ইবি প্রো-ভিসি’র পিএইচডি ডিগ্রি ভূয়া

হুমায়ুন কবীর জীবন,ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের পিএইচ.ডি ডিগ্রি ভূয়া বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে অবস্থিত সাংবাদিকদের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এমন অভিযোগ করেন শিক্ষক নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা প্রো-ভিসির  প্রশ্নবিদ্ধ পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ইউজিসির কাছে অনতিবিলম্বে কার্যকর তদন্ত দাবি করেন।

সোমবার প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিনের সভাপতিত্বে ও  নবগঠিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মিজানুর রহমানের উপস্থাপনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসকর্নারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী, প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিন, প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান, প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন প্রমূখ। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা প্রো-ভিসির বিরুদ্ধে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগ প্রাপ্ত ভিসি প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ.ডি ডিগ্রীর রেজিস্ট্রেশনের ভূয়া কাগজ দাখিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি লঙ্ঘন করে কোন সুপারভাইজার ছাড়াই নিজের পিএইচডি ডিগ্রী হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন। তাছাড়া ২০০২ সালের ২৪ জুলাই প্রো-ভিসিকে পিএইচ.ডি কোর্সে রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করা হয়। পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জনে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগার কথা থাকলেও প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. শাহিনুর রহমান মাত্র পাঁচ মাস সাত দিনে এই ডিগ্রি অর্জন করেছেন। শিক্ষকরা জানান, তিনি ২০০২ সালের ২৪ জুলাই রেজিষ্ট্রেশন পেলেও পিএইচ.ডি কোর্সে যোগদান করেন একই বছরের ১১ জুলাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরাবর প্রো-ভিসির লেখা একটি আবেদনপত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়। রেজিষ্ট্রেশন পাবার আগেই তিনি কিভাবে ১৩ দিন পূর্বে পিএইচডি কোর্সে যোগদান করলেন তা নিয়ে শিক্ষকরা প্রশ্ন তোলেন। ২০০২ সালের ৩ জুলাই প্রো-ভিসি থিসিস জমা দেবার জন্য আবেদন করেন। রেজিষ্ট্রেশনের ২১ দিন আগে তিনি কিভাবে থিসিস জমা দানের জন্য আবেদন করেন সে বিষয়টি নিয়েও শিক্ষক নেতারা প্রশ্ন তোলেন। লিখিত বক্তব্যে শিক্ষকরা আরো জানান, ড. শাহিনুর রহমান ব্লুমিংটনের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটিতে পিএইচ.ডি গবেষক হিসেবে ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট রেজিষ্ট্রার্ড হন। তিনি একটি আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন, ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির নীতিমালা অনুযায়ী তিনি ৬০ ক্রেডিট কোর্সের মধ্যে ৪০ ক্রেডিট কোর্স সম্পন্ন করেছেন। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সহকারী রেজিষ্ট্রার মাইক জাকালি কর্তৃক প্রেরিত একটি ই-মেইল থেকে জানা যায়, ড. শাহিনুর রহমান পিএইচ.ডি’র অনুকূলে মাত্র এক টার্ম সম্পন্ন করেছেন যা সর্বোচ্চ ১৯ ক্রেডিট অর্জন হিসেবে গন্য হতে পারে। অথচ তিনি আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন, ৪০ ক্রেডিট কোর্স সম্পন্ন করেছেন যা মিথ্যা বলে আখ্যা দেন শিক্ষরা। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সটির নীতিমালা অনুযায়ী ৯০ ক্রেডিট কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালায় পিএইচ.ডি ডিগ্রির জন্য দুইটি সেমিনার করার নিয়ম থাকলেও প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. শাহিনুর রহমান একটি সেমিনারও করেননি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা ।
এসময় তারা বলেন, প্রো-ভিসির বিরুদ্ধে এতসব অসঙ্গতি থাকা সত্বেও তিনি কিভাবে পিএইচ.ডি ডিগ্রির অনুমোদন পেলেন। তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান শুধু কাগজে ব্যবহার মাত্র? নাকি জামায়াতপন্থী ভিসির সঙ্গে তার অন্য কোন রসায়ন ছিল? উপযুক্ত পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবি প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের পিএইচ.ডি ডিগ্রি যা আদ্যোপান্ত অসততা,অনিয়ম, মিথ্যা তথ্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-পরিপন্থী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এসময় শিক্ষক নেতারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে যথাযথ তদন্তপূর্বক পিএইচ.ডি ডিগ্রি বাতিলের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রনালয়, ইউজিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 3248613119457362517

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item