অনুগল্প- ৭১’এর প্রতিশোধ
https://www.obolokon24.com/2015/04/-post5.html
# সাজ্জাদ শাহরিয়ার #
মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি শফিক, তখন সে মায়ের পেটে। জন্মের পর স্বাধীন দেশ পেলেও বাবার মুখ দেখা হয়নি। শফিক বাবার মারা যাওয়া সব ঘটনাই মায়ের মুথে শোনে।তার মা বলত-
মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য রাজাকাররা তার বাবাকে মেরে ফেলে। শুধু মেরে ফেলেই ক্ষতম নয় লাশটাকে কুত্তাদের খাওয়াতে দেওয়া হয়েছিল। বাড়ি বাম পাশে যে পেয়ারা গাছটা আছে রাজাকাররা চলে যাওয়া পর মা সেখানে গিয়ে রক্ত ছাড়া কিছুই পাইনি। তবে মা কান্না ভেজা চোখে বলত মাফ করেদিস বাবা,
আমি শফিক নামের ভ্রুণটি ছাড়া কিছু বাঁচাতে পারিনি, শুধু ঝোপের আড়াল থেকে সব দেখে সহ্য করতে হয়েছে। তুই আমাকে ক্ষমা করে দিস। এই কথা গুলো বরাবরেই দাগ ফেলেছে শফিকের হৃদয়ে। চোখ বুজলেই যেন দেখতে পারে বাবার মূত্যু সব ঘটনা।
পনের দিন হল শফিকের মা মারা গেছে। তার ইচ্ছা মতো বাড়ির বাম পাশের পেয়ারা গাছটার নিচে মাকে ঢেকে দিয়েছে। মায়ের বিশ্বাস সেই পায়রা তলার মাটির সাথে মিশে আছে তার বাবার আত্মা। মরে যাওয়া আগে মা বলেছিল সেই রাজাকাদের নেতা ছিল হেফাজ উদ্দীন।
সারাদেশে রাজাকারদের বিচার চেয়ে আন্দোলন হচ্ছে। শফিক সেই আন্দোলনের সাথে জড়িত দুমাস যাওয়ার পরও আঙ্কাখিত ফল তারা পেলনা। তবুও আন্দোলন চলছে। শফিকের সহ্য সীমা পার হয়ে যাচ্ছে,
সে আর রাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছে না। হেফাজ উদ্দীনের মতো কুকুরগুলো যদি ক্ষমতার জোরে বেঁচে যায়, তখন আর কী করার থাকে শফিকদের মতো বাবা হারানো ছেলেদের।
দরজা বন্ধ করে যখন শফিক আবারও রাজপথে যুদ্ধঅপারাধির বিচার চাই স্লোগানে মুখরিত করছে। সে সময় তার মনের পর্দা ভেসে ওঠছে কুকুরগুলো তৃপ্তি ভরে মাংস খাওয়ার প্রশান্তির ছবি।