গঙ্গাচড়ায় দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের আগেই খুলে দিয়েছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান- মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সফিয়ার কাজল,গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি

রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী সদ্য নির্মিত দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু উদ্বোধনের আগেই খুলে দেয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ সেতুটি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছিল। কিন্তু সে আশা ভঙ্গ করেছে সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাভানা কর্তৃপক্ষ। তারা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের আগেই সেতুটির গেট খুলে দিয়েছে। ফলে প্রতিদিন সেতু দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনসহ লোকজন চলাচল করছে। আর এ সুযোগে নাভানা কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া কতিপয় নিরাপত্তা প্রহরী হাতিয়ে নিচ্ছে সেতু দিয়ে চলাচলরত লোকজনসহ যানবাহন চালকের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ। অপর দিকে তিস্তা খেয়াঘাটের ইজারাদার বঞ্চিত হচ্ছে তাদের আয় থেকে। সেতু খুলে দেওয়ায় তিস্তা পাড়ের সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।  তারা দ্রুত সেতুটি বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের দাবী জানান।
এলাকাবাসী ও এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২২ এপ্রিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী বৈঠকে (একনেক) তিস্তা দ্বিতীয় সড়ক সেতু নির্মাণে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বৃহত্তর রংপুর দিনাজপুর গ্রামীণ যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর ও লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার কাকিনা রুটে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ও সাড়ে ৯ মিটার প্রস্থর দ্বিতীয় তিস্তা সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মাণ এলাকার দুই পার্শ্বে রংপুরের গঙ্গাচড়া হলেও অদৃশ্য কারণে এটি বাস্তবায়নের দ্বায়িত্ব পায় লালমনিরহাট এলজিইডি। সেতুটি নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন। প্রথমে সেতুটির নির্মান সময় ছিল দুই বছর চার মাস। নিদির্ষ্ট সময়ে সেতুর কাজ শেষ করতে না পারায় কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে এ বছরের জানুয়ারীতে শেষ হয় সেতুর নির্মাণ কাজ।
সেতুটি উদ্বোধন হলে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম ও আদিতমারী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের অল্প সময়ে রংপুর তথা দেশের যে কোন জেলায় যাতায়াতের যোগাযোগ ব্যাবস্থা কমিয়ে আসবে। ব্যাবসা বাণিজ্যসহ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ অঞ্চলের মানুষের কৃষিতেও আসবে পরিবর্তন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষা না করে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ সেতু দিয়ে চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছে সেতুর দু-পার্শ্বের গেট। ফলে বিভিন্ন যানবাহনসহ লোকজন অবাধে চলাচল করছে সেতুটির উপর দিয়ে। সেতু খুলে দেওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠলে লালমনিরহাট এলজিইডি থেকে রংপুর জেলা পুলিশ সুপারকে অজ্ঞাত ব্যক্তি কর্তৃক সেতুর গেট খুলে দেওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ১৬ এপ্রিল চিঠি দেয়। চিঠি দেওয়ার পরও যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় সেতু দিয়ে চলাচল অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতু দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও লোকজন চলাচল করছে। এ বিষয়ে লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সেতু উদ্বোধনের আগেই খুলে দেওয়া ঠিক হয়নি। উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-আহবায়ক লিয়াকত আলী বলেন এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য আওয়ামীলীগ সরকারই ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। তেমনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় তিস্তা সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। যা আমরা প্রধান মন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছি। কিন্তু উদ্বোধনের আগেই সেতুর গেট খুলে দেয়া ঠিক হয়নি বলে তিনি জানান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের জিএম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা ঢাকায় চলে আসায় কে বা কাহারা গেট খুলে দিয়েছে সেটা আমাদের জানা নেই এবং সেতুটি আমরা এখনও এলজিইডিকে বুঝিয়ে দেই নি।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 724405766234849147

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item