জলঢাকায় যৌতুকের টাকা ফেরত দিলেন জামাই

বিশেষ প্রতিনিধি ২৩ জানুয়ারী॥
চার বছর আগে একটি গরু ও নগদ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়ে বিয়ে করেছিল নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার একটি হার্ডওয়ারের দোকানের কর্মচারী নাম এরশাদ আলী (২৮)। কিন্তু হঠাৎ করে তার বিবেক হতে যৌতুক বিরোধী আন্দোলন দেখা দেয়। চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা নেয়া এরশাদ আলী নিজেকে যৌতুক নিয়ে বিয়ে করে অপরাধী মনে করেছে। তাই সে তার নিজের কাছে যৌতুক বিরোধী আন্দোলনে সামিল হতে শ্বশুড়বাড়ি ছুটে গিয়েছে। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যৌতুকের গরুর মূল্য ৪০ হাজার ও নগদ ৫০ হাজার সহ ৯০ হাজার টাকা শাশুড়ির হাতে ফিরিয়ে দিয়ে এসেছে। গত দুই দিন আগের এই ঘটনা মঙ্গলবার ছড়িয়ে পড়েছে জেলা জুড়ে।

 নীলফামারীর জলঢাকার সবুজপাড়া এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে এরশাদ আলী। সে উপজেলার  চেরেঙ্গাগ্রামের মৃত সুলতান আলীর মেয়ে রোজিনা বেগমকে বিয়ে করেন। সেসময় যৌতুক হিসেবে ৯০ হাজার টাকা মেয়ের মায়ের নিকট গ্রহন করে এরশাদের পরিবার।

এরশার আলীর শাশুড়ি রাবেয়া বেগম প্রথমে যৌতুকের এই টাকা মেয়ে জামাইয়ের কাছ হদে ফেরত নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু এরশাদ ছিল অনড়। এমন বিরল ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আজ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারী) হার্ডওয়্যারের দোকানে কথা হয় এরশার আলীর সঙ্গে। সে জানায়, চার বছর আগে পরিবারের পছন্দে রোজিনার সাথে আমার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে আমার আড়াই বছরের একটি কন্যা শিশু রয়েছে। তিনি আরও জানায়, বিয়ের রাত হতেই ভাবছিলাম যৌতুকের এই দেনা থেকে আমি কবে মুক্ত হবো। এই টাকা নেওয়াটাই কেন যেন বিবেকের নিকট বারবার অপরাধী মনে হচ্ছিল। অভাবী সংসারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে দোকানে বেশী বেশী করে কাজ করতে শুরু করি। বেতন ভাতা বেশী পেতে থাকি। প্রায় তিন বছর হতে তিলে তিলে সঞ্চয় করে আমি সেই টাকা জমিয়ে আমার শাশুড়িকে ফেরত দিয়ে এসেছি। এখন আমি যৌতুকের দায় মুক্ত। যেন বুকের উপর হতে অদৃশ্য বিশাল পাথর নেমে গেল।

এদিকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এরশাদ আলী শাশুড়ি রাবেয়া বেগম বলেন, এমন জামাই কয়েক জনের ভাগ্যে জোটে! তিনি বলেন, আমার জামাইয়ের এমন কাজে আমি গর্বিত। রোজিনার বিয়ের সময় আমার জমি বন্ধক ও দু'টি গরু বিক্রি করে এরশাদের পরিবারের হাতে ৯০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। আমি জামাইয়ের জন্য দোয়া করি। এমন সন্তান যেন দেশের প্রতিটি ঘরে জন্মে।

এরশাদ আলী স্ত্রী রোজিনা বেগম বলেন, আমি বিষয়টি জানতাম না। আমার মা আমার বাসায় এসে বলে গেছে। আমি নিজেও অবাক হয়েছি। আমার স্বামী বিয়ের পরহতে কোন দিন কোন রাগারাগি বা কটুকথা আমাকে বলেনি। বিয়ের চার বছরে সংসারটা অঅমার সুখেভরপুর হয়ে আছে। সৃস্টিকর্তা আমার স্বামীর মঙ্গল করুন, তাকে দীর্ঘ জীবি করেন যেন। 

এরশাদের কর্মরত প্রতিষ্ঠান ভাই ভাই ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আজাহার আলী বলেন, যৌতুকবিরোধী কর্মকান্ডে নিজেকে না জড়িয়ে যৌতুকের টাকা ফিরিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এরশাদ। এতে আমি গর্বিত। সেই সঙ্গে এরশাদ আলীর বেতভাতাও বৃদ্ধি করে দিয়েছি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 2308012879382130642

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item