নীলফামারী জেলার তিনশত মাধ্যমিক স্কুল ও দাখিল মাদ্রাসায় স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,মর্তুজা ইসলাম, মোঃ শামীম হোসেন বাবু-সারা দেশের ন্যায় নীলফামারীর তিনশত মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসায় স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা হতে ছাত্র-ছাত্রীরা স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভোট কেন্দ্রে স্বতর্স্ফুত ভাবে ভোট প্রদান করে। বিরতিহীন ভাবে ভোটগ্রহন চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

এই নির্বাচনে বাস্তবতায় প্রশাসনের পক্ষে কোন প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং বা পোলিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলার কাজে পুলিশ না থাকলেও শিক্ষার্থীরাই এই পদগুলো কাজের ভুমিকা পালন করছে। এছাড়াও যে সকল প্রতিষ্ঠানে স্কাউট সদস্য রয়েছে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র চত্বরে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে একে একে বুথে ঢুকছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। তারা পোলিং এবং সহকারি পোলিং অফিসারের কাছ থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে গোপন কক্ষে যাচ্ছে। সেখানে ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট (সীল) দিচ্ছি। শেষে ভোটগ্রহন (বুথ) কে টেবিলের ওপর রাখা ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার ফেলে বেরিয়ে আসছে। আর পাশে বসে ভোটারদের সনাক্ত করছেন প্রার্থীর এজেন্ট। এ ভোট গ্রহনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু আমাদের দেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচন কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে হচ্ছে। এ নির্বাচন কার্যক্রমে বিদালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। নির্বাচনের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।
এই স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচনে কিশোরীগঞ্জ বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এ নির্বাচনকে ঘিরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা যেমন ছিল তেমনি অনেক অভিভাবকও তাদের আদরের সন্তানদের এ কার্যক্রম দেখতে ছুঁটে আসেন বিদ্যালয় চত্বরে।
প্রধান শিক্ষক গোলাম আযম বলেন, মূলতঃ স্কুল জীবন থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চার অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের নির্দেশেই এই স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। এই বিদ্যালয়ে মোট প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ছিল ২৬ জন । ভোট গগনা শেষে নির্বাচিত হয় ৮ জন। মোট ভোটার এক হাজার ৩৬৫ জন ছিল। নির্বাচনের পরিবেশ ছিল উৎসব মুখর। ভোটের ফলাফলে নির্বাচিত হলোÑ
৪৭৫ ভোট পেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর মৌরী আক্তার, ৭০৭ ভোট পেয়ে ৭ম শ্রেণীর ইবনে সাঈদ অনকুর, ৪৭৮ ভোট পেয়ে ৮ম শ্রেণীর মোতালেব হোসেন, ৫২৬ ভোট পেয়ে ৯ম শ্রেণীর ইসমাত দোহা ও ৪১৭ ভোট পেয়ে দিদার রসুল, ৪৩২ ভোট পেয়ে ১০ম শ্রেণীর মোকারম হোসেন, ভকেশনাল শাখার ৫৫২ ভোট পেয়ে ৯ম শ্রেণীর ফয়সাল হোসেন ফুয়াদ, ৮০৯ ভোট পেয়ে ১০ শ্রেণীর পারভেজ মোশারফ। এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ১০ শ্রেণীর ছাত্র ইফতেখার আহমেদ।

অপর দিকে ডিমলা রাণী বৃন্দারাণী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ওই দৃশ্য চোখে পড়ে। এই বিদ্যালয়ে মোট প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ১১ জন। এখানে মোট ভোটার ৩৪২ জন। নির্বাচনের পরিবেশ ছিল উৎসব মুখর। প্রধান শিক্ষক আব্দুল হানিফ বলেন এই পদক্ষেপটি চমৎকার।

এদিকে জলঢাকা উপজেলার বেশিরভাগ স্কুলে সিলেকসনের মাধ্যমে স্টুডেন্ট কেবিনেট কমিটি গঠন করা হয়। জলঢাকা মাধ্যমিক অফিস সুত্রে মতে, উপজেলার ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৫০টি মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়নি।
শৌলমারী উচ্চ বিদ্যালয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে উপজেলার মিরগঞ্জ হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থী সহ অভিভাবক গন।
তবে জলঢাকা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এর ষ্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন স¤পন্ন হয়।
 প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান জানান নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে দশম শ্রেনীর  রাকিবুল ইসলাম ও  সুচন্দ্রা সরকার, নবম শ্রেনীতে ফজলে রাব্বিলাকী আক্ত ও লাকী  আক্তার,অষ্টম শ্রেনীতে  মুরাদুল ইসলাম ও  উম্মে কুলসুম সপ্তম শ্রেনীতে  রেশমা আক্তার রিমি এবং ষষ্ঠ শ্রেনীতে সাথী আক্তার।

জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফ-উজ-জামান সরকার জানান, কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোট অনুষ্ঠিত হলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান সিলেকসনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নাই তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করবো।

এছাড়া নীলফামারী জেলা সদরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাবেয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নতুন বাজার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, সোনারায় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, জলঢাকা বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চ বিদ্যালয় সহ জেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসায় শান্তিপূর্ণ ভাবে কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের ন্যায় নীলফামারী জেলার তিনশত মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসায় এই নির্বাচন উৎসব মুখোর পরিবেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ন ভাবে সকাল ৯টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে প্রতিটি বিদ্যালয় আটজন করে ছাত্র/ছাত্রী স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়ে কাজ করবে।#


পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 6240356327914884624

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item