পীরগঞ্জে ২৩০ বিদ্যালয়ে এডহক কমিটির সভাপতি সহকারী শিক্ষা অফিসাররা!
https://www.obolokon24.com/2017/07/primary.html
স্লিপের কোটি টাকা, সংস্কারের ২০ লাখ টাকার কাজ প্রশ্নবিদ্ধ, নির্বাচিত কমিটির সদস্যরা হতাশ
রংপুরের পীরগঞ্জের ২’শ ৩০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত কমিটির পরিবর্তে এডহক কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জোবায়দা রওশন জাহান। ওইসব এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে সহকারী শিক্ষা অফিসাররা দায়িত্ব পেয়েই উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের টাকা নামকাওয়াস্তে ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে নিয়মিত কমিটি গঠন না হওয়ায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ের নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য হতাশ হয়ে পড়েছেন। রংপুরের কোন উপজেলাতেই এডহক কমিটি নেই বলে জানা গেছ্
েসরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৯টি ক্লাষ্টারের অধীনে ২’শ ৩৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওইসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ২টিতে নিয়মিত পরিচালনা কমিটি (এস.এম.সি) ও ১টিতে মামলা রয়েছে। অপর ২’শ ৩০ টিতে নিয়মিত পরিচালনা কমিটি না থাকায় শিক্ষা বিভাগ ও বিদ্যালয়গুলো সমস্যায় পড়ে। এরই মধ্যে বেশকিছু বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে অভিভাবক সদস্যও নির্বাচিত হয়। বিধি ও অফিসিয়াল নীতিমালার কারণে বিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত কমিটি গঠন করা সম্ভব না হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তার দপ্তরের স্মারকে মেয়াদোত্তীর্ন ম্যানেজিং কমিটির দ্বারা স্লিপ, মেরামত ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বিষয়টির সাময়িক সমাধানের লক্ষে চিঠি দেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সর্বশেষ জারিকৃত পরিপত্রের ২.১০ অনুচ্ছেদের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলার ৯টি ক্লাষ্টারের দায়িত্বে থাকা ৭ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে এডহক কমিটির সভাপতি করেন। ৪ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটির অন্যরা হলেন, প্রধান শিক্ষক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও জমিদাতা।
সুত্র জানায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে উপজেলার ২’শ ৩০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে স্লিপের ৪০ হাজার টাকা করে ৯২ লাখ টাকা, মেরামত কাজের জন্য রাজস্ব বিভাগের ১২ লাখ টাকা, পিইডিপি-৩ প্রকল্পের ৮ লাখ টাকা এবং ৩টি স্যানিটারী পায়খানা নির্মানের ৬০ হাজার টাকা মোট ১ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আসে। ওই টাকা নামকাওয়াস্তে ব্যয় করতেই বিদ্যালয়গুলোতে তড়িঘড়ি করে এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে একাধিক সুত্র জানিয়েছে। সুত্র জানায়, স্লিপের টাকাগুলো দিয়ে দায়সারাগোছের কাজ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক নেতা ও বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানায়, শুধু কাগজপত্র ঠিক রেখে স্লিপের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা আরও জানায়, নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যরা প্রায়ই এসে কমিটি গঠন করা নিয়ে ঝামেলা করছে। আমরা খুবই অসহায় অবস্থায় আছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জোবায়দা রওশন জাহান বলেন, আমি জেলা স্যারের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করেছি। ওই কমিটিই বেতনভাত ছাড় করছে। এ কমিটি মাত্র ৬ মাসের জন্য করা হয়েছে। এরপর বিধি অনুযায়ী নিয়মিত কমিটি গঠন করা হবে।
উল্লেখ্য, রংপুরের কোন উপজেলাতেই এডহক কমিটি করা হয়নি বলে জানা গেছে।