কিশোরীগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে পাকা মেঝে ও টিনের বসত ঘর পেল ৭৯০ পরিবার

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়/শামীম হোসেন বাবু, নীলফামারী ৫জুলাই॥
বিধবা হাসিনা বেগম। পেশায় ছিলেন একজন ভিক্ষুক। ২০১৪ সালে কিশোরীগঞ্জ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষনার পর ভিক্ষকদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু হলে তাঁকে পুর্ণবাসিত করা হয়। সেই হাসিনা বেগম ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্প থেকে মাত্র ২ শতক জমিতে প্রধান মন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে আতœহারা হয়ে পড়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের টটুয়ার ডাঙ্গা গ্রামের বিধবা হাসিনা বেগম এখন বসত ঘর মেজে পাকা টিনের ঘরে পরিনত হয়েছে।
বিধবা হাসিনা বেগম বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হাকামে (আমাদের) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ভাঙ্গা বসতঘর চাঙ্গা করে দিয়েছে। 
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প ২ এর আওতায় সবার জন্য বাসস্থান প্রতিশ্রুতি ‘যার জমি আছে ঘর নেই তাঁর নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় আজ ভ্যান চালক তার স্বপ্নের টিনের ঘর পেয়ে গেছে।
শুধু বিধবা হাসিনা বেগম নয়, এমন ৭৯০জন ২৯৭ বর্গ ফিটের সেমিপাকা বসত ঘর পেয়ে বসবাস শুরু করেছে। এ জন্য তারা প্রতিজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মিলাদ দিয়ে নবনির্মিত গৃহে প্রবেশ করে।
ওই উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক মশিউর রহমান। বসতভিটায় তার জমির পরিমান মাত্র ৪ শতক। খড়ের ও বাঁশের তৈরী ঘেরা দিয়ে নড়বড়ে ঘরে থাকতো পরিবার পরিজন নিয়ে। মনে মনে আশা ছিল টিনের ঘর তৈরী করবে। কিন্তু আয় রোজগাড়ে তা কুলিয়ে উঠতে পারছিলনা।
কিন্ত স্বপ্নের আলাউদ্দিনের চেরাগের মতো তার ভাগ্য খুলে যাবে তা কোন দিন চিন্তা করতে পারেনি ভ্যান চালক মশিউর।
কিশোরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের জাম্মাত হোসেন,  বৃদ্ধা জাহেদা বেগম, রনচন্ডী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের অমিছা বেগম, মাগুড়া ইউনিয়নের উত্তর সিঙ্গেরগাড়ী গ্রামের আলেমা বেগমসহ শত শত অসহায় দরিদ্র ও হত দর্রিদ্র পরিবার তাদের স্বপ্নের ঘর বাস্তবে পেয়ে আনন্দে মেতেছে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প হতে কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় গত ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের এক কোটি টাকা ব্যয়’ ১০০ জনকে এই টিনের ঘর তৈরী করে দেয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৪২ ও ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৪৮ পরিবার প্রধান মন্ত্রীর এই ঘর পেয়েছেন। ফলে তিনটি অর্থ বছরে ওই উপজেলায় মোট ৭৯০ পরিবার প্রধান মন্ত্রীর দেয়া ঘর পেলেন।

উপজেলা ঘর নিমার্ণ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মেহেদী হাসান জানান, প্রধান মন্ত্রী দপ্তরের আশ্রয়প্রকল্প-২ এর আওতায় উপজেলার পুনর্বাসিত ভিক্ষুক সহ অসহায় পরিবারগুলো  ঘর পেয়ে আরও স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। বর্তমান সরকারের আমলে এ উপজেলায় তিনটি অর্থ বছরে মোট ৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা  মোট ৭শ৯০জন অসহায় দরিদ্র ও পুনর্বাসিত ভিক্ষুক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে ঘর পেল।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আশ্রয়ন প্রকল্প। ২০১৪ সালে কিশোরীগঞ্জ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষনার পর ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু হয় ও যার জমি আছে ঘর নেই তাঁর নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। আর যারা ভূমিহীন তাদের সনাক্ত করে তালিকা তৈরি করে সরকারী জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে ঘর নির্মান করে দেয়া হবে।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item