প্রতিবন্ধি শিশুদের নতুন ঠিকানা গাড়াগ্রাম প্রতিবন্ধি অটিষ্টিক বিদ্যালয়

কারো বোঝা নয়, নিজের মত করে বাঁচতে চায় প্রতিবন্ধি শিশুরা

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ,নীলফামারীঃ বেবী আক্তার দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। সোরওয়ার হোসেন আকাশ ও শান্ত আক্তার শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু তাতে কি তাঁেদর গান শুনে সবাই মুগ্ধ। জামরুল বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধি বয়স ১২ বছর । অথচ মুঠোফোনের এমন কোন প্রোগ্রাম নেই যেটা সে দক্ষতার সাথে অপারেট করতে পারেনা।
এরা সবাই নীলফামারীর  কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম প্রতিবন্ধি ও অটিষ্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বেসরকারীভাবে গড়ে উঠা এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও সর্বক্ষেত্রে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে এসব প্রতিবন্ধি শিশুকে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, অত্র ইউনিয়নের বাসিন্দা মোছাঃ কাজলী আক্তার নিজ উদ্যোগে প্রতিবন্ধি শিশুদের স্ব শিক্ষায় শিক্ষিত করতে নিজের ২২ শতক জমির উপর ২০১৩ সালের জানুয়ারী মাসের ১৫ তারিখে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টা করেন। প্রথমে বিদ্যালয়টিতে ৯০ জন প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী থাকলে বর্তমানে বিদ্যালয়টির অবকাঠামো, প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের  দুপুরের খাবারের ব্যাবস্থা, প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ বৃদ্ধির জন্য গান বাজনার যন্ত্রপাতি, শারিরিক কসরতের যন্ত্রপাতি ও প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের যে কোন সমস্যায় ডাক্তারের ব্যাবস্থা ও প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা  ও ছুটির পর   বাড়িতে রেখে আসার  কারণে বিদ্যালয়টিতে দিন দিন শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি ৪০ জন,এক্টিভিটি র্কোসে ৪০জন, বৃত্তিমুলক শিক্ষা শ্রেণীতে ৭৩ জন , মা ও শিশু শ্রেণীতে ১৯ জন, বিশেষ শ্রেণীতে ৬৫ জন, শিশু শ্রেণেিত ৬৫ জন শিক্ষার্থী মিলে মোট  ৩০২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন করে শিক্ষক থাকার নিয়ম থাকলেও এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ২০জন। একটি সংস্থা থেকে পাওয়া প্রশিক্ষণ ও নিজস্ব অভিঞ্জতা দিয়ে এখানে চলে পাঠদান কার্যক্রম।
দৃষ্ঠি প্রতিবন্ধি আনোয়ার ,শারীরিক প্রতিবন্ধি বেবী, রোকসানা বলেন, তারা লেখাপড়া শিখে মানুষ হতে চায় । কারো বোঝা নয়। তারা স্বাবলম্বী হয়ে নিজের মত করে বাঁচতে চায়।
প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালযটি ২০১৩ সালে স্থাপিত হলেও এখন পর্যন্ত  পুনাঙ্গ একাডেমিক স্বাীকৃতি পায়নি। তবে প্রাথমিক অনুমোদন পাওয়া গেছে। তিনি বলেন আমরা অনেক আশা নিয়ে সম্পুন্ন  সেচ্ছাশ্রমে বিদ্যালয়টি চালিয়ে আসছি। বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া এই অবহেলিত প্রতিবন্ধি শিশুদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে সমাজের মুলধারার যোগ্য মানুষ হিসাবে যুক্ত হতে আমরা সহায়ক ভুমিকা রাখতে চাই।
বিদ্যালয়টির  প্রতিষ্টাতা কাজলী আক্তার বলেন, আমার বাবার ৫ সন্তান । ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে সেই মেয়েটি আমি। আমার ৪ ভাইয়ের মধ্যে ২জন  প্রতিবন্ধি। প্রতিবন্ধি হওয়ার কারণে সমাজে তারা শুধু বোঝা সমাজে তাদের কোন মুল্য নেই। আর এই কষ্ট আমাক কুড়ে কুড়ে খায়। আর সেই চিন্তা থেকে আমি আমার ইউনিয়নে প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্টা করেছি। আর কোন প্রতিবন্ধি যাতে সমাজের বোঝা না হয় সেজন্য আমি প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিবন্ধি বাচ্চাদের এনে শিক্ষিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনিমুন আক্তার বলেন, আমি বেশ কয়েকবার গাড়াগ্রাম প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাতা কাজলী আক্তারের অক্লান্ত প্রচেষ্ট ও শিক্ষকদের সেচ্ছাশ্রমে প্রতিবন্ধি শিশুরা তাদের নতুন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি নীলফামারী জেলা সমাজসেবা স্যার আমাকে সাথে নিয়ে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছে।


পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 250776495074226149

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item