কেজি, কাহাড়পাড়া গ্রামের মফিজার পিতা-অজির উদ্দিন চাল পেয়েছেন ৩০ কেজির জায়গায় ২৭ কেজি ৫০০গ্রাম, জাবুরীদোয়ার গ্রামের আমিজউদ্দিন পিতা-বুধার উদ্দিন চাল পেয়েছেন ৩০ কেজির জায়গায় ২৯ কেজি সহ একাধিক সুবিধাভোগী অভিযোগ করে জানান, চালের ডিলার আকবর আলী ৩০ কেজির কথা বলে তাদের উক্ত ক্রমে চাল দিয়েছেন। অথচ তাদের কাছ থেকে ৩০ কেজি চালের টাকা নিয়েছেন।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ঐ কয়েক এলাকায় কার্ডধারী ব্যক্তি হচ্ছেন ৬২০জন। আজ সকালে চাল দেয়া শুরু করলে চলমান চাল বিতরনের এক পর্যায়ে  দুপুরে ডিলার আকবর আলীর ম্যানেজকৃত একই এলাকার জগদল পশ্চিমপাড়ার ভ্যান চালক বারেক উপচেপড়া ভিড়ের মাঝখান দিয়ে কারচুপিকৃত চাল ভ্যানে লোড করতে থাকেন। লোকটি অপরিচিত সন্দেহে কার্ডধারী ও কার্ডধারীবিহীন কয়েকজন ব্যক্তি ভ্যান চালককে জিজ্ঞাসা করলে কিছু না বলে চাল লোড করতেই থাকেন। পরে ওয়ার্ড সদস্য জিজ্ঞাসা করার পর ডিলার আকবর তাকে চাল নিয়ে যাওয়ার জন্যে ম্যানেজ করেন। এতে উক্ত ভ্যানে ১০মন ৩৮ কেজি চাল পেয়েছেন জনগণ।
ভুুক্তভোগীরা জানান, আমরা গরীব তাই সরকার আমাদের ১০টাকা করে ৩০ কেজি চাল দেয়। আমরা চাল পেয়ে খুশি হলেও ওজনে কম দেয় ডিলার আকবর। ইতোপূর্বেও সে কম দিয়েছিল। আমরা আজ তাকে হাতে-নাতে ধরেছি তার উচিত শাস্তি দিতে হবে জনপ্রশাসন কর্মকর্তা মহোদয়কে। আমরা কার্ডধারী হতদরিদ্র ব্যক্তিগণ দুর্ণীতিবাজ, কারচুপিবাজ ব্যক্তিকে ডিলারশীপ হিসেবে দেখতে চাই না জানিয়েছেন কার্ডধারীগণ।   
ভুক্তভোগীগণ আরোও জানান, চাল পরিমাপ ব্যক্তিগণ কিভাবে চাল পরিমাপ দিল জানতে চেয়ে তাদেরকেও জনপ্রশাসন কর্মকর্তা মহোদয়ের হস্তক্ষেপ দাবী জানান। 
ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে চাল মেপে ৩০ কেজির স্থলে ৩ কেজি তার একটু কম পেয়েছি। আমি আটককৃত ভ্যানটি ওয়ার্ড সদস্য মিন্টু কামালকে লিখিতভাবে হেফাজতের হাওলায় দিয়েছি। আগামীকাল ডিলার আকবর আলীকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তায় আকবরের ব্যবস্থা নিবেন জানান চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আমি চাল বিতরণে অনিয়মের কথা শুনেছি এবং তাৎক্ষণিক ট্যাগ কর্মকর্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। আজ ডিলার আকবর আলীকে অফিসে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

পুরোনো সংবাদ

পঞ্চগড় 3299365102763680246

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item