বেরোবিতে নিখোঁজ ২ ছাত্র ;একজন জাপানি নাগরিক হত্যার আসামি জেএমবি সদস্য

তপনকুমাররায়, রংপুর:
রংপুর বেগম রোকেয়াবিশ্ববিদ্যালয়ের দুইশিক্ষার্থী দীর্ঘদিনধরেনিখোঁজরয়েছে। তাদের সম্পর্কে পরিবারের লোকজনও কোন খবর জানেনা। তবেঅনুসন্ধানে বেরিয়েএসেছে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর একজন আহসান উল্লাহ আনছারী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সুইসাইড স্কোয়াডেরসদস্য। সে রংপুরে জাপানি নাগরিক হোচি কোনিও, কাউনিয়ায়মাজারেরখাদেম ও আওয়ামীলীগ নেতা রহমত আলী হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। এই শিক্ষার্থী ২০১৫ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। অন্য যে শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে তার নাম আবদুল্লা আলমামুন। সে চলতিবছরের ১০ এপ্রিল থেকে নিখোঁজরয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিখোঁজ আহসান উল্লাহ আনছারী ওরফে বিপ্লব রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হয় সে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ফোরকারহাট গ্রামের আবদুল হাসিব আনছারীর ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর কিছুদিন ক্লাস করার পর সে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিল। এক বছর পর ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে সে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পুনরায় ভর্তি হয় এবং ১ম বর্ষের ২য় সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নেয়।সর্বশেষ সে গত বছর ২০১৫ সালের ১৬ অক্টোবর পরিসংখ্যান বিভাগের ভাইবা বোর্ডে উপস্থিত হয়েছিল। এরপর থেকে তার আর কোন খবর পাওয়া যায়নি। এমনকি চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি পরবর্তী সেমিস্টাওে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও সে আর আসেনি। মূলত গত বছরের ১৬ অক্টোবর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে বলে প্রক্টও অফিসের সেকশন অফিসার শহীদ আলমামুন জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তার বড় ভাই হাবিবুল্লা আনছারীর সঙ্গে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে তিনিও তার ভাই নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন।তবে তিনি জানান, তার ভাই ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে নিখোজ রয়েছে।
এদিকে  গত বছর ২০১৫ সালের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে রংপুরে এক জাপানি নাগরিক ও মাজারের খাদেম হত্যা ও বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা রুহুল আমিনকে গুলি কওে হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারী গ্রামে নিজের ঘাসের খামার দেখতে গেলে জাপানি নাগরিক হোচি কোনিওকে গুলি কওে হত্যাকরে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও গত বছরের ১০ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর গ্রামে বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে স্থানীয় পীরের মাজারের খাদেম ও আওয়ামীলীগ নেতা রহমত আলীকে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যাকরে দুর্বৃত্তরা।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি জুলাই মাসেই পুলিশ জাপানি নাগরিক হোচি কোনিও হত্যাসহ ৩ ঘটনায় জেএমবিকে অভিযুক্ত কওে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

এরমধ্যে জাপানি নাগরিক ও মাজারের খাদেম হত্যার ঘটনায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ আনছারীর নামে চার্জশিট প্রদান করে পুলিশ। রংপুরের সরকারি আইন কর্মকর্তা আবদুল মালেক অ্যাডভোকেট জানান, ওই দুটি মামলায় আনছারী সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। তবে সে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা তা তিনি জানেননা বলে জানান।
অন্যদিকে  আবদুল্লাহ আল মামুন নামে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী প্রায়সাড়ে ৩ মাস ধওে নিখোঁজ রয়েছে। সে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষেও শিক্ষার্থী ছিল। তার বাড়ি রাজবাড়ি জেলার পাংশা এলাকায়, তার বাবার নাম জহরত আলী মোল্লা। মামুন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিল। অল্প কিছুদিন ক্লাস করার পর সে নিখোঁজ রয়েছে। সে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সর্দ্দার পাড়া মোসলেমউদ্দিন ছাত্রাবাসে থাকতো। চলতিবছরের ১০ এপ্রিল রাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে জঙ্গি সন্দেহে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থী সম্পর্কে তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা সেভাবে তাদের চেনেনা। কারণ তারা ঠিকমতো ক্লাস করেনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টও শাহীনুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুই শিক্ষার্থী মামুন ও আহসান উল্লাহ আনছারী নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বীকার কওে বলেন, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
কাউনিয়া থানার ওসি জাপানি নাগরিক হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুল কাদের জিলানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আহসান উল্লাহ আনছারী নামে এক জঙ্গির নামে দুই মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তবে সে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা তা তিনি জানেননা বলে জানান। তবে তাকে গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 5000320337750196177

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item