জামিন পেল নীলফামারীর ডোমারের সেই মেয়েটি
https://www.obolokon24.com/2016/11/domar21_21.html
বিশেষ প্রতিবেদক ২০ নভেম্বর॥
অবশেষে জামিন পেলেন নীলফামারীর ডোমার পুলিশের জেলে পাঠানো সেই তরুণী। আজ রবিবার বিকেলে জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার থেকে বেড়িয়ে পরিবারের অভিভাবকদের সঙ্গে নিজ বাড়িতে যান তিনি।
প্রেমিকা জোবায়দা আবেদীন জুঁই নীলফামারীর ডোমার উপজেলার পাঙ্গামটকপুর ইউনিয়নের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে ও নীলফামারী সরকারী কলেজের অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। প্রেমিকটি হলো একই উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়াডের ইউপি সদস্য তিতাস রহমান বাবুর(২৫)।
জুঁইয়ের পক্ষের নীলফামারী জজ আদালতের আইনজীবী আনিসুজ্জামান রাজু জানান, আজ রবিবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ডোমার আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই তরুণীর জামিন আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক সামিউল ইসলাম তার জামিন মঞ্জুর করলে বিকাল ৫টার দিকে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে যান ওই তরুণী।
তিনি জানান, গৃহে অনধিকার প্রবেশ ও আত্মহত্যার হুমকির অভিযোগে নীলফামারীর ডোমার থানা পুলিশ ওই তরুণীকে গত বৃহস্পতিবার(১৭ নভেম্বর) রাতে আটক করেছিল। এরপর শুক্রবার(১৮ নভেম্বর) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। মেয়েটির অভিযোগ ছিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে নীলফামারীল ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক তিতাস রহমান বাবু(২৫)। এরপর ইউপি সদস্য তিতাস অন্য মেয়েকে বিয়ের প্রস্তুতি নিলে ওই তরুণী বিয়ের দাবিতে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) রাতে তিতাস রহমানের মৌজা বামুনিয়ার বাড়িতে অবস্থান নেয়।
ওই তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, সেখানে অবস্থানের পর থেকে ইউপি সদস্য তিতাস রহমানের বাবা মশিয়ার রহমান ঘটনাটি বিয়ের সমাধানের কথা জানিয়ে কালক্ষেপন করে। অপর দিকে গৃহে অনধিকার প্রবেশ ও আতœহত্যার হুমকির অভিযোগ এনে তিতাসের বাবা মশিয়ার রহমান বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর)
ডোমার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায়, বামুনিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তিতাস রহমানকে বিয়ে করার দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান নেয় পাঙ্গামটুকপুর ইউনিয়নের মৌজাপাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে নীলফামারী সরকারী কলেজের ইসলামের ইতিহাসের ¯œাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ।
এসময় ছাত্রীটি এলাকাবাসী এবং সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগে তিতাস রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনের মাধ্যমে আমার পরিচয় হয়, তারই সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই সম্পর্কের জের ধরে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন ইউপি সদস্য তিতাস। এখন বিয়ের কথা বললে টালবাহানা করতে থাকেন। লোকমুখে জানতে পারি তার বিয়ের জন্য গত বুধবার তাকে দেখতে আসবেন মেয়ে পক্ষের লোকজন। এরপর তার সঙ্গে বার বার মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হয়ে আমি তার বাড়িতে অবস্থান নেই। কিন্তু আমাকে দেখে তিতাস রহমান তার বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।’ ইউপি সদস্য তিতাস রহমান বামুনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক বলেও জানান তিনি।
ইউপি সদস্য তিতাস রহমান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। আমার এবং আমার বাবার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য আমাদের প্রতিপক্ষের লোকজন ষড়যন্ত্র করে মেয়েটিকে আমাদের বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না, সে এর কোনো প্রমানও দেখাতে পারেনি। মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য তার সঙ্গে বিষের বোতল এবং ব্লেড নিয়ে এসেছিল।
তিন দিন জেলা কারাগারে হাজতবাসের পর আজ রবিবার জামিনের আবেদনে আদালত হতে জামিন পায় জুঁই। উল্লেখ যে এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট গত ১৮ নভেম্বর অবলোকনে প্রকাশিত হয়েছিল।