সবজিতে ভরা হাট- বাজার। তারপরেও সবজির গায়ে আগুন

মামুনুর রশিদ মেরাজুল পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকেঃ
শীতের মৌসুমে সবজিতে  ভরা হাট- বাজার। তারপরেও বাজারে সবজির গায়ে আগুন। দাম শুনে ক্রেতাদের চোখ ছানাবড়া। রংপুর মহানগরীসহ জেলার পীরগঞ্জ খালাশপীর, মিঠাপুকুর,শঠিবাড়ী, সদরের পালিচড়া,খোড়াগাছ,শ্যামপুরওপীরগাছার সবজির বাজারে সবজির কমতি নেই। দোকানে থরে থরে সাজানো নানা পদের সবজি। কিন্তু উৎপাদন অনুযায়ী দাম যেখানে কমার কথা সেখানেই বাড়ছে সবজির দাম। কারণ সবজির বাজারে সিন্ডিকেটের থাবা। কৃষকদের জমি থেকে সবজি উঠনোর পরেই বাজারে ঢুকতেই কয়েক হাত বদল হয়ে সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে কয়েক গুণ। সংশ্লিষ্টরা বারবার বাজার মনিটরিং করার কথা বললেও বাস্তবে  তা হচ্ছে না ফলে শীতকালের সবজি চড়া দামেই কিনছে ক্রেতারা।
শুক্রবার সকালে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাটে কথা হয় যাদবপুরের কুষক হুমায়ন কবিরের সাথে। তিনি জানান, বিক্রির জন্য ২০ মন বেগুন নিয়ে আসেন। প্রতি মণ হাইব্রীড কিং বেগুন ৬০০ টাকা,সিংনাথ বেগুন ৪৮০ টাকা ও সলেয়া বেগুন ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি বেগুন ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন।  অথচ মাত্র দুই হাত ঘুরেই সেই বেগুন ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০টাকায়  টাকায়। মাঝের দুই হাতেই বেড়ে যাচ্ছে সবজির দাম। এই দুই হাত হচ্ছে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ী। মাত্রই ১৫ টাকার বেগুনের দাম হয়ে যাচ্ছে ২৫-৩০ টাকা। অর্থাৎ এক হাতেই বেড়ে গেল কেজিতে ১০-১৫ টাকা। কেবল বেগুন নয়, শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা,পটল,লাউ,ধনেপাতা,টমেটো,নতুন আলু থেকে শুরু করে গাজর,বরবটিসহ প্রতিটি সবজির দাম এখন উৎপাদন মূল্যের চেয়ে ভোক্তা মূল্যের ব্যবধান হয়ে যাচ্ছে দিগুন গুণ। কৃষকও যেমন ভালো দামটি পাচ্ছে না, তেমনি ভোক্তাও কম দামে সবজি কিনতে পারছেন না। মাঝ থেকে প্রচুর মুনাফা তুলে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ওই সিন্ডিকেট।

জায়গীরহাটে কথা হয় অভিরাম নুরপুরের খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান মন্ডল ও পীরগাছার পারুল দেউতির ফুলমিয়ার সাথে তারা জানান, তিনি ১৫ টাকা দরে কিনেছেন। আর বিক্রি করছেন ২৫-৩০ টাকায়। ১৫ টাকায় আপনারা কিনেছেন বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করলেন। তবে দোকানভাড়া থেকে শুরু করে সব রকম খরচ রয়েছে ৫  টাকার মতো, আর কেজিতে  টাকা লাভ রেখে আমরা বিক্রি করছি।
ঠিক একই রকম কথা বললেন রানীপকুর দৌলত রসুলপুরের রেজওয়ান আলী তিনিও তাঁর সঠিক ক্রয়মূল্য গোপন করে বললেন, তিনি প্রতি কেজি বেগুন পাইকারদের কাছে থেকে কিনেছেন ১৫ টাকায়, আর বিক্রি করছেন ২৫-৩০ টাকায়। আসলে সত্যটা গোপন করে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে তুলে নিচ্ছেন অতিরিক্ত মুনাফা। আর ঠকতে হচ্ছে সবজির উৎপাদক তথা কৃষক আর ভোক্তাকে।ভরা মৌসুমে কম দামে সবজি কেনার আশা থাকলেও তা পেয়ে হতাশ ক্রেতারা। ক্রেতারা ওই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি।

রংপুর সিটি বাজারের সবজি ক্রেতা আশরাফুল আলম,মনিরুল ইসলাম মিন্টু, হারুনুর রশিদ বাদশাসহ কযেকজন জানান, ‘বাজারের কোনো দোকানেই কিন্তু সবজির কোনো কমতি নেই। তাহলে দাম কেন এত চড়া হবে। এখন সবজির ভরা মৌসুম। ১০ থেকে ১৫ টাকার ওপরে কোনো সবজির দাম হওয়া এখন কাম্য নয়। কিন্তু ২৫ থেকে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। এতে হতাশ হলেও আমাদের কিনতে হচ্ছে। কারণ সংসারে তো প্রতিদিনই দরকার পড়ে এসব সবজি। না কিনে তো আর আমাদের উপায় নেই।’

রংপুর সিটি বাজার, কামাল কাছনা, মহিগঞ্জ, ধাপ বাজার, মর্ডাণ মোড় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা দরে এবং টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি শিম প্রকার ভেদে ২৮ থেকে ৪০, করলা ৩০,শসা ৪০, মুলা ১৫, বরবটি ২০-২৫, পটোল ১৫ থেকে ২০, পুরনো আলু ২৫-৩০, নতুন আলু ৪০ থেকে ৫০  এবং পেঁপে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ২০-২৫, বাঁধাকপি ১৫-২০, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবু হালিপ্রতি ২০, আঁটিপ্রতি পালংশাক ১০, লালশাক ১০, পুঁইশাক ১০/১২, নাপা শাক ১০,মুলা শাক ৫/৬ ও লাউশাক ৮/১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।মানভেদে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩২-৪০, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫, দেশি আদা ১৮০, দেশি রসুন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 4701467814239185444

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item