তিস্তার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
https://www.obolokon24.com/2017/07/testia.html
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, তিস্তা (নীলফামারী) থেকে॥
নীলফামারীতে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলেও আজ পর্যন্ত জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের পাঁচ সহ¯্রাধীক পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ডালিয়ায় অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পুর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সুত্র মতে, লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে উজানের ঢলে গত সোমবার (১০ জুলাই) সকাল ছয়টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সেখানে পানি কিছুটা কমে বেলা ১২টা পর্যন্ত বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ বুধবার (১২ জুলাই) তিস্তা নদীর পানি আরও কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেখানে তিস্তা নদীর বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছচাপানী ও জলঢাকা উপজেলার, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী প্রায় ২০টি গ্রামের পাঁচ সহ¯্রাধিক পরিবার এখনও বন্যাকবলিত আছেন।
আজ বুধবার ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝারসিংহেরশ্বর ও পুর্বছাতনাই গ্রামে পানিবন্দি ঘরবাড়ির চিত্র দেখা যায়। পানিবন্দি এসব পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাজ কর্মে যেতে না পাড়ায় তাদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। এছারা পরিবারগুলোর মাঝে বিশুদ্ব পানিয়জলের অভাব বিরাজ করছে।
ঝারসিংহেরশ্বর গ্রামের আমির হোসেন (৪০) বলেন, চারদিন ধরি পানি বন্দি আছি, এখন পানি বাড়লে আর কমে না। এখন গ্রামত সবার বাড়িত পানি, কাম করমো কোনঠে। ধার দেনা করি চার সদস্যের পরিবারের ভরণ পোষন করতে হচ্ছে।
পুর্ব ছাতনাই গ্রামের জয়নব বেগম (৪১) বলেন, হামার বাড়িত এলাও কোমর পানি আছে। চোখির ওপর চুলা ওঠে রান্নাবান্না করি খয়ছি। এক বেলা আন্ধি দুই বেলা খাই।
একই গ্রামের নাজমা বেগম (৩৮) বলেন, খাওয়ার পানির খুব সমস্যা চলেছে। যার বাড়ির ভিটা উচা নৌকাত করি তার বাড়ি যায়য়া টিউবয়েলের পানি আনির নাগেছে। বন্যার পানিত হাটির কারনে বাচ্চাদের পায়ে চুলকানি ঘা হচ্ছে।
পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, তিস্তা নদীর সৃষ্ঠ বন্যায় পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের পুর্ব ছাতনাই ও ঝারসিংহেরশ্বর গ্রামের এক হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েন। বুধবার তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেণ্টিমিটার নিচে নামলেও গ্রাম দুটি থেকে সে ভাবে পানি নামেনি। এখনও প্রায় সাত শত পরিবার পানি বন্দি আছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আজ বুধবার তিস্তা নদীর পানি কমে ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত সোমবার (১০ জুলাই) ওই পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।