ভালোবাসা কারে কয় সব স্বামী কি এমন হয়?

মোঃ জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি ঃ
তোমরা যে বল দিবস ও রজনী, ভালোবাসা-ভালোবাসা। সখি ভালোবাসা কারে কয়? কবি সাহিত্যিকদের কলমে ভেসে উঠা ভালোবাসার বাস্তব চিত্রটাই যেন হার মানানোর মতো। এ ভালোবাসা শুধু চোখের বা পাওয়ার জন্যই নয়। ভালোবেসে বিয়ে, এরপর ৩০টা বছর থেকে যে ভালোবাসার মূল্যায়ন তা এ যুগে অনেকটা বিরল। লাইলী মজনু, রোমিও-জুলিয়েট, অথবা শিরিন ফরহাদও ভালোবেসে ছিলেন।
তাদের ভালোবাসাটা ছিল অনেকটা পাওয়ার জন্য। একজন আরেকজনকে পাওয়ার জন্য যে, ভালোটা বেসেছিলেন তা পৃথিবী জুড়ে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। কিন্তু সৈয়দপুর উপজেলার বঙ্গবন্ধু সড়ক এলাকার বাসিন্দা হোমিও ডাক্তার সৈয়দ আব্দুল রশিদ বাবলু ও ডাক্তার রায়হানা বেগমের ভালোবাসা আসলেই কল্পনা অতীত।
৩৫ বছর আগে দু’জন দু’জনকে পাগলের ন্যায় ভালোবেসে বিয়ে করেন। ৩০ বছর আগে সন্তান প্রসবের পর ডাক্তার রায়হানা বেগম পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে যায়। চলাফেরা একেবারেই বন্ধ হয় তার। কিন্তু ডাক্তার বাবলু হোসেন তার স্ত্রী ডাক্তার রায়হানা বেগমকে ভালোবাসার কমতি করেননি। ৩০টা বছর থেকে অদ্যবদি ভালোবাসার এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যা বর্তমানে ভালোবাসার এক নতুন নমুনা বলা চলে।
ভোরে উঠে প্রথমে স্ত্রীকে বাথরুমের কাজ শেষে অজু করিয়ে নামাজে বসিয়ে দেন। এরপর নিজে নামাজ শেষে স্ত্রীকে বিছানায় রেখে চলে যান নাস্তা তৈরীর জন্য। একসাথে নাস্তা শেষে সব গোছগাছ করে তিনি চলে যান নিজ চেম্বারে। দুপুরে আবারো স্ত্রীকে গোসল করিলে রান্না শেষে একসঙ্গে খেয়ে শুয়ে পড়েন। বিকালে হুইল চেয়ারে করে প্রতিবেশীর বাড়ী ঘুরে বেড়ান। সামাজিক সকল অনুষ্ঠানেও তিনি স্ত্রীকে নিয়ে যান। স্ত্রী ডাক্তার রায়হানা বেগম রান্না করতে পারেন না বলে মাছ মাংস খাওয়াও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। স্ত্রীর হাসি খুশিই যেন তার সুখ শান্তি। স্ত্রীর ভালোবাসায় রাগ ও দুঃখ করা যেন তিনি ভুলেই গেছেন। স্ত্রীর সামান্য অসুখ বিশুখে সেবা করাটা যেন তার ভালোবাসার অংশ। বিগত ৩০টা বছরে ৬০ ঘন্টাও ঘুমাননি তিনি।
ডাক্তার বাবলু সাহেব বলেন, তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনই ডিপ্লোমা-ইন- হোমিও মেডিকেল সার্জারী (ডিএইচএমএস) ডিগ্রী অর্জন করেন। দুটি সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান সৈয়দা রশিদা রায়হানা অনুরূপ ডিগ্রী অর্জন করেছেন। ছোট সন্তান সৈয়দা রাবেয়া খাতুন অনুরূপ ডিগ্রী অর্জন করে হিসাব বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছেন।
ডাক্তার বাবলু সাহেবের স্ত্রী ডাক্তার রায়হানা বেগম বলেন, এ যুগে তার স্বামীর মত মানুষ পাওয়া দুস্কর। ডাক্তার বাবলুর মত স্বামী পাওয়া আসলেই মেয়ে মানুষের ভাগ্যের ব্যাপার। তিনি বলেন, জানিনা মজনু কতটা ভালোবেসেছিল লাইলীকে। ফরাদই বা কতটা ভালোবেসেছিল শিরিকে। কিন্তু ডাক্তার বাবলু যতটা তাকে ভালোবাসে তা কেউই কাউকে ভাল বাসেনি এবং ভালোবাসতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item