রংপুরে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির খুঁটিগুলোও নিশ্চিন্থ হয়ে গেছে

রংপুর অফিস :

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রংপুর উন্নয়নের দিকে ধাবিত হলেও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। ডিজিটালাইজট ক্ষেত্রে রাজধানীসহ দেশের অন্য বিভাগীয় শহরগুলো এগুলেও রংপুর পিছিয়ে রয়েছে। রংপুর নগরীর প্রধান সমস্যা যানজট। আর যানজট নিরসনে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির সংযোজন হওয়ার কথা। ২যুগ আগেও এ শহরে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি লাগানো হয়েছিল কয়েকটি মোড়ে। কিন্তু কালের বিবর্তনে খুঁটিগুলো পর্যন্ত নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। সিগন্যাল বাতির পরিবর্তে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা মান্ধাত্তা আমলের পদ্ধতিই অনুসরন করে যানজট নিরসের চেষ্টা করছেন। যানজটের সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য নগরবাসী রসিক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার শাসনামলে রংপুরকে দেশের সপ্তম বিভাগ ঘোষনা করে প্রশাসনিক ক্ষমতা বিকেন্দ্রীয়করণের মাধ্যমে জনসাধারণের মৌলিক অধিকার আরও সহজলভ্য করা হয়েছে। এরফলে গোটা বিভাগের হেডকোয়ার্টার রংপুরে প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তর ইতোমধ্যেই কার্যক্রম চলমান রেখেছে। সরকারি-বেসরকারি, আধা সরকারি, শায়তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জনবলের সংখ্যাও ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রংপুর নগরীতে মানুষের আনাগোনাও আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাথে সাথে বাড়ছে ভারী যানবাহনের পদচারনা। সবসময়ই নগরের প্রধান সড়কসহ জনগুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্পর্টে যানজটের প্রকট আকার ধারণ করে। ট্রাফিক পুলিশের সার্বক্ষনিক নজরদারির কারণে অনেকটাই কমে এসেছে রংপুর নগরীর ব্যস্ততম প্রধান সড়ক ও বাণিজ্যিক এলাকা সুপার মাকেট, সিটি বাজারের যানজট। এই এলাকা দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করে ৮ হাজার’ অটোরিক্সাসহ অন্তত কয়েক শতাধিক ছোট-বড় গাড়ি। শাপলা চত্তর থেকে সিটি বাজার ঘেঁষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন স্পর্ট মিনি সুপার মাকেট, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মার্কেট, মিনি মার্কেট হয়ে মেডিকেল মোড় সড়কটিই জনগুরুত্বপূর্ণ প্রধানসড়ক এটি। মাত্র ৪/৫দিন আগেও সড়কের দু”ধারে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভালো করে নিশ্বাসও নিতে পারতো না নগরবাসী। পিকআপ, মাইক্রোবাস, কার ব্যাটারী চাীলত অটো এবং অটো রিক্সা অতিমাত্রায় এলোপাতারি পার্কিং, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা করায় নানা রকম সমস্যার কবলে পড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষ। এছাড়াও সুরভী উদ্যানের সামনের অবৈধ পুরাতন কাপড়ের দোকান পাঠ উচ্ছেদে সিটি মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু’র অবদান অস্বীকার্য়। জনদুর্ভোগের কথা ভেবে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু নগরবাসীর সাচ্ছন্ন আর ভোগান্তি দুরিকরণে নানান পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সদ্য যোগদানকারি পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের দিক নির্দেশনায় এবার ট্রাফিক পুলিশের যানজট নিরসনে অতিতের সকল রেকর্ড ডিঙ্গিয়ে ফুটপাতের হকার, অবৈধ দোকানপাট, স্থাপনা উচ্ছেদে ইতোমধ্যে অভুতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।
ট্রাফিক অফিস সুত্র জানায়, বর্তমানে রয়েছে ২জন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, ১জন মহিলাসহ সার্জেন্ট রয়েছে ৬জন, টিএসআই ৩জন, এটিএসআই ৬জন এবং ৪০জন কনস্টেবল রয়েছে। কিন্তু রংপুর নগরীর যানজট নিরসন ও সঠিকভাবে যানবাহন চলাচলের নিয়ন্ত্রন কার্যক্রমের প্রসার ঘটাতে প্রায় আরো ১০জন ট্রাফিক কনস্টেবলের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে যানজটের নাকাল থেকে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ অনেকাংশে হ্রাস পাবে। যে পরিমাণের জনবল আছে তার থেকে প্রতিদিনই অসুস্থতা, নিজেদের ছুটি, বিভিন্ন প্রয়োজনে ৪/৫জন ছুটিতে যান। তার উপর অনেক সময় নির্ধারিত সময়মতো ৪/৫ স্যারদের ডিউটিতে যান। বাকিদের দিয়েই পুরোনগরসহ অন্যান্য থানাগুলোকে কভার করতে হয় বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। অপরদিকে, প্রতিদিনই যেহারে রংপুর নগরীতে জনসমাগম বাড়ছে, পাশাপাশি বাড়ছে রকমারি যানবাহন। ফলে নগরীর যানজটমুক্ত করে তুলতে এ বিভাগে প্রায় শতাধিক ট্রাফিক কনস্টেবল এবং অন্তত ৮/১০জন সার্জেন্টের