তিন প্রজন্মের ভিক্ষুক।

ভিক্ষাকে পেশা (?)হিসেবে বেছে নেবার বহুবিধ কারন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে শারীরিক অক্ষমতা।নিতান্তই বাধ্য হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধি এসব ব্যাক্তি এ কাজকে পেশা হিসেবে নেয়।এছাড়া সাময়িক নিরুপায় হয়ে সাময়িক সময়ের জন্য অনেকে ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। যেমন-টাকা খোয়া যাওয়া বা ছিনতাই হওয়া ইত্যাদি।হঠাৎ কোন দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার অর্থ সংস্থানের জন্য ভিক্ষাও এই কারনের মধ্যে পড়ে। ভিক্ষুক নেটওয়ার্ক গড়ে ভিাবৃত্তিতে জোরপূর্বক নামানোর কাহিনীও সবার জানা।আবার সারাবছর কাজ করলেও বছরের যে সময়গুলোতে কাজ থাকেনা সেময় কিছু সাময়িক ভিক্ষুক  চোখে পড়ে।এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় দিন বা মাসগুলোকে কেন্দ্র করে যেমন-শবেবরাত,রোজা এবং ঈদের সময় কিছু পার্টটাইম ভিক্ষুক চোখে পড়ে।অবশ্য ধর্মীয় অনুভূতীকে কাজে লাগিয়ে মাজার কেন্দ্রিক কিছু ভিক্ষুককে সারাবছরই দেখা যায়।সংশিষ্ট স্থানে এসব ভিক্ষুক গজল গেয়ে সকলকে অকৃষ্ট করার চেষ্টা করে এবং দোজাহানের নেকী  হাসিলের জন্য সম্ভবপর সকলেই দান করার নামে আগ্রহভরে  ভিক্ষা প্রদান করেন।শারীরিক সমতা ও আর্থিক দৈন্যতা না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র মনের দৈন্যতার জন্য ভিক্ষাবৃত্তির কথা নাইবা উল্লেখ করলাম।
 তবে প্রজন্ন থেকে প্রজন্ম ভিক্ষাবৃত্তির একটি দৃষ্টান্ত প্রকাশ করার জন্যই মূলত এই ভূমিকা।তিন প্রজন্মের এই ভিখারিনীত্রয়ের দেখামিলে গত শুক্রবার নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটী বাজারে।তিন প্রজন্মের প্রথম প্রজন্ম পানবিবি স্বামীর বাড়ি চিলাহাটীর কাওলায়।স্বামীর সংসারের অনটনের কারনে শুরু করেন ভিক্ষা।মাঝেমাঝে মেয়ে ফাতেমা খাতুনকেও সাথে নিয়ে যেতেন।মেয়ে ফাতেমার ভিক্ষার হাতেখড়ি সেখান থেকেই।তাইতো বিয়ের পর স্বামীর সংসারের অভাব মেটাতে ধরেন মায়ের পথ।নাম লেখান ভিক্ষুকের খাতায়।সেই থেকে মা মেয়ে একসাথে ভিক্ষা করেন।ভিক্ষার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি সেই থেকে আজ। বরং তাদের দলে যোগ হয়েছে নতুন সদস্য পানবিবির নাতনী এবং ফাতেমা খাতুনের মেয়ে জিন্নাতুন।স্বাভাবিক নিয়মে জিন্নাতুনেরও হয়েছিল বিয়ে।আর দশজন মানুষের মত পড়েছিল সাংসারিক টানাপোড়নে।সমাধানের পথটিও ছিল জানা।তাইতো কাঁধে তুলে নিল ভিক্ষার ঝুলি।
      সেই থেকে প্রতি শুক্রবার পানবিবি,ফাতেমা ও জিন্নাতুন একসাথে বাড়ি -বাড়ি,দোকানে-দোকানে ঘুরে।দিন শেষে যা আয় হয় সমান তিন ভাগে বাটোয়ারা করে নেয় তারা।

পানবিবি,ফাতেমা খাতুন ও জিন্নাতুনের আগামী প্রজন্মরাও ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহন করবে কিনা জানিনা,তবে প্রত্যাশা তারা এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে গ্রহন করুক ভিন্ন কোন সন্মানজনক পেশা।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item