ঠাকুরগাঁওয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : অসুস্থদের পাশে সার্বক্ষণিক রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
https://www.obolokon24.com/2017/08/health.html
আব্দুল আউয়াল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি। ভয়াবহ এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিস্ট জেলা প্রশাসনের
সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে এগিয়ে এসেছে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ, ফেসবুকে ইভেন্ট
খুলে দিন-রাত দুর্গতদের সাহায্য করছেন হাজারো স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী।
নিজে থেকেই ছুটি বাতিল করেছেন জেলার প্রায় সব চিকিতসকেরা। উদ্বিগ্ন জেলা
প্রশাসক সার্বক্ষনিক ছুটছেন বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলোতে, পরিস্থিতি মোকাবেলায়
নির্ঘুম রাত কাটছে জেলার পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ।
সামাজিক দায়বদ্ধতা আর মানবিকতা থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ প্রায় সব শেণীর পেশার মানুষ।
পাড়ার
সবচে দামাল ছেলেটাও তার চিরাচরিত দস্যিপনায় টায়ার ফুলিয়ে অথবা সাতার কেটে
উদ্ধার করে আনছে পানিবন্দী অসহায় মানুষকে। বসে নেই শহরের তরুনীরাও! দলবেঁধে
সাহায্য সংগ্রহ করে পৌছে দিচ্ছে অসহায় মানুষদের কাছে।
আর
এভাবেই সবার এমন নিঃস্বার্থ এগিয়ে আসা দেখে শত কস্টের মধ্যেও ঘরছাড়া অসহায়
মানুষদের মুখে তাই হয়তো যন্ত্রনা মুছে গিয়ে ফুটে উঠছে একচিলতে প্রশান্তির
ছাপ।
বন্যাদুর্গতদের দ্রæত চিকিৎসাসেবা দিতে সবার
সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে স্বপ্রণোদিতভাবেই যোগ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য
বিভাগ । জেলার সিভিল সার্জেন ডা. আবু মো: খয়রুল কবিরের নেতৃত্বে বন্যায়
দূর্গত মানুষের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবার নানা পদক্ষেপ গ্রহনে পেশাগত
দায়িত্ব পালনের বাইরেও বিপর্যস্ত মানুষের সেবায় সার্বক্ষনিক কাজ করে
যাচ্ছেন সবাই।
প্রতিটি উপজেলায় আক্রান্ত এলাকাগুলোতে
বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য সেবার টিম গঠন করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে স্বাস্থ্য
বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতলসহ
প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা কমপ্লেক্সে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, নার্স,
অন্যান্য স্টাফ ও এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্ট
সুত্র ।
বন্যায় প্লাবিত অসহায় মানুষের চিকিৎসার জন্য
অস্থায়ীভাবে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরে রিভার ভিউ স্কুলে প্রশাসনিক ভবনের
বারান্দায় একটি স্বাস্থ্য সেবা টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমে রয়েছেন আবাসিক
মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুব্রত কুমার সেন, ডা. শিহাব মাহমুদ শাহারিয়ার ও ডা.
আব্দুল জব্বার।
চিকিৎসা দিতে আসা ডাক্তাররা জানান,
বন্যায় আতঙ্কসহ জ্বর,সর্দি-কাশি, ডাইরিয়া, আমাশা ও আলসার রোগে বেশী
আক্রান্ত হয়। তাই আমরা প্রতিবছরের ন্যায় এবারো বন্যায় প্লাবিত অসহায়
মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। এ চিকিৎসা সেবায় যেন এক অন্যরকম আত্মতৃপ্তি
পাচ্ছি আমরা, যা আর সাধারণত পাওয়া যায়না। আমরা ঘোষণা দিয়েছি বড় যে কোনো
সমস্যায় বন্যায় প্লাবিতদের হাসপাতালে নিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার।’
এ
প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিভিল সার্জেন ডা. আবু মো: খয়রুল কবির জানান, বন্যায়
দুর্গত মানুষের জন্য আমি আমার জেলায় সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের
সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছি।
তিনি
আরও জানান, বন্যার কবলে পড়া রুগীদের জন্য চিকিৎসার জন্য প্যারাসিটামল,
সিফ্লোক্সিন, মেট্রোনিডাজল, এন্টি হিসটামিন ও পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন,
সরবরাহ করা হচ্ছে। বন্যায় নানা স্থানে সাপের উপদ্রব্য থাকার সম্ভাবনায় আমরা
এন্টি ¯েœক ভেনক নামক ভেকসিন মজুদ রেখেছি। যাতে করে সাপে কাঁটা রুগীদের
আমরা তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দিতে পারি।