প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করছেন। গত ২০বছরে বিভিন্ন সময় প্রধান সড়ক সংস্কার, মেরামত, সড়ক সম্প্রসারণের কারণে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতিগুলোর খঁটিগুলোও লাপাত্তা হয়ে গেছে। যার কোন চিন্থও নেই বাতির স্থানগুলো। কালের বিবর্তণে সেস্থানগুলো এখন রাস্তায় পরিণত হয়েছে। যার কারনে ২০/২৫বছর আগে রংপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র জাহাজ কোম্পানী মোড়, সুপার মার্কেট, বেতপট্টি’র মোড়, কাচারী বাজার মোড়সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির ব্যবস্থা ছিল। সেগুলো কালের বিবর্তণে অকেজো হয়ে গেছে। ট্রাফিক সিগন্যাল বাতিগুলো স্বচল কিংবা নতুন প্রযুক্তির সিগন্যাল বাতির সংযোজন করলে সেগুলো চালুর মাধ্যমে যানবাহনের গতিরোধ করা কিছুটা সহায়ক হতো ট্রাফিক পুলিশের। সিগন্যাল বাতির পরিবর্তে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা মান্ধাত্তা আমলের পদ্ধতিই অনুসরন করে যানজট নিরসের চেষ্টা করছেন। 
জনবল সঙ্কট নিয়ে নগরীর প্রধান সড়কে যানজট নিরসন করার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। গোটা নগরের কিছু কিছু জনগুরুত্ববপূর্ণ বাজার আর স্পর্টগুলো ট্রাফিক ব্যবস্থা তুলনামুলকভাবে অপ্রতুল। এদিকে, নগরীর কেন্দ্রী বাস টার্মিনাল মৎস্য আড়ৎ, মাহিগঞ্জ বাজার, সাতমাথা, শাপলা চত্তর, মর্ডাণ মোড়সহ কয়েকটি স্পটে প্রায়ই সময় ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় প্রকট আকারে যানজটের মুখে পড়ে যানবাহনসহ মানুষজন। কাধে কাধ মিলিয়ে এগিয়ে এসেছে প্রতিদিনই কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সকাল থেকে সারাদিন-ই নগরীর প্রধান সড়কে ২/১জন করে পোষাকধারী ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বিরামহীন শ্রমের মাধ্যমে যানজট নিরসনে কাজ করে আসছে। আর এতে করে মোটামুটি অনেকটাই যানজট কমে গেছে এটা বর্তমান সময়ে প্রত্যক্ষ করছে সকলেই।
এদিকে, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসএম গোলাম কিবরিয়া’র নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান পরিচালনার পূর্বে ৩তিনদিন সকাল ১০টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাইকিং করে রংপুর ট্রাফিক বিভাগ। যার ফলশ্রুতিতে ডিসি অফিসের সামন থেকে সড়কের দু’ধারের ছোট-ছোট চা, পান দোকান, অবৈধ পার্কিং, অবৈধ স্থাপনা ও ফুটপাত উচ্ছেদে সফলতার মুখ দেখছেন ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এতে করে নগরীর প্রধান সড়কে অতিরিক্ত গাড়ির সংখ্যা কমার পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো অনেকাংশে কমে এসেছে। এছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই নগরীর কোনো কোনো স্থানে অটোরিক্সা ড্রাইভারদের সাথে ঘটে চলেছে অপ্রীতিকর ঘটনা। যানজট প্রধান সমস্যা, উত্তরণের জন্য নগরবাসী রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে রংপুর ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মোঃ ওয়াজনবী জানিয়েছেন, আমরা শহরের যানজট নিরসনে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা আর পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জনবল সঙ্কটকেই দায়ি করলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর। পর্যাপ্ত জনবল থাকলে যানজট নিরসনে তেমন কোন ভোগান্তি পোহাতে হবে না মানুষজনকে এমন মন্তব্য দৃঢ়তার সাথে প্রকাশ করলেন। সিগন্যাল বাতি থাকলে সহজ হতো। ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির ব্যবস্থ সাধারণতঃ সিটি কর্পোরেশন করার কথা। সিটি কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়।
তিনি আরো বলেন, অটোরিক্সা সমিতিসহ সর্বমহলের সহযোগিতা আমাদের কাজে আরো অপ্রাণিত করবে। এরজন্য প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে একা কাজ করা অত্যন্ত দূরহ, তাই সকলের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা কাজ করে যেতে চাই। ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বলেন, গাড়ি সকলের চালানোর অধিকার রয়েছে। তাই যত্রতত্র পার্কিং ও  কমানোর লক্ষ্যে রাস্তার ধারে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকসাসহ অন্যান্য যানবাহন না রাখার আহবান জানান।
এব্যাপারে রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের (কর্পোরেট) মোবাইল ফোনে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
এব্যাপারে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেন, ট্রাফিক সিগল্যান বাতিগুলো লাগানো ছিল। এখন নেই, বিষয়টি এসপি সাহেবের কাছে জেনে নিন কেনো জ্বলে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 8119290485815853063

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item