ডোমারে অসুস্থ্য গরুর মাংস বিক্রির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন।

আবু ফাত্তাহ কামাল পাখি,স্টাফ রিপোর্টারঃ

নীলফামারীর ডোমারে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অসুস্থ্য গরুর মাংস বিক্রির প্রতিবাদে মানব বন্ধন করেছে  এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ফের কাউন্সিলর মাংস বিক্রেতা (কসাই) ছামিউলের নাম প্রকাশ পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের  দায়িত্ব ¡নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অসুস্থ গরুর মাংস বার বার বিক্রির ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে ।
জানাগেছে,উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের বেতগাড়া বাবুপাড়া গ্রামের মৃত একরাম আলীর ছেলে গোলাম নুরের একটি গরুকে গত প্রায় একমাস পূর্বে পাগলা কুকুর কামর দেয়। গরুর মালিক গোলাম নুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাসেদুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জলাতংক রোগের বিষয় নিশ্চিত হয়ে গরুটির কোন চিকিৎসা নাই মর্মে সাফ জানিয়ে দেয় ।তিনি আরো জানান, মৃত্যুর পরে পশুটিকে ৬/৭ ফুট মাটির নীচে পুঁতে রাখার পরামর্শ দেন। গোলাম নুর প্রানি সম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ উপেক্ষা করে গত ২৯শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় মাংস বিক্রেতা মৃত হোদলা মামুদের ছেলে গুলবাহারের নিকট প্রায় ৪০হাজার টাকা দামের গরু মাত্র চার হাজার টাকায় বিক্রি করে। গুলবাহার পশুটি গোপনে জবাই করে সম্পূর্ণ মাংস ডোমার পৌর সভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মাংসবিক্রেতা (কসাই) ছামিউল ইসলামের নিকট বিক্রি করে বলে মানব বন্ধনে বক্তারা  বক্তব্যে উল্লেখ করেন। অপরদিকে জবাইকৃত পশুটির রক্ত ও উচ্ছিষ্ট খেয়ে পরের দিন এলাকার বেশ কয়েকটি কুকুর অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ৩টি কুকুর মারা গেলে এলাকায় আতংক ও ক্ষোভ বাড়তে থাকে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে এলাকাবাসী উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের ধঞ্চনপুর বাজারে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করে। এসময় আজিবর রহমান(৫০),মোহম্মদ আরিফ(৩২),আইয়ুব আলী (৩২)প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। বক্তাগণ অসুস্থ্য গরুর মাংস বিক্রয়ের হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। এছাড়া মাংস বিক্রেতাদের নীতিমালার আওতায় আনা সহ বাজার তদারকি ব্যবস্থা দাবী করেন।
উল্লেখ্য যে , কাউন্সিলর কসাই সামিউলের বিরুদ্ধে গত ৩রা জুন/১৭ গভীর রাতে জবাইকৃত অসুস্থ্য মহিষের মাংস বিক্রির প্রস্তুতিকালে জব্দ করে ডোমার থানা পুলিশ। পরে পৌর প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরদের অনুরোধে পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা না নিয়ে জব্দকৃত মাংস মাটিতে পুঁতেই দায় সারেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডাঃ রাশেদুল আরেফিন বলেন, জোড়াবাড়ীর ভ্যাটেনারী ডাক্তার রতন গরুটার চিকিৎসা করেন, আমাকে মোবাইল করে কুকুর কামড়ানোর বিষয়টি জানায়। আমি গরুর মালিক গোলাম নুরকে গরুটি বিক্রি বা মাংস খেতে নিষেধ করেছি । এ অবস্থায় মৃত্যু হলে ৬/৭ ফুট গভীর গর্ত করে মাটিতে পুতে ফেলার পরামর্শ দেই। এধরনের গরুর মাংস কাটা ছিড়া যারা করবে তাদের এ্যানথেরাক্স রোগ ও মাংস খেলে জলাতংক সহ মানুষের নানা সমস্যা হতে পারে।পয়জনিংয়ের কারনে কুকুর তিনটি মারা যেতে পারে ।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্যানেটারী ইন্সেপেক্টর দুলাল হোসেন জানান, প্রানী সম্পদ বিভাগ তাদের দায়িত্ব পালন করে নাই ।এটা তাদের কাজ । তারপরও আমি গিয়েছিলাম । কেউ খেয়ে ফেলেছে কিনা ।এতবড় ঘটনা মিথ্যা হতে পারে ?এটা সত্য ঘটনা ।
এ ব্যাপারে ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল জানান, মানববন্ধনের সময় পুলিশ গিয়েছিল ।আমরা শুনেছি ।তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে ।এ প্রক্রিয়ার সাথে প্রানীসম্পদ ,ইউএনও মহোদয়,স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে ।
এ ব্যাপারে ডোমার পৌরসভার মেয়র মুনছুরুল ইসলাম দানু জানান, ইতিপূর্বে পৌরসভায় মিটিং করে রেজুলেশনের মাধ্যমে তাকে সর্তক করা হয়েছে ।আবার এ রকম ঘটনা করলে যে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা সহযোগীতা করবো ।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর (কসাই) মাংস বিক্রেতা সামিউল ইসলাম জানান,আমি ওখানে গিয়েছিলাম ,তবে গরুর দাম খুব কম চাওয়ায় আমার সন্দেহ হয় ।তাই আমি কিনিনি ।ওটা সম্ভবত বীরগঞ্জের কসাই কিনেছে ।আমি গতবারের  ঘটনার পর আর মাংস বিক্রি করি না ।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5043262828683794724

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item