জলঢাকায় তোলপাড়॥ নাশকতার মামলার আসামীকে কাজী নিয়োগে সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর জলঢাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ,ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে দায়েরকৃত নাশকতা মামলার চার্জসীট ভূক্ত ৩নং আসামী (মামলা নং জি.আর.ও ২৫/১৩ )দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার  মনছুর আলীকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ দাবী করে শিমূলবাড়ী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার নিয়োগের জন্য ডিও লেটার প্রদান করেছেন নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। এ ঘটনা জানাজনি হলে উপজেলা আ’লীগসহ স্বাধীনতা স্বপক্ষের মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে। ।
উপজেলা সাব রেজিষ্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১১জন ও  পৌরসভায় ৪ জনসহ মোট ১৫ জন নিকাহ্ রেজিষ্টার(কাজী)কে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিকাহ্ রেজিষ্টার নিয়োগ,যাছাই,বাছাই ও প্যানেল তৈরীর জন্য গঠিত ৫সদস্য বিশিষ্ঠ উপজেলা কমিটির উপদেষ্ঠা হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। যে সকল ইউনিয়ন বা পৌরসভায় নিকাহ্ রেজিষ্টার(কাজী) নিয়োগ সংক্রান্ত কোন প্রকার মামলা নেই শুধুমাত্র সেই সকল এলাকায় স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম বা বিধান থাকলেও স্থানীয় এমপি সেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একটি পদের বিপরীতে একাধিক ডিও লেটার দেওয়ার অভিযোগ করেছেন অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত ভুক্তভোগী একাধিক নিকাহ্ রেজিষ্টার(কাজী)গন।
গত ৫এপ্রিল/২০১৮ নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা ৬নং শিমূলবাড়ী ইউনিয়নে স্থায়ী নিকাহ্ রেজিষ্টার(কাজী) নিয়োগের জন্য হাড়োয়া শিমূলবাড়ীর মতিয়ার রহমানের ছেলে ওই এলাকার দূর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার ২০১৩ সালে হরতাল চলাকালীন সময়ে উত্তর বেরুবন্দ বড়বাড়ী এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ,ভাংচুর ও লুটতারাজ মামলার চার্জসীট ভুক্ত ৩নং আসামী এবং বর্তমানে ইবনে সিনা কোম্পানীতে কর্মরত মনছুর আলীকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের দাবী করে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি ডিও লেটার প্রেরণ করেন এবং যার প্রেক্ষিতে মনছুর আলী নামে প্যানেল তৈরীর জন্য গত ১৭মে /২০১৮ আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচীব বুলবুল আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি উপজেলা সাব-রেজিষ্টারকে প্রেরণ করেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ ও মামলার বাদী রনজিত কুমার রায়ের সাথে কথা হলে আক্ষেপের সাথে তিনি বলেন,“আমাদের এমপি সাহেবের শরীরে আওয়ামীলীগের রক্ত আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে। জীবন বাজী রেখে আমরা তাকে ভোট দিয়ে এমপি বানাছি,আর উনি আওয়ামীলীগ বানায় জামাত শিবিরের লোকজনকে।”
মনছুর আলীর বিষয়ে শিমূলবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুনীল কুমার রায় বলেন, “আমার জানা মতে তার গোটা পরিবার জামাত শিবিরের সাথে জড়িত এবং শিমূলবাড়ী ইউনিয়নের নাশকতার মামলার আসামী। এমপি সাহেব তাকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ বলে ডিও লেটার দেওয়ায় ইউনিয়ন আ’লীগের পক্ষে থেকে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাছি।”
নাশকতা মামলার আসামীকে স্বাধীনতার স্বপক্ষে মানুষ বলে ডিও লেটার দিয়ে সুপারিশ করার ব্যাপারে জলঢাকা উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেল বলেন,এটা অত্যান্ত দুঃখজনক। আর এমপি সাহেবের কাছে টাকা হলে সবকিছুই জায়েজ হয়ে যায় বলে জানান উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আনছার আলী মিন্টু।
এ বিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিষ্টার শাহজাহান আলী বলেন, শিমূলবাড়ী ইউনিয়নে প্যানেল তৈরীর জন্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি পেয়েছি। মনছুর আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাশকতা মামলার চার্জসীটভুক্ত আসামীকে কাজী নিয়োগে ডিও লেটার ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোক বলে সুপারিশ করার বিষয়ে স্থানীয় এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা’র সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি অসুস্থ্য, এ বিষয়ে  পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 3687282340743267346

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item