সৈয়দপুরে শুরুতেই ছক্কা মোখছেদুল মোমিন

বিশেষ প্রতিনিধি ১৬ মে॥
  সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে জেলার সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতিকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোখছেদুল মোমিন বিপুল ভোটের ব্যবধানে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছে। স্থানীয় সরকারের এমন নির্বাচনে জীবনে প্রথম অংশ নিয়ে তিনি শুরুতেই ছক্কা মারলেন। এখানে মোট ৫জন প্রতিদ্বন্দি প্রাথীর মধ্যে মোখছেদুল মোমিন ভোট পান ৩৬  হাজার ৯৮১। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি ধানের শীষের বিএনপি প্রার্থী প্রভাষক শওকত হায়াত শাহ ভোট পেয়েছেন ২০ হাজার ৩৯৮। তৃতীয় স্থানে ছিলেন লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইলিয়াছ চৌধুরী। তার ভোট সংখ্যা ১৮ হাজার ২৩১ । অপর দুই প্রার্থী হলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নূরুল হুদা (হাতপাখা) ভোটপান ৩ হাজার ৩৫৪ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সৈয়দপুর পৌর জামায়াতের আমির আবদুল মুনতাকিম (আনারস) ভোট সংখ্যা ৭হাজার ৬৩৭।
আজ মঙ্গলবার উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহন ও গগনা শেষে সন্ধ্যায় বেসরকারীভাবে উক্ত ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নির্বাচনের রির্টানীং অফিসার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিলহাজ উদ্দিন।
ভোটগ্রহনের সময় প্রভাব বিস্তারের চেস্টা চালাতে গেলে ভ্রাম্যমান টিমের টহলে আটক হয় খলিলুর রহমান (৪৫) নামের এক জামায়াতকর্মী ও বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম(৩৮)। এ ছাড়া সার্বিকভাবে এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে শেষ হয়। শুরুতে ভোটারের সংখ্যা কম দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
সুত্র মতে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে  ৭১টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮১ হাজার ৫০৭ জন। এতে মোট বৈধ ভোট এসে দাঁড়ায় ৮৬  হাজার ৬০১টি। এতে শতকরা ভোট পড়ে ৪৭ দশমিক ৭১ ভাগ। আশ্চর্য্যর বিষয় নির্বাচনে অনেক ভোটারের ভোট প্রদানের সমস্যায় বেশ কিছু ভোট বাতিল হয়ে থাকে। কিন্তু সৈয়দপুরের এই নির্বাচনে ভোটারগন নিখুঁতভাবে ভোট প্রদান করায় কোন ভোটারের ভোট বাতিল হয়নি।
কিন্তু এলাকায় বোরো ধান ও বিভিন্ন রবি ফসলের মৌসুমে কৃষক পরিবার গুলো ফসলের মাঠে ব্যস্ত থাকায় ভোটকেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা কম। তবে বৃদ্ধ ও নারী ভোটাররা বিক্ষিপ্ত ভাবে এসে ভোট প্রদান করছে।
শুরুতেই ছক্কাঃ- জীবনের প্রথম ভোটে অংশ নিয়ে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোখছেদুল মোমিন ছক্কা মারলেন। রেলশ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও সৈয়দপুর রেলকারখানার শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ ছাড়া  তিনি সৈয়দপুর রেলকারখানায় চাকুরী করতেন। চলতি বছরের ১ মার্চ সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাওয়াদুল হক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করলে পদটি শুন্য ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন। মরহুম জাওয়াদুল হক সর্ম্পকে  মোখছেদুল মোমিনের চাচাতো ভাই। উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষনা হলে দলীয় লোকজন মোখছেদুল মোমিনের নাম প্রস্তাব করেন। দলীয়ভাবে আরো দুইজন মনোনয়ন চাওয়ায় স্থানীয়ভাবে দলের সদসদের মধ্যে গোপনে ভোটের আয়োজন করা হলে সেখানেও সংখ্যাগরিষ্টভাবে সমর্থন পেলে তার নাম কেন্দ্রে পাঠায় নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগ। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে রেল বিভাগ হতে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহন করে এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন। গত ২৫ এপ্রিল প্রতিক বরাদ্দের পর প্রচারনার শুরু থেকেই মোখছেদুল মোমিন সাধারন ভোটারদের হৃদ জয় করে ফেলেন। চারিদিকে তার নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
এই নির্বাচনের প্রচারনায় তিনি তার ইশতেহারে ১৪ দফা উন্নয়ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। ইশতেহারের মধ্যে উল্লেখযোড়্য ছিল নারী উন্নয়ণ, নিয়মিত খেলাধুলার ব্যবস্থাকরণ, বাংলাদেশ রেলওয়ে ও সৈয়দপুর পৌরসভার মধ্যে বিরাজমান রেলভূমি সংক্রান্ত বিরোধ নি®পত্তি করে রেলভূমিতে বসবাসরতদের মালিকানা প্রদানে উদ্যোগ গ্রহণ, ড্রেনেজ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এবং ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও কোচস্ট্যান্ডের জন্য আলাদা টার্মিনাল নির্মাণ, আটকে পড়া পাকিস্তানী ঊর্দুভাষীদের ২২টি ক্যা¤পবাসীদের আধুনিক জীবনমান গড়ে তোলার জন্য যুগোপযোগী আবাসন গড়ে তোলা।
এ ব্যাপারে কথা বললে মোখছেদুল মোমিন বলেন, এ বিজয় আমার একার নয়। এ বিজয় দলের ও সৈয়দপুরবাসীর সকলের। সৈয়দপুরের সকল ভোটাররা নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হিসাবে আমাকে যে ভালবাসা দিয়ে বিজয়ের মালা পড়ালেন তার ঋণ শুধাবার নয়। আমি এলাকার উন্নয়নে জনগনকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আর্দশে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলশভাবে উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাবো। 
তিনি অভিযোগ করে বলেন আমার জনপ্রিয়তা ঠেকাতে বিএনপি ও জাপার পক্ষে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হয়। এমনকি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সৈয়দপুরে এনে তাদের প্রার্থীকে বিজয় করতে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু আজ সৈয়দপুরের ভোটাররা সকল অপপ্রচারের জবাব দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে।
এদিকে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহনে চার স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
জেলা পুলিশের ডিআইও ওয়ান আব্দুল মোমিন জানান ৭১টি ভোটকেন্দ্রগুলোর মধ্যে ৫৯টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায়  ভোট কেন্দ্র ও ভোট কেন্দ্রের বাহিরে অস্ত্রধারী ৭১ জন পুলিশ অফিসার, ২৮৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ৮৫২ জন আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দায়িত্ব পালন করে। প্রতি ভোট কেন্দ্রে একজন অফিসারের নেতৃত্বে ৪ জন কনস্টেবল ও ১২ জন আনসার সদস্যসহ মোট ১৭ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেছে। এ ছাড়া একজন পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে ৬ সদস্য করে ১৪টি মোবাইল টীম মাঠে সার্বক্ষনিক টহল ছিল। এর মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১০টি ও পৌর এলাকায় ৪টি মোবাইল টীম দায়িত্ব পালন করছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কয়েকটি টীম নির্বাচনী টহলে থাকে। এছাড়া ২০ জন করে ৪টি স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করে। প্রস্তুত ছিল রিজার্ভ ফোর্স এ ছাড়া তিন প্লাটুন করে র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে। তিনি বলেন সার্বিকভাবে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগনন ও গননার পর ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 9222471569998429769

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item