উত্তরাঞ্চলে ভেজাল ও নিম্নমানের খেজুরে সয়লাব

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ৬ জুন॥
গত বছরের অবিক্রীত ফরমালিন মেশানো কয়েক কোটি টাকার পুরনো খেজুর চলমান পবিত্র রমজানে বাজারে ছাড়ার অভিযোগ উঠেছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গুদামজাত থাকা এসব খেজুরের চালান এখন কৌশলে বাজারে ছাড়া হয়েছে। যার বড় একটি চালান রংপুর বিভাগের নীলফামারী সহ আট জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে।
সুত্র মতে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভেজালবিরোধী অভিযান কিংবা ক্রেতাদের নজরে না আসে, সেজন্য সদ্য আমদানিকৃত খেজুরের সঙ্গে তা মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। বাজারে সর্বনিম্ন ২০০ টাকা হতে আটশত টাকা পর্যন্ত কেজি দরে খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে!
অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফরমালিন মেশানো পুরনো খেজুর কোল্ড স্টোরেজ থেকে সরবরাহ করার আগে এর কার্টন ও বস্তা পরিবর্তনের পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখও পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে তা গত বছরের অবিক্রীত খেজুর কিনা, তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবে বাজার সংশ্লি¬ষ্টরা বলছেন, সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট এই অপতৎপরতায় জড়িত। এদিকে, চলতি বছর যে খেজুর আমদানি করা হয়েছে, সেগুলো ফরমালিনমুক্ত কিনা, তা নিয়েও বাজার সংশ্লিষ্টদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাদের ভাষ্য, খেজুরে ফরমালিন মিশ্রণের বিষয়টি বছর দুয়েক আগে শনাক্ত হলেও রহস্যজনক কারণে এর আমদানিকৃত চালান দেশে পৌঁছার পরপরই তা পরীক্ষা করা হয়না। ফলে রমজানের ইফতারির গুরুত্বপূর্ণ এই আইটেমটি ফরমালিনমুক্ত কিনা, তা নিয়ে আমদানিকারকরা কখনো মাথা ঘামাননি। তবে তা বাজারজাত করার পর খুচরা বাজারে   ব্যবসায়ীরা এই খেজুর গলাকাটা দামে বিক্রি করছে। কেউ কেউ সুন্দর প্যাকেট করে সেখানে খেজুরের দাম তিনগুন করে দিয়েছে।
খেজুর নিয়ে গড়ে ওঠা দুটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতি বছরই রোজাদারদের জিম্মি করে। দেশের সারা বছরের চাহিদার প্রায় ৪০ হাজার টন খেজুরের মধ্যে শুধু রোজার এক মাসেই বিক্রি হয় দেশেজুড়ে ৩০ হাজার টন।
বাংলাদেশে বেশিরভাগ খেজুর আমদানি হয় ইরাক, ইরান, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব থেকে। আর খোরমা জাতীয় খেজুর আমদানি হয় পাকিস্তান থেকে। এর মধ্যে শুকনা খেজুর কার্টনভর্তি অবস্থায় এবং ভেজা খেজুর বস্তাভর্তি অবস্থায় আমদানি করা হয়। কিন্তু সেগুলো ফরমালিনমুক্ত কিনা, তা কোনো দেশ থেকেই পরীক্ষা করে আমদানি করা হয় না।
উত্তরাঞ্চলের আট জেলায় রমজান মাসে খেজুরের বড় বাজার বলে পরিচিত নীলফামারীর সৈয়দপুর। এ শহরের হাতিখানা এলাকা প্রবেশ পথে রেল লাইন ধারে বিশাল একটি ফল বাজার। এ বাজারের বিছমিল্লাহ ফল ভান্ডার ও বিক্রমপুর ফল ভান্ডার নিয়ন্ত্রন করে গোটা উত্তরাঞ্চল। এগুলো যেনতেন ভাবে তাদের আড়তে  মাটির ওপর রেখে বিক্রি করছে। আর বাহিরের বাজার গুলোতে সরাসরি ট্রাকে এসব সরবরাহ করছেন। ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, জয়পুরহাটসহ গোটা উত্তরের জনপদে প্রায় ৫থেকে ৬লাখ বস্তা ও কার্টুন খেজুর রোজার শুরুতেই সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে। এসবে কোন মেয়াদত্তীর্ন তারিখ নেই। দলা-দলা, চকচকে অনেকটা গুড়ের মিশ্রনযুক্ত।  ভিন্ন নামে এই সব খেজুর বাজার জাত হচ্ছে।
সৈয়দপুর উপজেলার ওয়াকার্স পাটির সাধারন সম্পাদক  রুহুল আলম মাষ্টার বলেন, আমি ফরমালিনে ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে গত ৩১ মে সৈয়দপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলাম। ফরমালিনযুক্ত খেজুর বিক্রিতাদের বিরুদ্ধে অভিযানসহ ভেজাল রোধে মনিটরিং দল গঠনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু এটিকে উপেক্ষিত করা হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5835278590914762984

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item