নীলফামারীতে দুইটি বাল্য বিয়ের চেস্টা॥ ৪ জনের জেল ও পুরোহিত সহ তিনজনের জরিমানা

 ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী ৪ মার্চ॥
পৃথক দুইটি বাল্য বিয়ের আয়োজনে বর সহ ৪ জনের ২৫ দিন করে বিনাসশ্রম কারাদন্ড ও সনাতন ধর্মাবলম্বী কনের বাবা ও পুরোহিত সহ তিনজনের ৫শত  করে দেড় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনা দুটি ঘটে নীলফামারী জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া ও লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের দুবাছড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। আজ শুক্রবার সকালে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক নীলফামারী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেত আলী পৃথকভাবে উক্ত দুইটি ঘটনার  রায় প্রদান করে।
ঘটনার বিবরনের জানা যায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বাল্য বিয়ে মুক্ত এলাকা লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া দুবাছড়ি গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে দুলাল হোসেনের (১৬) বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। কনের বাড়িতে বরযাত্রী রওনার প্রাক্কালে বাল্য বিয়ে বন্ধের জন্য  বরের বাড়ি যায় ইউনিয়নের ভিডিপি কমান্ডার সহ গ্রাম পুলিশ। এ সময় বর দুলাল সহ বাড়ির লোকজন  ভিডিডি কমান্ডার মোখছেদ আলী  কে লাঞ্চিত করে তার পড়নের কাপড় ছিড়ে ফেলে। এ খবর পেয়ে নীলফামারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং বর দুলাল মিয়া, বরের বাবা লেবু মিয়া(৩৮) বরের চাচা জমির উদ্দিন(৪০) ও ইউনুছ আলী(৩৫) সহ ৪জনকে আটক করে নিয়ে আসে। রাত আড়াইটায় তাদের সকলকে ১৮৭ ধারায় ২৫ দিন করে বিনাসশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমান আদালত।
অপর দিকে নীলফামারী জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের মাঝাপাড়ায় বৃহস্পতিবার রাতে সনাতন ধর্মাবলম্বী যতীন্দ্র নাথ রায়ের পনেরো বছরের মেয়ে জবা রানী রায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পুলিশ সহ হাজির হয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধ করে। এ সময় কনের বাবা যতীন্দ্র নাথ (৫৫) কনের চাচা করুনা কান্ত রায়(৪৫) ও পুরোহিত রবীন্দ্র নাথ রায়কে (৬০) আটক করে নিয়ে আসে। শুক্রবার সকালে তাদের ৫ শত টাকা করে মোট দেড় হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং বাল্য বিয়ে না দেয়ার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
 নীলফামারী সদর থানার ওসি শাহজাহান পাশা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ২৫ দিন করে বিনাসশ্র সাজাপ্রাপ্তদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ যে নীলফামারী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেত আলীর উদ্যোগে   নীলফামারী জেলা সদরের ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকাকে বাল্য বিয়ে,যৌতুক ও মাদকমুক্ত ঘোষনার প্রক্রিয়া চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ২রা ফেব্রুয়ারী লক্ষ্মীচাপ ও পলাশবাড়ি ইউনিয়নকে বাল্য বিয়ে,যৌতুক ও মাদকমুক্ত ঘোষনা করা হয়। এ ছাড়া বাকী ১৩ ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকাকে একইভাবে ধাপে ধাপে মুক্ত ঘোষনার কার্যক্রম চলছে। এরম্যধ্য চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারী চওড়াবড়গাছা, ২৯ ফেব্রুয়ারী গোড়গ্রাম, ১ মার্চ পঞ্চপুকুর ও ৩ মার্চ ইটাখোলা ইউনিয়নকে বাল্য বিয়ে,যৌতুক ও মাদকমুক্ত ঘোষনা করা হয়। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে বাকী সব ইউনিয়ন কে এর আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সচেতন মহল অভিযোগ করে বলছে একটি সুবিধাবাদী মহল নীলফামারী সদর উপজেলাকে বাল্য বিয়ে,যৌতুক ও মাদকমুক্ত ঘোষনা বিরুদ্ধে যেন মাঠে নেমে ভাল একটি উদ্যোগকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা করছে। তাই এসব সুবিধাবাদী মহলকে চিহিৃত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি করা হয়।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6557416614610110906

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item