উত্তরাঞ্চলে মাঘের শীতের সাঁড়াশী আক্রমন

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৪ জানুয়ারী॥
তিস্তা অববাহিকার পূর্ব খড়িবাড়ি  গ্রামের মাইজালু মিয়া (৭৫)  বললেন মাঘের শীতে বাঘের মতো হামাক (আমাদের) কান্দিবার (কান্না) নাগছে।  কাঁথা কম্বল  কোন কাম করেনা। জারত (শীত) শরীরটা থরথর করি কাঁপে দেছে। রাইতে ঘুমারবার পারিনা। হু-হু করি বাতাস ঢুকি পড়ে ঘরত। 
উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদী ও বক্ষ্মপুত্র নদ বিধৌত নীলফামারী,লালমনিরহাট,কুড়িগ্রাম,গাইবান্ধা জেলা ও তার পাশ্ববর্তী এলাকা সমুহে  শৈত্যপ্রবাহ যেন সাঁড়াশী আক্রমন চালিয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস সুত্র মতে আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারী) দেশের সর্বনি¤œ ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামের রাজাহারহাট ও পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায়। আর নীলফামারীর ডিমলায় ও দিনাজপুরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫,রংপুরে ৬ দশমিক ৬ এবং সৈয়দপুরে ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি সর্ব্বোচ তাপমাত্রাও কমছে। বয়ে যাচ্ছে মাঝারী শৈত্যপ্রবাহ।  সুত্র মতে তাপমাত্রা আরো নিচে নামবে এবং শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।
“পৌষের শীতে মহিষের শিং নড়ে- আর মাঘের শীতে বাঘ কাঁদে” এই পুরনো প্রবাদ এবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে হিমালয় পর্বত সংলগ্ন এই জেলাবাসী। বয়স্কো ও শিশুরা শীতের নিদারুক যেম কস্ট ভোগ করছে তেমনি খেঁটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষজন চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।

এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহের সাঁড়াশী আক্রোমনের সঙ্গে  হাড় কাঁপানো শীত। কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষ, জীবজন্তুসহ পশুপাখি। প্রচন্ড শীতে এলাকায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন প্রকার রোগ-ব্যাধী। হাসপাতাল গুলোতে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে।

শীতের দাপটে জেলা ও উপজেলা গুলোতে এখন দেদারছে বিক্রি হচ্ছে মাফলার  মাঙ্কিক্যাপ, কানঢাকার উপকরন । এমন শীতে তাই ঘরে ঘরে সর্দি কাশি আর জ্বর,গলা ব্যাথা শুরু হয়েছে। আছে নিউমনিয়া ,শ্বাসকষ্ট।
শহরের বাসাবাড়ির মানুষজন মন্তব্য করে বলেছে শীতের দাপট হার মেনেছে ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজের শীতল ভাবটি।

 তিস্তা পারের চর ও বাঁধে আশ্রিত মানুষ শীতের কারনে  কাজের অন্বেষণে বের হতে পারছেনা। উজানের পানি প্রবাহ শুন্যের কোঠায় চলে আসায় তিস্ত নদী শুকিয়ে এখন বালু চরে পরিনত হয়েছে। তিস্তা পাড়ের পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই,খগাখড়িবাড়ি,গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি,খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী, কৈমারী  ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা বলছেন ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার  চরের প্রায় এক লাখ মানুষ তীব্র শীতে কাতর। শীতে এখানকার হতদরিদ্র ও নিঃস্ব গরিব মানুষের দুর্দশা আরও বেড়ে গেছে। খালিশাচাঁপানীর সোহরাব আলীর (৭০) বললেন আমরা গরিব মানুষ শীতের কাপড় না থাকায় আগুন তাপিয়ে শীত দূর করছি। একই গ্রামের ইব্রাহীমের স্ত্রী সকিনা বেগম (৭০) জানায় শীতে আমাগো অবস্থা কাহিল। সানোয়ারের স্ত্রী জরিনা বেগম (৭৫) বলেন আমরা পাথর ভাংগী ভাত খাই। যে শীত পরিছে কামত যাবার পারি না।  পুর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন তিস্তাপাড়ের মানুষজন শীতে বড়ই করুন। এবার তিস্তার বন্যায় এই সব মানুষ গুলো ব্যাপক ক্ষতিসাধিক হয়। ফলে তারা বন্যার পর এবার শীতে কবলে পড়ে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 8227073797514405905

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item