পীরগাছায় স্থায়ী জলাবদ্ধতায় দুই মাস ধরে পানিবন্দী ৫ হাজার পরিবার

ফজলুর রহমান,পীরগাছা(রংপুর)ঃ

রংপুরের পীরগাছায় তিস্তা নদীতে অপরিকল্পিত ভাবে সড়ক নির্মানে জলাবদ্ধতায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির উঠতি ফসল বিনষ্ট এবং ১০টি গ্রামের ৫ হাজার পরিবার দুই মাস ধরে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এরই প্রতিবাদে গত শুক্রবার বিকেলে তিস্তা নদীর ২নং বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন ভক্তের বাজারে সমাবেশ করেছে পানিবন্দী হাজারো পরিবার। এসময় তারা জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী পরিকল্পনাসহ নানা দাবি তুলে ধরে প্রশাসনের নিকট আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় তারা উপজেলা পরিষদ ঘেরাও এবং জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেওয়ার কথা বলেন। জানা যায়, উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের তিস্তা নদীর সাহেব বাজার ৩ নং বেড়িবাঁধ থেকে অপরিকল্পিত ভাবে একটি সড়ক নির্মান করে দেশের শীর্ষ একটি প্রতিষ্ঠান। এর ফলে গত দুই মাস আগে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব চর, জুয়ান সদরা, পূর্ব ছাওলা, জুয়ানের চর, দক্ষিণ গাবুড়া, আমিন পাড়া, বৈরাগীপাড়াসহ ১০টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এছাড়া ওই এলাকার প্রায় ৫০ হাজার একর জমির উঠতি ফসল পানির নীচে তলিয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে। তখন থেকেই ওই এলাকাগুলো স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে পানিতে পড়ে শিশু মৃত্যু বেড়ে যাওয়া, কৃষিপন্য বিনষ্ট, বাড়ি থেকে বের হতে না পারা, অসুস্থ্য ব্যক্তিদের চিকিৎসা-সেবায় বিড়ম্বনাসহ নানা সমস্যায় পড়েন এলাকাবাসী। এরই প্রতিবাদে গত শুক্রবার বিকেলে তিস্তা নদীর ২নং বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন ভক্তের বাজারে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক ইউপি সদস্য শরফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন, জাতীয় পাটি ছাওলা ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক সামছুজোহা চঞ্চল, আইয়ুব হোসেন, নয়ন মিয়া, শহিদুর রহমান প্রমুখ। এ সময় পূর্ব শিবদেব গ্রামের নকিব উদ্দিন (৪০), মোহাম্মদ আলী প্রামানিক (৭৫), ছাত্তার মন্সী (৭০) মোসলেম উদ্দিন (৭৫)সহ আরো অনেকে জানান, বেক্সিমকো সোলার পাওয়ার প্লান্ট নির্মানের জন্য অপরিকল্পিতভাবে ৩নং বেরিবাঁধ হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লাটশালা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করায় আমাদের আজ পানিবন্দী হয়ে থাকতে হচ্ছে। আমরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা এসব সমস্য থেকে মুক্তি চাই। সমাবশে বক্তারা জলাবদ্ধতা দুর করণ, তিস্তা নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ, পানির গতিপথ ঠিক রাখার জন্য নদী ডেজিং ব্যবস্থা করণ, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরন প্রদানসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হাকিম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাউজুল কবির জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। দ্রুত সমস্য সমাধানের জন্য এলজিইডি এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।