ঠাকুরগাঁওয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
https://www.obolokon24.com/2017/08/thakurgaon_24.html
বৃহস্পতিবার
দুপুরে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: হায়দার আলী আসামীর
উপস্থিতিতে মৃত্যুদর-র রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপরে আইনজীবী
অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ।
এছাড়াও আদালতে আসামীকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত এনামুল হক (৫০) দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর গ্রামের প্রয়াত তজির উদ্দীনের ছেলে।
মামলার
বিবরণে বলা হয়, এনামুল হকের সঙ্গে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জসাইপাড়া
গ্রামের প্রয়াত হামিদ বক্সের মেয়ে সালমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে
এনামুল হক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। পরিবারে অভাব অনটনের
কারণে প্রায় সময় স্বামী এলামুল হক তাঁর স্ত্রীকে বেধরক মারপিট করত।
গত
২০১১ সালের ২০ এপ্রিল বড় মেয়ে বিজলী বেগমকে দেখার কথা বলে এনামুল হক তাঁর
স্ত্রী সালমা বেগমকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মরিচপাড়া এলাকায়
যায়। এরপর ওই দিনই রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামী এনামুল হক একাই শ্বশুর বাড়ীতে
ফিরে আসেন। শ্বশুর বাড়ীর লোকজন এনামুলকে তাঁর স্ত্রীর কথা বললে সে জানায়
তাঁর স্ত্রী মেয়ের বাড়ীতেই আছে। কিক্ষুক্ষণ পরেই এনামুল শ্বশুর বাড়ী থেকে
পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন এনামুলের বড় মেয়ে বিজলী বেগমের কাছে খবর
নিয়ে সে জানায় তাঁর মা সালাম বেগম বাবার সাথেই চলে গিয়েছে। এরপর পরিবারের
লোকজন অনেক খোঁজাখুজি করেও সালমাকে পায়নি।
পরে গত ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল পরিবারের লোকজন পীরগঞ্জ থানায় নিখোঁজ হওয়ার একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
গত
২০১১ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুর আড়াইটার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর
গ্রামের মকবুল হোসেনের কালাই ক্ষেতে স্থানীয়রা মাটির নিচে চাপা দেওয়া একটি
লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এরপর ওই লাশটি সালমার লাশ
বলে পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করে।
ওই
দিনই বিকেল ৫টার দিকে মৃত সালমার ভাই সফির উদ্দীন বাদী হয়ে ভগ্নিপতি
এনামুল হককে আসামী করে পীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এরপর
পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামী এনামুল হককে গ্রেপ্তার করেন এবং আসামী এনামুল
বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারার
জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে।
পরবর্তীতে তৎকালীন পীরগঞ্জ থানার এসআই আমজাদ হোসেন মামলাটির তদন্ত শেষে গত ২০১১ সালের ০৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপরে
আইনজীবী আব্দুল হামিদ বলেন, মামলার এজাহারকারীসহ ২৪ জন সাীর মধ্যে সিংহভাগ
সাী আদালতে তাদের স্যা প্রদান করেন। স্যাপ্রমান শেষে প্রমাণিত হয় আসামী
এনামুল হক তাঁর স্ত্রী সালমা বেগমকে হত্যা করে মাটির নিচে পুতে রেখেছিলেন।
আসামীর বিরুদ্ধে আদালত যে রায় প্রদান করেছেন এতে আমরা সন্তুষ্ট।
আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু মনসুরের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।