নো-ম্যান্সল্যান্ডে জুয়া আসরের সময় পরিবর্তন!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল,পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে ঃ

বিতর্কিত সীমানায় জমজমাট জুয়া আসরের সময়ে পরিবর্তন এনেছে জুয়াড়ীরা। এখন বিকেলের আসরটি বন্ধ করে একই স্থানে রাতে জুয়া আসর চালানো হচ্ছে। আগে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে শেষ রাত পর্যন্ত জুয়া আসরগুলো চলতো। পীরগঞ্জের উঁচাপাড়া নামক স্থানে দেড়যুগ ধরে একটি জুয়া আসর এখনো চলছে।
সংশি¬ষ্ট এলাকাবাসী, জুয়াড়ী ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, রংপুরের পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ এবং ঘোড়াঘাট উপজেলার সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীটির চরে একাধিক স্থানে জমজমাট জুয়া আসর চলে আসছিল। কোন কোন জুয়া আসরের বয়স কমপক্ষে দেড়যুগ। নদীটির পীরগঞ্জ সীমানায় পারবোয়ালমারী, বোয়ালমারী, টোংরারদহ, গীলাবাড়ী, উঁচাপাড়া, নামাপাড়া, টগরার বাজার, রামনাথপুরের ঘাট, নবাবগঞ্জের মোগরপাড়া, কবলিপাড়া, বিনোদনগর, ঘোড়াঘাটের শালিকাদহসহ বেশ কয়েকটি স্থানে জেগে উঠা চরে জুয়া আসর চলতো। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জুয়ার ব্যাপারে সংগঠক হিসেবে কাজ করে থাকেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান। অপরদিকে নবাবগঞ্জের ইস্কেন্দার আলীর নেতৃত্বেও জুয়া আসর চলছে।
এলাকাবাসীর প্রতিবাদের কারণে অনেক আসরগুলো বন্ধ হলেও এখনো পীরগঞ্জের বড়আলমপুর ইউনিয়নের উঁচাপাড়া নামকস্থানে নদীর চরে জুয়া আসর চলছে। এটির নেতৃত্বে রয়েছে বড়আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাসপুরের সাত্তার মিয়ার ছেলে আতোয়ার রহমান। মজার ব্যাপার হলো, প্রতিদিনই জুয়া আসরে আসা জুয়াড়ীদের বহনকারী অর্ধশতাধিক মোটর সাইকেল ও ৫/৬ টি মাইক্রোবাস পীরগঞ্জের বড়আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাসপুর ও টগরার বাজারে গ্যারেজ করার মতো রাখা হয়। একাধিকবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই মোটর সাইকেল ও কার আটক করেছিল। এলাকার কয়েকজন নাম না প্রকাশের শর্তে জানায়, অনেক সময় আমরা আমাদের ফসলী ক্ষেত রক্ষা ও সন্তানদেরকে বিপথগামীর পথ থেকে ফেরাতে জুয়া আসর বন্ধ করতে গিয়ে জুয়াড়ীদের দ্বারা মারপিটের শিকার হয়েছি। ইউএনও-পুলিশকে বলেও কোন প্রতিকার পাইনি। সংশি¬ষ্ট থানা পুলিশের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে উঁচাপাড়ায় বিকেলের পরিবর্তে জুয়া আসর রাতে চালানো হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে। অপরদিকে উলে¬খিত থানার পুলিশ তাদের সীমানায় জুয়া খেলা হয় না বলে দাবী করেন। এ ব্যাপারে জুয়াড়ী নেতা পীরগঞ্জের আতোয়ার রহমান মোবাইল ফোনে জানায়, পীরগঞ্জ ও ঘোড়াঘাট থানা ম্যানেজ করে আমি দিনাজপুর সীমানায় জুয়া চালাচ্ছি। এখন তো বিকেলে নয়, রাতে খেলছি। শীতের কারণে পে¬য়ারও কম আসছে বলে তিনি দাবী করেন। বড়আলমপুর ইউপির চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নের উঁচাপাড়ার জুয়া আসরটির বিরুদ্ধে আমি, ওয়ার্ড মেম্বার ও এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও তারা দিব্বি জুয়া খেলে যাচ্ছে। আসরটি আমার এলাকায় দেড়যুগ ধরে চললেও জুয়াড়ীরা স্থানটি দিনাজপুর সীমানায় বলে দাবী করে। জুয়া খেলার ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার ওসি রেজাউল করিম, ও নবাবগঞ্জ থানার ওসি সুব্রত কুমারকে মোবাইল ফোন করা হলে তারা এর দায় না নিয়ে বলেন, আমাদের সীমানায় খেলা হচ্ছে না। ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, আমি এখানে একমাস আগে যোগদান করেছি। এখানে কোথাও জুয়া হচ্ছে না। জুয়া খেলা হবেও না। অনেকেই ক্ষেদোক্তি প্রকাশ করে বলেন, খেলাটি কি নো-ম্যান্সল্যান্ডে হচ্ছে। শত শত মানুষ জুয়া আসরে গেলেও এটি তো ভারতের ভু-খন্ড নয়। পুলিশকেই এর দায় নিতে হবে বলে এলাকাবাসী জানান।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 2231147901703874332

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item