অশ্লীলতার বিরুদ্ধে নীলফামারীতে যাত্রাগান

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ২ জানুয়ারী॥
নীলফামারীতে ছয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো অশ্লীলতার বিরুদ্ধে যাত্রাগান। জেলা যাত্রা ফেডারেশনের আয়োজনে জেলা সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের বোর্ডের বাজারে ছয় দিনের ওই যাত্রাগান গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর/২০১৭ইং) রাতে শেষ হয়েছে।
অশ্লীলতা পরিহার করে যাত্রা পালায় নাচ, গান, নাটক সবই ছিল। কিন্তু তা ছিল পরিচ্ছন্ন প্রদর্শনী। যা দেখে  ৭০ দশকের যাত্রাপালার কথা স্মরন করেছে এলাকার প্রবীণ ব্যাক্তিরা।
জেলা যাত্রা ফেডারেশনের সহসভাপতি মোকছেদ আলী বলেন, যাত্রা মানে অশ্লীলতা নয়, যাত্রাগানে বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষণীয় বিষয় আছে। অশ্ল¬ীলতার কারণে অনেক মানুষ যাত্রা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। অশ্লীলতা ও বিশৃঙ্খলার কারণে প্রশাসন যাত্রাগানের অনুমতিও দিতে চায় না।
আজ এ শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত হতে বাঁচিয়ে রাখতে আমরা অশ্লীলতার বিরুদ্ধে যাত্রাপালা শুরু করেছি। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আমরা সফলভাবে ছয় দিনের যাত্রা অনুষ্ঠান শেষ করতে পেরেছি। প্রতিদিন এখানে পাঁচ সহস্রাধিক সব বয়সের নারী-পুরুষ দর্শকশ্রোতাকে আমরা বিনা টিকিটে এই বিনোদন দিতে পেরেছি। আমরা এ ধরনের আয়োজন আরো করতে চাই। এ জন্য সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।
যাত্রাশিল্পী সীমা বেগম (২৫)। আট বছর ধরে এ পেশায় এসেছেন। তিনি বলেন, অশ্লীলতা আমাদের ভালো লাগে না। এখানে গত ছয় দিনে যে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে কোনো অশ্লীলতা ছিল না।  দর্শকশ্রোতা অনেক বেশি ছিল। অশ্লীলতা ছাড়াও যাত্রা হতে পারে, তার এটাই বড় উদাহরণ। সীমা জানায় আট বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি বঝেছেন যাত্রাদলে অশ্লীল নৃত্য শিল্পী থাকে না। যারা যাত্রার আয়োজন করে তারাই পৃথকভাবে নৃত্য শিল্পী নিয়ে আসে । ফলে অশ্লীলতা প্রকাশ পায়।
স্বপ্না অপেরার স্বত্বাধিকারী মানিক চন্দ্র রায় বলেন, বছরে ছয় মাস যাত্রা হয়। কিন্তু যাত্রাগানে অশ্লীলতা এমন পর্যায়ে গেছে যে যাত্রাগানের কথা শুনলে প্রশাসন অনুমতি দিতে চায় না। এ কারণে দিনে পর দিন শিল্পীদের বসিয়ে রেখে খাওয়াতে হয়। ফলে প্রতিবছর লক্ষাধিক টাকা লোকসান গুনতে হয়। জেলা যাত্রা ফেডারেশন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য যাত্রা আবার তার হারানো গৌরব ফিরে পাক।
খোকশাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান প্রধান বলেন, আমরা দল মতনির্বিশেষে একটি কমিটি করি। ওই কমিটির ১০০ জন সদস্য ৫০০ টাকা করে এককালীন প্রদান করেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিনা টিকিটে যাত্রা দেখার ব্যবস্থা করি। এর বাইরে কিছু চেয়ার রাখা হয়। কোনো দর্শক চেয়ারে বসে যাত্রা দেখতে চাইলে ৩০ টাকা করে দেয়। চেয়ারের ভাড়া এবং আমাদের এককালীন জমা করা টাকা দিয়ে আমরা শিল্পীদের খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ মেটাই। এই যাত্রা আয়োজনে আমরা প্রশাসনকে অবগত করি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় ব্যক্তিরা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ফলে কো হৈ চৈ ছাড়াই সুন্দর পরিবেশে ছয়দিন ব্যাপী অশ্লীলতা বিরুদ্ধে যাত্রাপালা শেষ করা হয়। এতে কোনো বিশৃঙ্খলাও ঘটেনি।#

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 9003528144032592209

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item